মাসিকের সময় একেবারে কম রক্তপাত হলে শরীরের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। যেমন— হাড়ের ঘনত্বও কমে যায়, মাথাব্যথা, চুল পড়া, মুখে অতিরিক্ত লোম বা ব্রণের মতো কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি সন্তান ধারণে সমস্যা হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। 

ডা. তানিয়া রহমান মিতুল, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অনেক রোগী এসে বলেন যে, আমরা মাসিকের সময় দুই থেকে তিন দিন রক্ত যায়। এবং খুবই কম পরিমাণে রক্ত যায়। এ কারণে আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি, আমার তলপেটে অনেক ব্যথা করে। আমার তলপেটে অনেক চর্বি জমে গেছে। অনেকেই ভাবেন, রক্ত যেহেতু কম যাচ্ছে-রক্তজমে তার পেটেই থাকছে। এটি একটি ভুল ধারণা। মাসিকের সময় ৩০ থেকে ৫০ এমএল রক্ত যদি যায় তাহলে সেটা স্বাভাবিক।’’

ডা.

তানিয়া আরও বলেন, ‘‘ শরীরের দূষিত রক্তই শুধু মাসিকের সময় বের হয় তা কিন্তু না। আমরা যেটা বলে থাকি তিন থেকে পাঁচ দিন পরযন্ত যদি মাসিক চলে যেটাও স্বাভাবিক। এর চেয়ে বেশি সময় ধরে মাসিক চলা খারাপ। এতে অনেকে রক্তশূণ্যতায় ভুগতে শুরু করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। ’’
যেসব কারণে মাসিকে কম রক্তপাত হতে পারে

আরো পড়ুন:

চোখ উঠলে কী করবেন, কী করবেন না

পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়

থাইরয়েডসহ অন্যান্য হরমোনের তারতম্যের কারণে মাসিক কম রক্তপাত হতে পারে। ওভারিতে সিস্ট হলেও মাসিকে কম রক্তপাত হতে পারে। এ ছাড়া  পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম  অতিরিক্ত ওজন, অপুষ্টি, খুব অল্প পরিমাণ খাবার গ্রহণ, হঠাৎ অতিরিক্ত ওজন হ্রাস,  হঠাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যায়াম, মানসিক চাপ বৃদ্ধি কিংবা হতাশার কারণেও মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বা মাসিকে কম রক্তপাত হতে পারে। 

সুতরাং মাসিকে কম রক্তপাত হলে সমস্যা অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর যত ন ম স ক র সময় রক ত য সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

পুষ্টিতে ভরপুর এক খাবার দুধ

দুধ এমন এক খাবার, পুষ্টিমানে যার কোনো বিকল্প নেই। দেহের প্রয়োজনীয় সব উপাদান দুধে পাওয়া যায়। ৮ থেকে ৮০ সব বয়সের মানুষের জন্য দুধ বেশ পুষ্টিকর। দুধের পুষ্টিগুণ নিয়ে বললেন ঢাকার গ্যাস্ট্রোলিভার কেয়ারের বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান।

পুষ্টিমানের দিক থেকে তরল দুধ আর গুঁড়া দুধে খুব বেশি পার্থক্য থাকে না। তাদের মূল পার্থক্য আর্দ্রতায়। তরল দুধ বাষ্পীভূত করে সবটুকু পানি সরিয়ে নিলেই তা গুঁড়া দুধে পরিণত হয়। তবে আর্দ্রতা থেকে আরও কিছু পার্থক্য তৈরি হয়, যেমন পরিমাণে ও ওজনে। ১ লিটার তরল দুধে যেখানে সমান তরলের ওজন থাকে, সেখানে ১ কেজি গুঁড়া দুধ তৈরি করতে প্রায় ৬ থেকে ৭ লিটার তরল দুধ ব্যবহার করতে হয়। ক্যালরির দিক বিবেচনা করলে ২৫০ মিলিলিটার বা ১ কাপ দুধ থেকে ১২০ থেকে ১৫০ কিলোক্যালরি পাওয়া যায়। অন্যদিকে ১ কাপ গুঁড়া দুধ থেকেও আমরা প্রায় ১৩০–১৪০ কিলোক্যালরি পেয়ে থাকি। তাই ক্যালরির দিক থেকেও পুষ্টিগুণ বেশ কাছাকাছি।

দুধে থাকে চর্বি, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিনসহ বহু উপাদান। তবে তরল দুধে ভিটামিনের সব রকম উপাদান যেমন বিদ্যমান থাকে, গুঁড়া দুধের বাষ্পীভবনের ফলে পানিতে দ্রবীভূত ভিটামিনগুলো কিছু পরিমাণ কমে যায়। ফলে তরল দুধের তুলনায় ভিটামিন বি১, ২, ৫, ৬, ১২ ও ভিটামিন ডি কম থাকে গুঁড়া দুধে। অনেক সময় তাই প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় গুঁড়া দুধে প্যাকেটের গায়ে ভিটামিন ডির পরিমাণ লেখা থাকে। 

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ

দুধে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম, যা দেহে শোষণের জন্য ভিটামিন ডি প্রয়োজন হয়। তবে দুধ একটি অনন্য খাদ্য, যাতে দুটি উপাদান একসঙ্গে মিলবে। ফসফরাসের ভালো উৎস দুধ। দাঁত ও হাড়ের গঠনের জন্য তাই দুধ বেশ সহায়ক। ভিটামিন বি১২ লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সহায়ক। এ ছাড়া ‘নার্ভাস সিস্টেম’ ঠিক রাখতে এটি বেশ কার্যকরী। ইসরাত জাহান জানান, প্রয়োজনভেদে দেহের মেলাটোনিন, সেরোটোনিন নামক হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে দুধ।

দুধে থাকা ট্রিপটোফেন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্ককে শান্ত করে ঘুমের প্রক্রিয়াকে সহজ করে। তাই আজকাল যাদের অস্থিরতা, হাইপার টেনশন, ঘুমের সমস্যা থাকে, তাদের প্রতিদিন রাতে শোবার আগে হালকা গরম নন–ফ্যাট এক গ্লাস দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা।

ভিটামিন ডি হাড়, দাঁত, নখ, চুল ও ত্বকে পুষ্টি জোগায়। দুধে রয়েছে ভিটামিন এ ও ল্যাকটিক অ্যাসিড, যা শরীরে কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। কোলাজেন ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ত্বককে রাখে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। খনিজ পদার্থের উপস্থিতির কারণে দুধ দেহের রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ