নাজমুল হোসাইন নিজের প্রিয় গরুটির নাম রেখেছেন ‘লায়ন’। চার বছর ধরে বড় করেছেন এটিকে। তাঁর দাবি, এবারের কোরবানির ঈদে শেরপুরের সবচেয়ে বড় ও দামি গরু এটি। ৩২ মণ ওজনের এই গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা।

ষাঁড়টির মালিক নাজমুল হোসাইন শেরপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি। প্রতিদিন স্থানীয় কুসুমহাটি বাজারে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করেন। আর বাড়িতে থাকেন মা-বাবা ও ভাগনে মাহবুবুর আবিদ। লায়নের প্রতিদিনের যত্নের ভার তাঁদের কাঁধেই।

পরিবারের সদস্যরা বলেন, দিন শেষে নাজমুল যখন বাড়ি ফেরেন, গোয়ালঘরে ঢুকে হাঁক দিতেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে হাম্বা ডেকে জবাব দেয় লায়ন। আদর না পেলে খাবারের দিকে তাকিয়েও দেখে না প্রাণীটি। লায়নকে তাঁরা পরিবারের একজন সদস্য বলে মনে করেন। মাহবুবুর বলেন, ‘লায়ন আমার ভাইয়ের মতো। সে আমার হাতেই বড় হয়েছে। ওকে ছাড়া থাকার কথা ভাবতেই পারি না।’

লায়নের জন্মও এই বাড়িতেই। দেশি জাতের সঙ্গে শাহিওয়াল-ফ্রিজিয়ানের ক্রসে লায়নের জন্ম হয়। লালচে রঙের এই গরুর ওজন এখন ৩২ মণ, উচ্চতা ৬৬ ইঞ্চি। এটির দাঁত হয়েছে ছয়টি। প্রতিদিন ২ কেজি খড়, ১ কেজি খইল, ৫ কেজি ভুসি, ৪ হালি কলা ও ১ কেজি খুদের ভাত খাওয়ানো হয়। লায়নের খাবারের পেছনে তাঁদের দিনে খরচ হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

নাজমুল হোসাইন বলেন, গত কোরবানির ঈদেও তিনি লায়নকে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। কিন্তু আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। অনেকে জবাই করে খাওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি তা মেনে নিতে পারেননি। তাঁর ইচ্ছা ছিল, একদিন কোরবানির হাটে জেলার সেরা গরুটি তুলবেন। এবার যেন সে স্বপ্নই সত্যি হয়েছে।

শেরপুর সদর উপজেলায় এবারের কোরবানির জন্য প্রায় ৯ হাজার পশু প্রস্তুত জানিয়ে উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পলাশ কান্তি দত্ত বলেন, এবারের কোরবানির হাটে জেলার মধ্যে নাজমুল হোসাইনের লায়নই সম্ভবত সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় গরু।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক রব ন র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প নিজেই ভর্তি হতে পারেননি বলে কি হার্ভার্ডের ওপর এত ক্ষোভ

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ নিয়ে নানা জল্পনা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, ট্রাম্পের ছেলে ব্যারন হার্ভার্ডে সুযোগ পাননি বলে ট্রাম্প ক্ষোভ পুষে রেখেছেন। তবে বিস্ময়কর এক তথ্য সামনে এনেছেন ট্রাম্পের জীবনীকার মাইকেল ওলফ। তিনি বলেন, ট্রাম্প নিজেই হার্ভার্ড প্রত্যাখ্যাত। তিনি হার্ভার্ডে ভর্তি হতে পারেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন সংবাদ ও মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম দ্য ডেইলি বিস্টের এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের বিষয়ে নতুন এই তত্ত্ব হাজির করেন ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি’, ‘সিজ: ট্রাম্প আন্ডার ফায়ার’ এবং এ বছর বাজারে আসা ‘অল অর নাথিং: হাউ ট্রাম্প রিক্যাপচারড আমেরিকা’ বইয়ের লেখক মাইকেল ওলফ।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ট্রাম্পের ক্ষোভ নিয়ে সেখানে নতুন তত্ত্ব হাজির করেন মাইকেল ওলফ। গত বৃহস্পতিবার প্রচারিত দ্য ডেইলি বিস্ট পডকাস্টের উপস্থাপক ছিলেন জোয়ানা কোলস। পডকাস্টে হার্ভার্ডসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ক্ষোভ নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।

ওলফ বলেন, ‘ট্রাম্প যা কিছু করেন, তার পেছনে অতিরিক্ত হিসাব-নিকাশ বা পরিকল্পনা থাকার দরকার নেই। তবে এ কথাও সত্য যে তিনি হার্ভার্ডে ভর্তি হতে পারেননি। তাই ট্রাম্পের এক পরিচিত বৈশিষ্ট্য হলো আইভি লিগের বিরুদ্ধে রাগ ধরে রাখা।’

আইভি লিগ হলো যুক্তরাষ্ট্রের আটটি প্রাচীন ও সুপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গোষ্ঠী। এগুলো শিক্ষার উচ্চমান, শক্তিশালী একাডেমিক পরিবেশ, ইতিহাস ও সামাজিক মর্যাদার জন্য বিশ্ববিখ্যাত।

উল্লেখ্য হার্ভার্ডে সুযোগ না পেলেও ট্রাম্প পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।

হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র ওলফের ওই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি লেখক মাইকেল ওলফ এবং দ্য ডেইলি বিস্টের বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর ছড়ানোর অভিযোগ করেন।

টেলর রজার্স নামের ওই মুখপাত্র বলেন, ওলফ ও জোয়ানা দুজনেই ক্লিকবেইটের জন্য মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছেন। একজন সফল ব্যবসায়ী এবং ইতিহাসের সবচেয়ে পরিবর্তন ঘটানো প্রেসিডেন্ট হিসেবে সফল হতে ট্রাম্পের জন্য হার্ভার্ডের মতো অতি মূল্যায়িত এবং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার কোনো দরকার ছিল না।

জনসাধারণের জন্য প্রকাশিত কোনো রেকর্ড বা প্রতিবেদন নেই, যা থেকে জানা যায় যে ট্রাম্প ১৯৬০-এর দশকে হার্ভার্ডে আবেদন করেছিলেন কি না। প্রকাশিত কোনো জীবনীতেও এমন দাবি করা হয়নি। ট্রাম্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন উঠলে হার্ভার্ডের আইনজীবীরা তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ করবেন বলে ধারণা করা যায়।

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামের (এসইভিপি) সনদ বাতিল করেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টি নতুন বিদেশি ছাত্র ভর্তি করতে পারবে না। এতে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ বর্তমান বিদেশি শিক্ষার্থীর ওপর প্রভাব পড়েছে।

ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড একটি মামলা করেছে এবং প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে আইন ও বাক্‌স্বাধীনতার অধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিসট্রিক্ট জাজ অ্যালিসন বোরোগস গতকাল শুক্রবার এক সংক্ষিপ্ত রায়ে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

হার্ভার্ডে বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি বন্ধ এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রদের মতাদর্শগত দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করতে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের মুখে নতি স্বীকার না করায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপর ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ করা ২২০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেন। এ ছাড়া করছাড় সুবিধাও বাতিল করা হয়। পরে বিদেশি ছাত্র ভর্তিতেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষার্থীদের জন্য স্মার্ট কার্ড চালু করা দরকার
  • ক্যানসারের ফেরা ঠেকাতে শরীরচর্চা ‘ওষুধের চেয়ে ভালো’
  • আমার জন্য ও একজন ‘হিউম্যান গুগল’
  • নগদ নিয়ে গণমাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন’ এবং প্রকৃত ঘটনা
  • ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, একজন নিহত
  • ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪
  • অবাধ্য নারীদের জন্য কুখ্যাত গোপন ‘কারাগার’, কী হয় সেখানে
  • ‘পথের বিপদ’ এবার কম
  • ৪টি থেকে ৪০ গরু আরাফাতের
  • ট্রাম্প নিজেই ভর্তি হতে পারেননি বলে কি হার্ভার্ডের ওপর এত ক্ষোভ