সাত দফা দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের কর্মবিরতি, শহীদ মিনারে অবস্থান
Published: 27th, May 2025 GMT
অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবিতে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে গেছেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এটি আন্দোলনের সপ্তম দিন। এর আগে সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
এর আগে গত ২১ মে সকাল থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। কর্মবিরতিতে গেলেও বিদ্যুৎ সেবা চালু রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, কর্মবিরতি চলাকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নতুন সংযোগ প্রদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে তারা অংশ নেবেন না। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর কোনো দাপ্তরিক কার্যক্রমেও সহযোগিতা করবে না সমিতির কর্মীরা।
সারা দেশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা আরইবি-র অধীনস্থ ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এসব সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরেই সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। চলমান কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২১ মে থেকে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালন শুরু করেন তারা।
আন্দোলনকারীদের সাত দফা দাবিগুলো হলো—
প্রথমত, কর্মপরিবেশ অস্থির করে তোলায় এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে আরইবি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, পল্লী বিদ্যুৎ ও আরইবি-র মধ্যে এক ও অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই দুই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম একীভূত করতে হবে অথবা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন করতে হবে। তৃতীয়ত, মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পৌষা কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে।
চতুর্থত, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং যারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে। পঞ্চমত, লাইনক্রুসহ সকল কর্মীর হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি বাতিল করতে হবে এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের দ্রুত পদায়ন দিতে হবে।
ষষ্ঠত, জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্য আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নির্ধারিত কর্মঘণ্টা বা শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়ন করতে হবে এবং জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। সপ্তমত, পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে সমিতিগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তবে গ্রাহকদের সেবা যেন ব্যাহত না হয়, সে জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রেখেই তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পল ল ব দ য ৎ কর ম দ র র কর ম
এছাড়াও পড়ুন:
৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা
ব্যাংকের কার্ড থেকে নগদ, বিকাশে টাকা পাঠানোর নতুন সুবিধা
তিনি জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। আর এই প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে বাজারে তারল্য বাড়ছে, আর রিজার্ভে যোগ হচ্ছে নিলামে কেনা ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট দুই হাজার ১২৬ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর ৮টি ব্যাংক থেকে নিলামে ১৪০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে, একই দরে গত ১৫ জুলাই ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। আর ডলারের দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বে অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।
গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ