লালমনিরহাটের তিন উপজেলার ছয় সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৬৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বুধবার এ নিয়ে দিনভর নানা নাটকীয়তা ও উত্তেজনার পর রাত ৯টার দিকে সীমান্তের সব বাতি নিভিয়ে ৬৫ জন ভারতীয় নাগরিককে নোম্যান্স ল্যান্ড থেকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে বিএসএফ। এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে একসঙ্গে এসব মানুষকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের দিকে ঠেলে দেয় তারা। কিন্তু বিজিবি ও স্থানীয় গ্রামবাসীর বাধায় ৬৫ জনের কেউ বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি। 

ওই দিন প্রচণ্ড রোদের মধ্যে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ৬৫ নারী-পুরুষ-শিশু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে খোলা জায়গায় অবস্থান করছিল। এর মধ্যে আদিতমারী উপজেলার চওড়াটারি সীমান্তে ঠেলে দেওয়া ১৩ জনের দলে মরিয়ম নামে আট মাস বয়সী একটি শিশুও ছিল। স্থানীয়রা তাদের দুধ, কলা ও পানি দিয়ে সহায়তা করে। সীমান্তের লোকজন জানায়, আটকে পড়া ওই ৬৫ জন ভারতের আসাম রাজ্যের বাসিন্দা। 

জানা গেছে, আদিতমারী সীমান্তে আটকে পড়াদের ফিরিয়ে নিতে বুধবার বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে দুই দফা পতাকা বৈঠক হয়। প্রথমে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে ও পরে হয় ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বৈঠক। কিন্তু কোনো বৈঠকেই তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি বিএসএফ। বৈঠকে বিজিবি সাফ জানিয়ে দেয়, আটকে পড়া এসব মানুষ আসাম রাজ্যের বাসিন্দা। বাংলাদেশ তাদের কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না। পরে সীমান্তের লাইট পোস্টগুলোর বাতি একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। এর এক ফাঁকে রাতের অন্ধকারে বিএসএফ তাদের নাগরিকদের ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। 

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, বিএসএফ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ করল, তারা সীমান্তে অযাথা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। 
মঙ্গলবার রাতে আদিতমারীর দুর্গাপুরের চওড়াটারি সীমান্ত দিয়ে ১৩ জন, হাতীবান্ধা উপজেলার তিন সীমান্ত দিয়ে ২৪ জন, পাটগ্রাম উপজেলার তিন সীমান্ত দিয়ে ২৮ জনকে তারা বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। 

এদিকে বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে তিন সীমান্ত দিয়ে আরও ৪৩ জনকে বাংলাদেশ অংশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আজ দুপুরে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ সর্বোচ্চ ২১ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়। এ নিয়ে গত ৪ মে থেকে আজ পর্যন্ত মোট ৯৪৭ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিল বিএসএফ।   

এদিন দুপুরে মুড়িয়া সীমান্ত থেকে বিএসএফের ঠেলে দেওয়া ২১ জনকে আটক করে বিজিবি বিয়ানীবাজার থানায় হস্তান্তর করেছে। বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মেহেদি হাসান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা সবাই বাংলাদেশি প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের সবার বাড়ি নড়াইল জেলায়।

আগের রাতে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার এনায়েতপুর সীমান্তে ১৩ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়। বিজিবি তাদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। নাম ও পরিচয় যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মঈন হুসেন। 

একই রাতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ নারী-পুরুষ ও শিশুকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়। কাশিপুর ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করে। গতকাল দুপুরে আটকদের ফুলবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়। আটকদের বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলার বজরেরখামার এলাকায় বলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে।
  
ফুলবাড়ী থানার ওসি আব্দুস সালাম জানান, ৯ জনকে ঠেলে দেওয়ার ব্যাপারে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বজনদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
(সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প শইন উপজ ল র ব এসএফ

এছাড়াও পড়ুন:

একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল

একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদা আক্তারের ছয় সন্তানের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেল। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পরপরই একটি শিশু মারা যায়। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে আরও চার নবজাতকের মৃত্যু হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা মো. ফারুক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মোকসেদা আক্তার রোববার সকালে একসঙ্গে এই ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর স্বামী মো. হানিফ কাতারপ্রবাসী। মোকসেদা আক্তারের ননদ লিপি বেগম আজ প্রথম আলোকে বলেন, বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকের অবস্থাও বেশি ভালো নয়।

ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মোকসেদা তিন ছেলে ও তিন মেয়েসন্তান প্রসব করেন। সন্তানেরা ২৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেয়। জন্মের সময় প্রত্যেকের ওজন ছিল ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামে মধ্যে। এ কারণে তাদের সবার অবস্থাই ছিল সংকটজনক।

আরও পড়ুনঢাকা মেডিকেলে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম, নবজাতকদের অবস্থা সংকটাপন্ন২২ ঘণ্টা আগে

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে আইসিইউতে পর্যাপ্ত শয্যা খালি না থাকায় তিনজনকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকটি বেসরকারি হাসপাতালে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • স্মার্ট সিটি হবে চট্টগ্রাম, একসঙ্গে কাজ করবে গ্রামীণফোন-চসিক
  • অনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে
  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ
  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
  • তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন
  • প্রেমিকের সঙ্গে বাগদান সারলেন হুমা কুরেশি!
  • একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল
  • সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের বিএসএফের হাতে আটক ১৯ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী