সীতাকুণ্ডে দু’পক্ষের বিরোধে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা খুন
Published: 29th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মো. কলিমুদ্দিন (৩৫) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের ছোট দরগার হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কলিমুদ্দিন ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বরাতে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, বারৈয়ারঢালায় পাহাড়ে অবস্থিত সহস্রধারা ঝর্ণা ও স্থানীয় ছোট দরগার হাটের পশুহাটের ইজারা নিয়ে যুবদল ও জিয়া মঞ্চের দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। বিরোধ নিরসনে বুধবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল ও জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম চৌধুরী শরীফ বৈঠকে বসেন। দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে শুরু হয় সংঘর্ষ। পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে ইসমাইলের অনুসারী কলিমুদ্দিনকে জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কলিমুদ্দিনের বড় ভাই তসলিম উদ্দিনের দাবি, পশুহাটের ইজারা নিয়ে বৈঠক চলাকালীন স্থানীয় যুবদল নেতা সাখাওয়াত হোসেন সাকার লোকজন কলিমুদ্দিনকে হত্যা করে। সাখাওয়াত দলীয় পরিচয়ে মাদক ব্যবসায় জড়িত। তিনি যুবদল নেতা ইসমাইলের নাম ভাঙিয়ে এ ব্যবসা করেন। কলিমুদ্দিন দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সোচ্চার ছিলেন। এ বিষয়ে সাকার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বারৈয়ারঢালা ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি আবু সালেহ বলেন, সাকা বাহিনীর দুই সদস্যের সঙ্গে ১৫০ টাকার মাদক বিক্রি নিয়ে বিরোধ হয়। সাকার সহযোগী কলাবাড়িয়ার বাসিন্দা হৃদয়সহ কয়েকজন কলিমুদ্দিনকে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, সম্প্রতি ইজারা নেওয়া পশুহাট সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক চলছিল। বৈঠকস্থলের বাইরে দু’পক্ষের কয়েক সমর্থকের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। প্রতিপক্ষের লোকজনের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল। তারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। বুধবার রাতে হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে ককটেল ফাটিয়ে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে তারা।
জিয়া মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম নিজেকে সহস্র ঝর্ণাধারার ইজারাদার দাবি করে বলেন, সহস্রধারা ঝর্ণা ও গরুর হাট ইজারা নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। বৈঠক চলাকালীন কলিমুদ্দিনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সাকার লোকজন।
ওসি মজিবুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মামলা হয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য কল ম দ দ ন র ল কজন দল ন ত ব যবস য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ, প্রার্থী হলে করাতে হবে ডোপ টেস্ট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হলে ডোপ টেস্ট করাতে হবে এবং রিপোর্ট পজিটিভ হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।
এ ছাড়া কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং প্রার্থিতা বাতিল বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার কিংবা রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী সব দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাকসুর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এ আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। আচরণবিধিতে মনোনয়নপত্র, প্রার্থীদের ডোপ টেস্টের বাধ্যবাধকতা, নির্বাচনে প্রচারণা, ছাত্র ও ছাত্রীদের হলে প্রবেশের নিয়মাবলি ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তির বিধান বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, প্রার্থী নিজে বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না। প্রার্থীকে সশরীর উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে। ডোপ টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ না হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।
নির্বাচনে যানবাহন ব্যবহারের বিধিনিষেধের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাদান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বা ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটারদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনের দিন প্রার্থী, ভোটার, শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবে।
আচরণবিধিতে নির্বাচনী সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রার বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোট গ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে। প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রার্থী ও ভোটার ব্যতীত অন্য কেউ কোনোভাবেই কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণা চালাতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় শুধু সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করা যাবে। এ ক্ষেত্রে পোস্টারের আকার অনধিক ৬০*৪৫ সেন্টিমিটারের বেশি হবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ভবনের দেয়ালে নির্বাচনসংক্রান্ত লেখা ও পোস্টার লাগানো যাবে না।
কোনো প্রার্থী কিংবা তাঁর সমর্থকেরা অপর কোনো প্রার্থী বা তাঁর সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা সৃষ্টি (যেমন পোস্টার লাগাতে না দেওয়া, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, পোস্টারের ওপর পোস্টার লাগানো, সভা ও মিছিলে বাধা, মাইক কেড়ে নেওয়া ইত্যাদি) করা যাবে না। একাডেমিক ভবনের অভ্যন্তরে মিছিল বা সমাবেশ এবং শ্রেণিকক্ষের অভ্যন্তরে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠেয় সভার স্থান ও সময় সম্পর্কে প্রক্টরকে আগে থেকে জানিয়ে অনুমতি নিতে হবে। প্রার্থী পরিচিতি সভা ছাড়া অন্য কোনো সভায় মাইক ব্যবহার করা যাবে না। আবাসিক হলের অভ্যন্তরে কোনো মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের দিনে ভোটার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত ক্যাম্পাসে অন্য সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ছাত্রদের আবাসিক হলে ছাত্রী এবং ছাত্রীদের আবাসিক হলে ছাত্র সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে পরিচিতি সভায় প্রবেশ করতে পারবে বলে আচরণবিধিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবে। প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার ইস্যু করা পরিচয়পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।