বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলেও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। তবে, এবার চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি। ফলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়ির বাইরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হওয়া মানুষদের কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। আজ বিকেল ৪টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। 

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দার হাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কোথাও তেমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। সাময়িক কিছু পানি জমলেও ২০/৩০ মিনিটের মধ্যেই সেই পানি বিভিন্ন ড্রেন ও খাল হয়ে নদীতে চলে যাচ্ছে। 

চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতা প্রবণ এলাকাগুলো হলো- মুরাদপুর, বহদ্দার হাট, চকবাজার, বাকলিয়া, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, প্রবর্তক, হালিশহর। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব এলাকার কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

আরো পড়ুন:

দুর্বল হচ্ছে নিম্নচাপ, শুক্রবারও ভারী বৃষ্টির আভাস

নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটে টানা বৃষ্টি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বহদ্দার হাট এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জল মিয়া বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত থেকেই টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। ভেবেছিলাম সকালে উঠে দেখব, বহদ্দার হাট ডুবে গেছে। এবার বিস্ময়করভাবে এলাকায় কোনো পানি জমেনি।” 

একই এলাকার ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “বহদ্দার হাটে এবার পানি নেই। এখানে ড্রেনের ওপর একটা মার্কেট ছিল, সম্প্রতি সেটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এলাকার ড্রেন ও খালগুলো পরিষ্কার থাকায় পানি জমতে পারেনি। বৃষ্টির পানি নর্দমা ও খাল হয়ে নদীতে চলে যাচ্ছে।” 

নগরীর মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বলেন, “অনেক বছর পর মুরাদপুরে পানি জমতে দেখনি। ভারী বর্ষণে কিছু সময়ের জন্য সামন্য জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও ২০/৩০ মিনিটের মধ্যেই পানি নেমে যাচ্ছে।” 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন জানান, “এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে জলাবদ্ধতার কোনো খবর নেই। খাল ও নর্দমায় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক আছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। এবার পরিস্থিতি অনেক ভালো।” 

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা আছে। 

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বহদ দ র হ ট শ ক রব র এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যক্তিগত কর্মকর্তার স্ত্রীকে নগদে চাকরি দেওয়া নিয়ে যা বললেন ফয়েজ আহমদ

মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদে নিজের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। আজ শনিবার বিকেলের দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি অভিযোগ স্বীকারে করে পোস্ট দেন। এ ঘটনার সঙ্গে তাকে এবং তার মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামকে অন্যায়ভাবে জড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী।

পোস্টে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘আমি বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং এ দেশের মানুষের একটি পয়সাও চুরি করব না—এই আস্থাটা আমার ওপর রাখবেন আশা করি। আমি প্রচণ্ডরকম আর্থিক সততা নিয়ে বড় হয়েছি। আমার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট (স্বার্থের সংঘাত) এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এসেছে। কাজটা ঠিক হয়নি—এটা আমি বিনা বাক্যে স্বীকার করছি। তাঁকে প্রচণ্ডরকম বকাবকিও করেছি। উনার বউকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি আমি তদন্তের ব্যবস্থা করেছি, নির্দেশনা দিয়েছি। নগদের অ্যাক্টিং সিইও এই বিষয়ে প্রেস রিলিজে বলবেন।’

মানবজমিনের প্রতিবেদনে ফয়েজ আহমদ এবং একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের প্রসঙ্গ আসা নিয়ে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘তাঁদের অন্যায়ভাবে টেনে আনা হয়েছে। নগদের আগের সরকারের লোকজন অর্থ হাতিয়েছেন; কিন্তু দায় তাঁদের ওপর চাপানো হয়েছে।’ মিথ্যা সাংবাদিকতা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী আরও লেখেন, ‘আমরা সংবাদকর্মীদের কাছে জেনেছি যে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পক্ষ এজেন্সিকে দিয়ে ১৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এর আগে তারা কিছু টিভি স্টেশনকেও অ্যাপ্রোচ করেছিল। দেশের শীর্ষ ফ্যাক্টচেকার এবং ডিজিটাল ভেরিফিকেশন এক্সপার্ট সেটা এক্সপোজও করেছেন। নগদে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক বসানোর পরে বাংলাদেশ ব্যাংক কেপিএমজি-কে দিয়ে ফরেনসিক রিপোর্ট করাচ্ছে (অভিযোগ আছে কেপিএমজি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট্যান্ট)।’

নগদকে বাঁচাতে কাজ করছেন উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘শাফায়াত গং এখানে হেভিওয়েট ব্যারিস্টার নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে। এই দায়ও আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। একটা অস্থিতিশীল সময়ে ডাকের লাইসেন্সে, রেগুলেটরের গাইডলাইনে, টপ এক্সপার্টদের ম্যানেজ সার্ভিসে আনা গেলে নগদ ভালো চলবে—এটাই ডিও লেটারে লিখেছি।’

গতকাল শুক্রবার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় নগদের ‘অনিয়ম’ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ফয়েজ আহমদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আতিক মোর্শেদ নগদের কোনো কর্মকর্তা না হয়েও সেখানে অফিস করেন। পাশাপাশি নিজের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা জুঁইকে একটি পদে চাকরিও দিয়েছেন। এ সংবাদের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ