শিল্পে আগের চেয়ে গ্যাস সরবরাহ বেড়েছে: জ্বালানি বিভাগ
Published: 26th, May 2025 GMT
দেশে কয়েক বছর ধরেই গ্যাস সরবরাহে সংকট চলছে। বিভিন্ন সময় তাই এক খাতে কমিয়ে আরেক খাতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে (রেশনিং)। গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ খাতে সরবরাহ বাড়লে অন্য খাতে কমে যায়। এর মধ্যেও গত বছরের তুলনায় এবার শিল্পে বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
আজ সোমবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বাড়তি গ্যাস সরবরাহের কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় এবারের প্রথম চার মাসে শিল্পে ২১ শতাংশ বাড়তি গ্যাস সরবরার করা হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দিনে গড়ে গ্যাস সরবরাহ হয়েছে ৮২ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট। এবার গড়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ঘনফুট। তবে ধীরে ধীরে সরবরাহ আরও বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরবরাহ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। গত বছরের এপ্রিল মাসে দিনে গড়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৭২ কোটি ৬০ লাখ ঘনফুট। এবারের এপ্রিল মাসে সরবরাহ করা হয়েছে ১০৮ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) ব্যাখ্যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে পাঠিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এতে বলা হয়, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে শিল্প–সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেট্রোবাংলার নজরে এসেছে।’ এই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য, শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য গত বছরের তুলনায় এবার ছয়টি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কার্গো বেশি আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে; এর আমদানি মূল্য প্রতি ঘনমিটার ৬৫ টাকা। শিল্প খাতে প্রতি ঘনমিটারের দাম রাখা হয় ৩০ টাকা আর শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুতের ক্ষেত্রে দাম ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রতি ঘনমিটারে সরকারকে ৩৫ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২৮ মে থেকে দিনে আরও ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হবে।
জ্বালানি বিভাগের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিল্পে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকার তৎপর; এবং এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সব ধরনের বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে বলে আশা করছে সরকার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য স সরবর হ র য স সরবর হ ব সরবর হ ব ড় ল খ ঘনফ ট গত বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
গ্যাস সংকটে উৎপাদন বন্ধ ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে
নরসিংদীর পলাশের ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের অবস্থা নাজুক। গ্যাস সংকটের কারনে কেন্দ্রের সাতটি ইউনিটের মধ্যে সব ইউনিটেরই উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. এনামুল হক সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরেই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সংকট চলছে। কিন্তু ঈদুল আজহার পর থেকে গ্যাস সংকটের কারনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৪ নম্বর ইউনিট, ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫ নম্বর ইউনিট ও ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৭ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন একেবারে বন্ধ রয়েছে। সরকার সারখানায় গ্যাস সরবরাহ করার কারনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি, বিকল্পভাবে আমাদের গ্যাস সরবরাহ করার জন্য। গ্যাস সরবরাহ করলেই আমরা পুরো দমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হব।
তিনি আরও বলেন, এ তিনটি ইউনিট পুরোপুরি চালু করার মতো রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩ নম্বর ইউনিটটি অনেক দিন ধরে টারবাইনের রোটারের ব্লেডে সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে এটি মেরামত চলছে, এখন তা শেষ পর্যায়ে। গ্যাস সংযোগ দিলে এটাও উৎপাদনে চলে আসবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের জুন মাসে ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬ নম্বর ইউনিটে আগুন লেগে এর টারবাইন পুড়ে যায়। সেই থেকে এই ইউনিটটি বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরো বন্ধ হয়ে যায়। অপরদিকে ১৯৬৭ সালে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটটি রাশিয়া টেকনোপ্রম এক্সপার্ট নির্মাণ কাজ শেষ করলে ১৯৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে মাত্র ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এর যাত্রা শুরু করা হয়। পরে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার অপর ২ নম্বর ইউনিটটি ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে উৎপাদনে আসে। এ দুটি ইউনিটে বার বার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এ দুটি ইউনিটেরও উৎপাদন বন্ধ করে দিযেছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
সূত্রে জানা যায়, ১ ও ২ নম্বর ইউনিট দুটি ভেঙে নতুন করে অপর নতুন ইউনিট স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।