অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবিতে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে গেছেন।

মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এটি আন্দোলনের সপ্তম দিন। এর আগে সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম। 

এর আগে গত ২১ মে সকাল থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। কর্মবিরতিতে গেলেও বিদ্যুৎ সেবা চালু রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। 

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, কর্মবিরতি চলাকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নতুন সংযোগ প্রদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে তারা অংশ নেবেন না। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর কোনো দাপ্তরিক কার্যক্রমেও সহযোগিতা করবে না সমিতির কর্মীরা।

সারা দেশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা আরইবি-র অধীনস্থ ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এসব সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরেই সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। চলমান কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২১ মে থেকে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালন শুরু করেন তারা।

আন্দোলনকারীদের সাত দফা দাবিগুলো হলো—

প্রথমত, কর্মপরিবেশ অস্থির করে তোলায় এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে আরইবি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, পল্লী বিদ্যুৎ ও আরইবি-র মধ্যে এক ও অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই দুই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম একীভূত করতে হবে অথবা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন করতে হবে। তৃতীয়ত, মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পৌষা কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে।

চতুর্থত, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং যারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে। পঞ্চমত, লাইনক্রুসহ সকল কর্মীর হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি বাতিল করতে হবে এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের দ্রুত পদায়ন দিতে হবে।

ষষ্ঠত, জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্য আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নির্ধারিত কর্মঘণ্টা বা শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়ন করতে হবে এবং জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। সপ্তমত, পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে সমিতিগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তবে গ্রাহকদের সেবা যেন ব্যাহত না হয়, সে জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রেখেই তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পল ল ব দ য ৎ কর ম দ র র কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পে আগের চেয়ে গ‍্যাস সরবরাহ বেড়েছে: জ্বালানি বিভাগ

দেশে কয়েক বছর ধরেই গ‍্যাস সরবরাহে সংকট চলছে। বিভিন্ন সময় তাই এক খাতে কমিয়ে আরেক খাতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে (রেশনিং)। গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ‍্যুৎ খাতে সরবরাহ বাড়লে অন‍্য খাতে কমে যায়। এর মধ‍্যেও গত বছরের তুলনায় এবার শিল্পে বাড়তি গ‍্যাস সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

আজ সোমবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বাড়তি গ‍্যাস সরবরাহের কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় এবারের প্রথম চার মাসে শিল্পে ২১ শতাংশ বাড়তি গ‍্যাস সরবরার করা হয়েছে।

জ্বালানি বিভাগ বলছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দিনে গড়ে গ‍্যাস সরবরাহ হয়েছে ৮২ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট। এবার গড়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ঘনফুট। তবে ধীরে ধীরে সরবরাহ আরও বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ‍্যে গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরবরাহ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। গত বছরের এপ্রিল মাসে দিনে গড়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৭২ কোটি ৬০ লাখ ঘনফুট। এবারের এপ্রিল মাসে সরবরাহ করা হয়েছে ১০৮ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট।

বাংলাদেশ তেল, গ‍্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) ব‍্যাখ‍্যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে পাঠিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এতে বলা হয়, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে শিল্প–সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেট্রোবাংলার নজরে এসেছে।’ এই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য, শিল্পে গ‍্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির জন‍্য গত বছরের তুলনায় এবার ছয়টি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ‍্যাসের (এলএনজি) কার্গো বেশি আমদানির ব‍্যবস্থা করা হয়েছে; এর আমদানি মূল‍্য প্রতি ঘনমিটার ৬৫ টাকা। শিল্প খাতে প্রতি ঘনমিটারের দাম রাখা হয় ৩০ টাকা আর শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ‍্যুতের ক্ষেত্রে দাম ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রতি ঘনমিটারে সরকারকে ৩৫ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২৮ মে থেকে দিনে আরও ১৫ কোটি ঘনফুট গ‍্যাস সরবরাহ বাড়ানো হবে।

জ্বালানি বিভাগের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিল্পে গ‍্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকার তৎপর; এবং এ বিষয়ে দ্রুত ব‍্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সব ধরনের বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে বলে আশা করছে সরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মীনা বাজারে পাওয়া যাবে রিমার্কের পণ্য
  • পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু কর্মচারী দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন: বিদ্যুৎ বিভাগ
  • সাভার-নবীনগরের কয়েকটি এলাকায় আজ ৪ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
  • ঝুঁকিতে পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ
  • শিল্প খাত বাড়তি ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাবে আজ থেকে 
  • রিমার্ক হারল্যান ও মীনা বাজারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর 
  • শিল্পে আগের চেয়ে ২১ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ বেশি হয়েছে: মন্ত্রণালয়
  • শিল্পে আগের চেয়ে গ‍্যাস সরবরাহ বেড়েছে: জ্বালানি বিভাগ
  • পাঁচ দিন ধরে শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা