চার দিনের জাপান সফর শেষে দেশের পথে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইট টোকিও থেকে রওনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে ফ্লাইটটি নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়েছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তাঁর ঢাকায় পৌঁছার কথা।

সরকারপ্রধান তাঁর সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবাসহ জনা বিশেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা। সফরে তিনি ৩০তম নিক্কেই ফোরামে যোগ দেন এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

সরকারপ্রধানের সফরের সময় জাপানের সঙ্গে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।  

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাকৃবিতে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন

‘আসুন দুগ্ধশিল্প এবং দুধের প্রভাব উদযাপন করি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ১৩তম বারের মতো বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন হয়েছে। 

দিবসটি উপলক্ষে রবিবার (১ জুন) সকাল ১০টার দিকে বাকৃবি চত্বরে অবস্থিত স্কুলগুলোর ২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে দুধ পান করানো হয়। এরপর পশুপালন অনুষদের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. শহীদুল হক।

এরপর অনুষদীয় ফটক থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। এরপর বেলা ১২টার দিকে সেখানে দুগ্ধ দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

আরো পড়ুন:

বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে বাকৃবিতে নানা আয়োজন

কুমিল্লায় দুধ দিয়ে গোসল করে আ.লীগ নেতার দল ত্যাগ

বাকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. একেএম মামুমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, নেসলে বাংলাদেশের রেগুলেটরি অ্যান্ড সায়েন্টিফিট অ্যাফেয়ার্স প্রধান রেবেকা শারমিন। 

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম এ সামাদ খান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. মো. নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বাবায়ক ও বাকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড মো. হারুন-অর-রশিদ এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম।

এ সময় বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো আবুল হাশেম বলেন, “আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে দেখা যায়, গাভীর দুধে থাকা ল্যাকটোজ ও অন্যান্য নিউট্রিয়েন্ট যেমন ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি১২, প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের বিকাশ ও স্মৃতিশক্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ৬০ থেকে ৬৯ বছর বয়সীদের জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩ গ্লাস দুধ পান স্মৃতিশক্তি হ্রাস এবং দ্রুত বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত দুধ পান করেন, তাদের সার্বিক স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।”

বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেছেন, “যখন একটি শিশুর জন্ম হয়, এর পরপরই তার প্রথম খাদ্য হল দুধ। এটি একটি সর্বোৎকৃষ্ট খাদ্য, যার মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক ও মেধার বিকাশ হয়। তাই আমি অভিভাবকদের আহবান জানাবো জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুডের বদলে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের প্রতি শিশুদের আগ্রহী করে তুলতে হবে।”

তিনি বলেন, “সুস্থ, মেধাবী ও জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গঠনে দুধ পানের বিকল্প নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্কুলগুলোতে টিফিন হিসেবে দুধ সরবরাহ করা হয়। আশা করি বাংলাদেশেও এটি খুব শীঘ্রই চালু হবে। দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভালো জাতের পশু ও পুষ্টিকর খাবারের দিকে মনোনিবেশ করতে গবেষকদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”

আরো পড়ুন: বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে বাকৃবিতে নানা আয়োজন

এর আগে, শনিবার (৩১ মে) শনিবার (৩১ মে) দুপুরে দিবসটি উপলক্ষে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে বিভিন্ন স্কুলের অর্ধশতাধিক স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের করিডোরে নারীদের নিয়ে ডেইরি রেসিপি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

দেশে ডেইরি শিল্পের বিকাশ এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর ১ জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালন করে বাকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে সর্বপ্রথম ২০০১ সালে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশেও এই দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ