জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর ও সুবিধাবাদী ভণ্ড আখ্যা দিয়ে দলটিকে প্রতিহতের ডাক দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে এবং আওয়ামী লীগকে সরকারি দলের বৈধতা দিয়েছে।

লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় পথসভা ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জেলা শহরের মিশন মোড়ে পথসভায় এ কথাগুলো বলেন সারজিস আলম।

সারজিস আলম বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সবচেয়ে বড় ভণ্ডদের মধ্যে একজন হচ্ছেন জি এম কাদের। এই জি এম কাদের ইলেকশনের ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ইন্ডিয়া যেত, ক্ষমতার নেগোসিয়েশন করত, অর্থের নেগোসিয়েশন করত। বাংলাদেশে এসে বিড়ালের মতো চুপ হয়ে যেত, ইলেকশন হতো, ডামি ইলেকশনে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হতো, আওয়ামী লীগকে তারা সরকারি দলের সমর্থন দিত।’ তিনি বলেন, ‘এই জি এম কাদেররা এখনো কীভাবে প্রকাশ্যে ঘোরে? এই জাতীয় পার্টি, এই যে ডামি আওয়ামী লীগ যারা, তারা এখনো কীভাবে বাইরে?’

অসৎ পথে উপার্জন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এনসিপি নেতা সারজিস বক্তব্যে বলেন, ‘আপনি বিভিন্নভাবে লাখ টাকা, কোটি টাকা অসৎভাবে উপার্জন করেন। পরে দেখেন, আপনার সন্তান আর পড়াশোনা পারে না। তাকে পড়াতে হচ্ছে মাসে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে এই মিডিয়ামে, সেই মিডিয়ামে, তা–ও পাস করে না। আপনি দেখবেন একজন রিকশাচালক চাচাকে, মাসে একবারও হাসপাতালে যেতে হয় না, বছরে একবারও পুরো শরীর চেক আপ করতে হয় না। আর আপনার পেটে একবার শব্দ হলে সিঙ্গাপুরে যেতে হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। এই যে মানসিক অশান্তি, এর চেয়ে রিকশাচালক চাচার মানসিক শান্তি অনেক বেশি।’

এর আগে গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে রংপুর নগরের সেনপাড়ায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীরা জি এম কাদেরের বাড়ি দ্য স্কাই ভিউয়ের জানালার কাচ ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমানের অভিযোগ, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা এই হামলার সঙ্গে জড়িত।

আরও পড়ুনরংপুরে জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলা, অভিযোগ বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে১৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এম ক দ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ