কৃষি ও খাদ্যে ভর্তুকি বাড়ছে বিদ্যুৎ-গ্যাসে কমছে
Published: 29th, May 2025 GMT
আগামী অর্থবছরের বাজেটে কৃষি ও খাদ্য খাতে সরকারের ভর্তুকি বাড়ছে। তবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে কমানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভর্তুকি ও প্রণোদনায় ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা থাকছে নতুন বাজেটে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে ১ লাখ ১৪ হাজার কোটিতে নামিয়ে আনা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগের কয়েকটি বাজেটে ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। এবার এর ব্যতিক্রম হচ্ছে।
চলতি বাজেটে কৃষি ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয় ১৭ হাজার কোটি টাকা। আগামী বাজেটে তা ২০ হাজার কোটি টাকা হচ্ছে। এ বরাদ্দের প্রায় পুরোটাই সারে ভর্তুকি বাবদ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ হলো, বর্তমান বিশ্বে চলমান যুদ্ধবিগ্রহ, ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়া ও জোগান ঘাটতির কারণে বাণিজ্যে স্থবিরতা রয়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট এবং খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্থানীয় পর্যায়ে কৃষির উৎপাদন বাড়াতে বাড়তি নজর দেওয়া হবে।
চলতি বাজেটে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সহায়তায় ভর্তুকির জন্য বরাদ্দ রাখা হয় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে বেড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির ফলে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, টিসিবির জন্য আগামী বাজেটেও রাখা হচ্ছে ১৯ হাজার কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বিদ্যুতে ভর্তুকি বাবদ ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। তবে আগের অর্থবছরের বকেয়া পরিশোধ করার ফলে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৬২ হাজার করা হয়। চলতি অর্থবছর বকেয়ার প্রায় পুরোটাই পরিশোধের পাশাপাশি এ খাতের সিস্টেম লস কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আগামীতে বিদ্যুতে ভর্তুকি কমে আসবে বলে আশা করছে সরকার। তাই নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ কমিয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা রাখা হচ্ছে।
জ্বালানি খাতে ভর্তুকি বাবদ চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয় ৭ হাজার কোটি টাকা। এ খাতের বরাদ্দ মূলত এলএনজি আমদানিতে ব্যয় করা হয়। সেচ মৌসুম ও গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা মোকাবিলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহে অতিরিক্ত চার কার্গো এলএনজি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ কারণে সংশোধিত বাজেটে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি বাড়িয়ে ৯ হাজার কোটি টাকা করা হয়। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৬ হাজার কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি কমানো হলে দাম বাড়ানো হবে কিনা, সে বিষয়ে মানুষের উদ্বেগ থাকে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই এসবের দাম বাড়ানো হবে না। সিস্টেম লস কমানোর পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে গ্যাস উত্তোলন বাড়িয়েই ভর্তুকি কমানোর উদ্যোগ থাকবে। অর্থ উপদেষ্টা ড.
জানা গেছে, গ্যাস সংকট কাটাতে বাপেক্সকে অন্তত পাঁচটি কূপ খননের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে গ্যাস উত্তোলন বাড়ানো গেলে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না বলে মনে করছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
সাবেক অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ সমকালকে বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের ভর্তুকিতে লাগাম টানার উদ্যোগ ইতিবাচক। শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর দ দ র খ ভর ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য ভোটের সরঞ্জাম সরবরাহ শুরু হয়েছে। কয়েক মাস আগে দেওয়া কার্যাদেশের ভিত্তিতে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে এসব সামগ্রী এনে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
ইসির উপ-সচিব রাশেদুল ইসলাম জানান, লালগালা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, বড় ও ছোট হেসিয়ান ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর একটি অংশ এরইমধ্যে পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে বড় ও ছোট হেসিয়ান ব্যাগের পুরো সরবরাহ শেষ হয়েছে। অন্য সামগ্রী ধাপে ধাপে সরবরাহ করা হবে।
ইসির হিসাব অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে প্রায় পৌনে ১৩ কোটি ভোটার থাকবেন। সে অনুযায়ী প্রায় ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্র ও দুই লাখের বেশি ভোটকক্ষের জন্য বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম প্রয়োজন হবে।
সরবরাহ হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে—লালগালা: ২৩ হাজার কেজির মধ্যে এক চতুর্থাংশ সরবরাহ। ব্যালট বাক্সের লক: ৫০ লাখের বিপরীতে সরবরাহ হয়েছে ৫ লাখ।
আগস্টের শুরুতে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ হবে। আটটি আইটেমের মধ্যে একটি পুনরায় দরপত্র দিতে হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই সব সরঞ্জাম পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটের সামগ্রীর বেশির ভাগই কমিশন থেকে সরবরাহ করা হয়। তবে সুঁই-সুতা, দিয়াশলাই, আঠা, কলম, প্লাস্টিকের পাতসহ প্রতিটি কেন্দ্র ও বুথের জন্য প্রয়োজনীয় ২১ ধরনের কিছু জিনিস স্থানীয়ভাবে রিটার্নিং অফিসারদের সংগ্রহ করতে হয়।
তফসিল ঘোষণার পর আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা, ভোটকেন্দ্র ও বুথ নির্ধারণ শেষে আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা অফিসে এসব সরঞ্জাম বিতরণ করা হবে। নিরাপত্তার মধ্যে থেকে ব্যালট পেপারসহ সব সরঞ্জাম ভোটের আগেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে।
ঢাকা/এএএম/ইভা