নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মিনারুল হত্যা মামলায় সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রবিবার (২৫ মে) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর মহসীনের আদালতে শুনানিকালে আইভী কাশিমপুর কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। পরে তাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আইভীর আইনজীবী আওলাদ হোসেন জানান, মিনারুল হত্যা মামলায় আদালতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। মামলায় আইভীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হয়েছে। রিমান্ডের বিরোধিতা করলেও আদালত তা আমলে না নিয়ে তাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরো পড়ুন:
রিমান্ড শেষে কারাগারে আরসা প্রধান আতাউল্লাহ ও ৫ সহযোগী
ডাবল মার্ডারে গ্রেপ্তার, তাহসিন হত্যাকাণ্ডে রিমান্ডে ছোট সাজ্জাদ
জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি ওমর ফারুক নয়ন জানান, তদন্ত কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করলে আদালত দুই দিনের মঞ্জুর করেন। এ রিমান্ডের মাধ্যমে মিনারুলকে কীভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত তার রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।
গত ৯ মে আইভীকে মিনারুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরকসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে।
ঢাকা/অনিক/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ডিপোতে পোঁতা ছিল বাস মালিকের লাশ
পরিবহন ব্যবসায়ী আনারুল হোসেন শিকদারকে হত্যার পর লাশ পুঁতে রাখা হয় তুরাগের বাস ডিপোতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্য, বাসের চালক ও নিরাপত্তাকর্মীর হাতে ব্যবসায়ী আনারুল নির্মমভাবে খুন হয়েছেন।
গত ১৭ জানুয়ারি নিখোঁজের পরদিন ঢাকার তুরাগ থানায় জিডি করেন পরিবারের সদস্যরা। এর পর তদন্তে নামে পুলিশ। দীর্ঘ চার মাস তদন্তের পর সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেপ্তার করে তুরাগ থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা শিকার করে তারা। পরে তাদের দেখানো স্থান থেকে গতকাল রোববার আনারুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলো– সবুজ, শাকিল ও কালাম। তিনজনই রাইদা পরিবহনের বাসচালক। শনিবার রাতে সবুজকে প্রথমে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে শাকিল ও কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বিডিজবসের কর্মকর্তা দেলোয়ার শিকদার তুরাগ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, মালিককে হত্যা করার পরও আসামিরা স্বাভাবিকভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে আসছিল। পালিয়ে না যাওয়ায় তাদের সন্দেহের তালিকায় আনা হয়নি। তবে গত কয়েক দিন সবুজের কথাবার্তা ও আচরণে সন্দেহ হয় তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের। এক পর্যায়ে সবুজসহ তিনজনই পালিয়ে যায়। শনিবার তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যারহস্যের জট খোলে।
নিহতের ভাতিজা তানভির শিকদার সমকালকে জানান, নিখোঁজের পর থেকে আমাদের সন্দেহ হয় ডিপো নিয়ে। একাধিকবার নিরাপত্তাকর্মী আসাদুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু সে জানায়, ঘটনার দিন সকালে তার কাছ থেকে কিস্তির ৩১ হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়ে যান চাচা।
তানভির শিকদার বলেন, ঘটনার ক’দিন আগে চাচা আমাকে জানান, সবুজের কাছে আট লাখ টাকা ও ডিপোর নিরাপত্তাকর্মী আসাদুল্লাহর কাছে বাস বিক্রির ১৮ লাখ টাকা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। তারা ঠিকমতো কিস্তি দিতে পারছে না। এ নিয়েই আসাদুল্লাহ ও সবুজ চাচাকে হত্যা করেছে।
আনারুল শিকদারের গ্রামের বাড়ি বরিশাল সদরে। স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে তিনি ঢাকার উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ২৬ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়িতে দীর্ঘদিন বসবাস করতেন। কয়েকটি গাড়ি কিনে রাইদা কোম্পানিকে ভাড়া দিয়েছিলেন।
তুরাগ থানার এসআই মামুনুর রশিদ জানান, রোববার বিকেলে ব্যবসায়ী আনারুলের লাশ মর্গে পাঠানো হয়। সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।