রাতে শুরু হওয়া বৃষ্টি বিকেলেও অব্যাহত, জলাবদ্ধতা নেই চট্টগ্রামে
Published: 30th, May 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলেও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। তবে, এবার চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি। ফলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়ির বাইরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হওয়া মানুষদের কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। আজ বিকেল ৪টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল।
চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দার হাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কোথাও তেমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। সাময়িক কিছু পানি জমলেও ২০/৩০ মিনিটের মধ্যেই সেই পানি বিভিন্ন ড্রেন ও খাল হয়ে নদীতে চলে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতা প্রবণ এলাকাগুলো হলো- মুরাদপুর, বহদ্দার হাট, চকবাজার, বাকলিয়া, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, প্রবর্তক, হালিশহর। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব এলাকার কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
আরো পড়ুন:
দুর্বল হচ্ছে নিম্নচাপ, শুক্রবারও ভারী বৃষ্টির আভাস
নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটে টানা বৃষ্টি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বহদ্দার হাট এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জল মিয়া বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত থেকেই টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। ভেবেছিলাম সকালে উঠে দেখব, বহদ্দার হাট ডুবে গেছে। এবার বিস্ময়করভাবে এলাকায় কোনো পানি জমেনি।”
একই এলাকার ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “বহদ্দার হাটে এবার পানি নেই। এখানে ড্রেনের ওপর একটা মার্কেট ছিল, সম্প্রতি সেটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এলাকার ড্রেন ও খালগুলো পরিষ্কার থাকায় পানি জমতে পারেনি। বৃষ্টির পানি নর্দমা ও খাল হয়ে নদীতে চলে যাচ্ছে।”
নগরীর মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বলেন, “অনেক বছর পর মুরাদপুরে পানি জমতে দেখনি। ভারী বর্ষণে কিছু সময়ের জন্য সামন্য জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও ২০/৩০ মিনিটের মধ্যেই পানি নেমে যাচ্ছে।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন জানান, “এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে জলাবদ্ধতার কোনো খবর নেই। খাল ও নর্দমায় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক আছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। এবার পরিস্থিতি অনেক ভালো।”
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা আছে।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বহদ দ র হ ট শ ক রব র এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।