এক হাতে ধারালো অস্ত্র। অন্য হাতে এক মধ্যবয়সী নারীর সদ্য কাটা মাথা। ঝরছে তাজা রক্ত। চোখে-মুখে কোনো আতঙ্ক নেই, নেই কোনো তাপ-উত্তাপ। নির্দ্বিধায় আত্মসমর্পণের উদ্দেশে থানার দিকে হেঁটে চলেছেন এক যুবক। 

শনিবার সকালে হাড়হিম করা এমন দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ভরতগড় এলাকার বাসিন্দারা।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ জানিয়েছে বাসন্তী থানার পুলিশ ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। যুবকের হাতে যে নারীর মুণ্ডু দেখা যাচ্ছে, তিনি সম্পর্কে যুবকের বৌদি (ভাবী)। চপার দিয়ে খুন করে মহিলার শরীর থেকে মুণ্ডু আলাদা করে ফেলেন যুবক। তারপর সেই রক্তাক্ত মাথা নিয়েই সোজা থানায় চলে যান। কী কারণে এই কাণ্ড ঘটাল যুবক, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহত নারীর নাম সতী মণ্ডল। বাসন্তীর ভরতগড় এলাকার বাসিন্দা তিনি। অভিযুক্ত যুবক বিমল মণ্ডলও একই এলাকাতেই থাকেন। নিহত এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে বউদি ও দেবর। 

স্থানীয়দের দাবি, শনিবার সকালে স্থানীয় একটি মাঠে দাঁড়িয়ে দুজনের বাকবিতণ্ডা চলছিল। একপর্যায়ে আচমকা চপার দিয়ে বৌদিকে আক্রমণ করে বিমল। এতে শরীর থেকে মাথা আলাদা হয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় ছিটকে পড়েন সতী। এরপর এক হাতে কাটা মুণ্ডু এবং অন্য হাতে চপার নিয়ে হাঁটতে শুরু করে বিমল।

ভিডিওতে দেখা গেছে, একেবারে ভাবলেশহীনভাবে হেঁটে যাচ্ছে বিমল। আশপাশের পথচলতি মানুষ তাকে দেখে আঁতকে ওঠেন। ধীরে ধীরে হেঁটে বাসন্তী থানায় পৌঁছায়। তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কাটা মাথা এবং ধারালো অস্ত্রটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরে পারিবারিক বিবাদ চরমে আকার ধারণ করে। তার জেরেই শনিবারের নৃশংস ঘটনা। তবে বউদি ও দেবরের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত কীভাবে হল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। অভিযুক্তকে জেরা করে এই সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছে পুলিশ। অভিযুক্তকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছেন তারা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ, পরে ভাড়া বাসা থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

পটুয়াখালীর বাউফলে সালমা আক্তার (৩২) নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী সরোয়ার হোসেনের (৩৮) বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দুইটার দিকে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন সরোয়ার। এ সময় তাঁর সঙ্গে চার বছরের শিশুসন্তান ছিল।

সালমা আক্তার বাউফল উপজেলার নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। তাঁর বাবার বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া গ্রামে। সরোয়ার একই উপজেলার নদমূলা গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১২ বছর আগে তাঁদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল।

পুলিশ, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও মাদ্রাসার সূত্রে জানা গেছে, চাকরির সুবাদে চার বছর আগে বাউফলে আসেন সালমা ও তাঁর স্বামী সরোয়ার। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তাঁরা উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

সরোয়ারের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে গতকাল বিকেলে সালমা ও সরোয়ারের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে বিকেল সোয়া চারটার দিকে সরোয়ার ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সালমার ঘাড়ে কোপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে লাশটি ঘরের ভেতর রেখে দরজা-জানালা বন্ধ করে শিশুসন্তানটিকে নিয়ে পালিয়ে যান সরোয়ার। একপর্যায়ে গতকাল গভীর রাতে সন্তানসহ বাউফল থানায় হাজির হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, বিবেকের তাড়নায় তিনি আত্মসমর্পণ করতে হাজির হয়েছেন।

বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, সরোয়ার থানায় এসে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সালমার মরদেহ উদ্ধার করেছে। শিশুটিকেও পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে আজ শুক্রবার সকালে জানান বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার। তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাউফলে স্ত্রীকে হত্যার পর গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ
  • স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মসমর্পণ
  • গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ, পরে ভাড়া বাসা থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার