পবিত্র ঈদুল আজহার চার দিন আগে থেকে রাজধানীতে পশুর হাট বসে। ঈদের দিনও কোরবানির পশুর কেনাবেনা হয়। সব মিলিয়ে পাঁচ দিন হাটগুলো জমজমাট থাকে। আগামী ৭ জুন দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্‌যাপনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। এই হিসাবে কোরবানির হাট শুরু হওয়ার কথা ৩ জুন। তবে এখনো হাটগুলোর ইজারাদার নিয়োগ চূড়ান্ত করতে পারেনি ঢাকা উত্তর সিটি (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ।

সংস্থাটির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এ বছর একটি স্থায়ী (গাবতলী) হাটের পাশাপাশি ১০টি অস্থায়ী হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে গত বৃহস্পতিবার মাত্র দুটি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করা গেছে। হাট দুটি হচ্ছে ডিএনসিসি ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় মস্তুল চেকপোস্ট–সংলগ্ন খালি জায়গার হাট এবং তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট–সংলগ্ন খালি জায়গা (পলিটেকনিক মাঠ)।

হাটগুলোর ইজারাদার নিয়োগে দেরি হওয়ায় হাট বসানোর প্রস্তুতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন দরপত্র দেওয়া ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, হাটের প্রস্তুতির জন্য কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রচারণার বিষয় রয়েছে। সারা দেশের গবাদিপশুর ব্যবসায়ী কিংবা পাইকারদেরও জানানোর বিষয় রয়েছে।

গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার রাজধানীর একমাত্র স্থায়ী হাট গাবতলীর বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ডিএনিসিসি। পাশাপাশি রাজধানীর অন্যতম বৃহত্তম উত্তরা দিয়াবাড়ি হাটের (অস্থায়ী) বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। দুই দফা দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও সরকার নির্ধারিত দর পাওয়া যায়নি মিরপুরের কালশী বালুর মাঠের হাটের জন্য।

বৃহস্পতিবার বিকেলে হওয়া হাটের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় ৬টি অস্থায়ী হাটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এসেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও অনুমোদনের জন্য সুপারিশ প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল রোববারের মধ্যে হাটগুলোর ইজারাপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা।

হাটগুলোর ইজারাদার নিয়োগে দেরি হওয়ায় হাট বসানোর প্রস্তুতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন দরপত্র দেওয়া ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, হাটের প্রস্তুতির জন্য কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রচারণার বিষয় রয়েছে। সারা দেশের গবাদিপশুর ব্যবসায়ী কিংবা পাইকারদেরও জানানোর বিষয় রয়েছে।

প্রথম দফায় ১০টি অস্থায়ী হাটের জন্য গত ২৯ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করেছিল ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে দুটি হাট—বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং, আফতাবনগর ও খিলক্ষেত বনরূপা হাটের ইজারা উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাতিল হয়েছে। বাকি হাটগুলোর মধ্যে দুটি ছাড়া কোনো হাটের জন্য সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দর পাওয়া যায়নি।

মিরপুর-৬ নম্বর ইস্টার্ন হাউজিং হাটের পাওয়া সর্বোচ্চ দর সরকারি দরের চেয়ে বেশি হলেও দুজন দরদাতার দেওয়া দরের পরিমাণ একই ছিল। তাই ওই হাটসহ ৬টি হাটের জন্য গত ২৪ মে দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর পাশাপাশি আরও দুটি নতুন হাট কাঁচকুড়া ও খিলক্ষেত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে খালি জায়গার হাটের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়।

কোন হাটে কত দর

ইজারাদার চূড়ান্ত হওয়া দুটি হাটের মধ্যে মস্তুল হাটটি ইজারা হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ টাকায়। এই হাটের সরকারি দর ছিল ১ কোটি সাড়ে ৭ হাজার টাকা। হাটটির ইজারাদার সুরমি এন্টারপ্রাইজের মজিবুল্লাহ খন্দকার। আর তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হাটের জন্য সরকারি দর ছিল ৬৪ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা। সর্বোচ্চ ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা দর দিয়ে হাটের ইজারা পেয়েছেন জায়ান এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা ৬টি হাটের মধ্যে একমাত্র কালশী বালু মাঠের হাটটির জন্য কাঙ্ক্ষিত দর পাওয়া যায়নি। এই হাটের জন্য সরকার নির্ধারিত দর ছিল ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেছে ৩০ লাখ টাকা। এই দর দিয়েছেন মাসুদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভার পর কালশী হাটের জন্য তৃতীয় দফায় দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা বাকি ৫টি হাটের মধ্যে ৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা সরকারি মূল্যের উত্তরা দিয়াবাড়ি হাটের জন্য দর পাওয়া গিয়েছিল ১০ কোটি ১ লাখ টাকা। দরটি দিয়েছিলেন এসএম ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে দরপত্রের শিডিউলের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি পে-অর্ডারের মূল কপির পরিবর্তে ফটোকপি জমা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে দরপত্র খোলার দিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা (৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা) চায়না বাংলা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা হট্টগোল করেন। এ হাটের বিষয়ে মূল্যায়ন কমিটিতে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি প্রশাসকের কাছে সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুনসর্বোচ্চ ২৫ কোটি টাকা দরপ্রস্তাব, দরদাতাকে চেনেন না কেউ২৯ মে ২০২৫

প্রথম দফায় দুজন দরদাতার দেওয়া দর সমান হওয়ায় মিরপুর-৬ ইস্টার্ন হাউজিং হাটের দ্বিতীয় দফায় দর আহ্বান করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দর দিয়েছেন সোহাগ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। হাটটির সরকারি দর ছিল ১ কোটি ৩৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৮৬ টাকা। প্রথম দফায় একই দর দেওয়া মার্সি করপোরেশন দ্বিতীয় দফায় ২ কোটি ২২ লাখ টাকা দর দিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা হয়।

এ ছাড়া সরকার নির্ধারিত ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার ভাটারা সুতিভোলা খালের পাশে খালি জায়গার হাটের জন্য দ্বিতীয় দফায় মাত্র একটি দরপত্র জমা পড়ে। প্রতিষ্ঠানটি সরকার নির্ধারিত মূল্যের সমপরিমাণ টাকায়, অর্থাৎ ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকায় দর দিয়েছে।

সরকার নির্ধারিত ২ কোটি ২০ লাখ টাকার মোহাম্মদপুরের বছিলা হাটের জন্য আহাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২ কোটি ৭১ লাখ দর পাওয়া যায়। আর ১০ নম্বর সেক্টর–সংলগ্ন রানাভোলা অ্যাভিনিউ খালি জায়গার হাটের জন্য দর পাওয়া যায় ৯৫ লাখ ২১ হাজার টাকা। দরটি দিয়েছে আতিকুর রহমান অ্যান্ড কোং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সরকারি দর ছিল ৮১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

আরও পড়ুনআগামী বছর থেকে কোরবানির পশুর হাটে হাসিল হবে ৩ শতাংশ২৫ মে ২০২৫

প্রথম দফায় পরিকল্পনায় ঢাকা ১০টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে দুটি বাতিল হওয়ার পর নতুন আরও দুটি জায়গায় হাট বসাতে দরপত্র আহ্বান করে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। এর একটি খিলক্ষেত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচের হাট, সরকারি দর ৫০ লাখ টাকা। এ হাটের জন্য ক্ল্যাসিক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান দর দিয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর কাঁককুড়া বাজার–সংলগ্ন রহমাননগর হাটের সরকারি দর ছিল ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ হাটের জন্য আরহাম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা দর দিয়েছে।

হাটের ইজারাদার চূড়ান্ত করতে এত দেরি হওয়ার বিষয়ে বক্তব্য জানতে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সংস্থাটির সচিব মুহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে ফোন করা হয়েছিল। যোগাযোগ করা হয়েছিল প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমানের মুঠোফোনেও। কিন্তু দুজনের কেউই ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

ইজারাপ্রত্যাশী ব্যক্তিরাও নাম প্রকাশ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁরা বলেন, কে ইজারা পাচ্ছেন, সেটা নিশ্চিত না হওয়ায় হাটের প্রস্তুতি নেওয়া যাচ্ছে না। অন্যান্য বছরে এই সময়ের মধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র ন র ধ র ত র হ ট র জন য হ ট র জন য দ হ ট র ইজ র র ইজ র দ র র প রস ত ত ন ম র একট কর মকর ত ম হ ম মদ দর দ য় ছ র জন য ক র জন য স ড এনস স র সরক র দর ছ ল ন ত হয় দরদ ত হওয় য়

এছাড়াও পড়ুন:

জলমহালে কমছে পানি সঙ্গে মাছ-রাজস্বও

রাজবাড়ীর ৪৪টি সায়রাত জলমহালের মধ্যে ১৭টিতে শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। ফলে একদিকে মাছ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অপরদিকে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এসব জলমহালের খনন বা সংস্কার হয় না। যে কারণে দরপত্র আহ্বান করা হলেও ইজারা নিতে আগ্রহ কমছে। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে খনন বা সংস্কার বিষয়ে কোনো মন্তব্য মেলেনি। 
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারের যেসব জলমহাল থেকে ভূমি কর ছাড়া অন্যান্য বিবিধ কর আদায় করা হয় সেগুলোকে সায়রাত জলমহাল বলা হয়। সম্প্রতি এই প্রতিবেদক জেলার সায়রাত জলমহালগুলোর বিষয়ে জানতে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জেলার সবচেয়ে বেশি ১৯টি জলমহালের অবস্থান বালিয়াকান্দি উপজেলায়। এ ছাড়া সদর উপজেলা, পাংশা ও কালুখালীতে আছে আটটি করে জলমহাল। গোয়ালন্দ উপজেলায় আছে মাত্র একটি।
এ তালিকায় আছে রাজবাড়ী পৌরসভার লক্ষীকোল রাজারবাড়ি-সংলগ্ন পুকুরটি। শূন্য দশমিক ৯৪১২ একরের পুকুরটি থেকে গত তিন বছরেও কোনো রাজস্ব আদায় হয়নি। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকজনকে গোসল করতে দেখা যায়। সেখানে দিনমজুর অজিত সরকার বলেন, বর্ষাকালে পুকুরটি পানিতে টইটম্বুর থাকে। এর পর থেকে পানি কমতে থাকে। তবে সারাবছরই পানি থাকে।
সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের চরখানখানাপুর গ্রামে বালিয়াকুম জলমহালের অবস্থান। সরকারি হিসাবে এর আয়তন ১৬ দশমিক ৭০ একর। খালটিতে পানি থাকলেও অনেক কম। ওপর দিয়ে জালের দড়ি টাঙানো। জেলে তারক আলী জানান, বালিয়াকুম আগে অনেক বড় ছিল। আশপাশে পুকুর খননের ফলে ছোট হয়ে গেছে। আগে এখানে রুই, কাতলা, বোয়াল, শোল, টাকি, পুঁটি, ট্যাংরা, চিংড়িসহ দেশি প্রজাতির প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। বর্ষাকালে বালিয়াকুম টইটম্বুর হয়ে যায়। চার মাসেরও বেশি পানি থাকে। অন্য সময় কম পানি থাকে। কিন্তু কয়েক বছরেও কেউ ইজারা নিয়েছেন বলে শোনেননি।
এ দুটির পাশাপাশি সদরের কৈজুরি, জালদিয়া, হাজারখালী ও বানিয়ারী এ চারটি জলমহাল তিন বছরে ইজারার কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। এ ছয়টি জলমহালে এ বছর (১৪৩২) ইজারা হয়েছে বলে উল্লেখ আছে। এ ছাড়া বিনোদপুর হাট-বাজারসংলগ্ন পুকুরটি নিয়ে দেওয়ানি মামলা চলছে। সদরের একমাত্র জলমহাল হিসেবে গত তিন বছরে (১৪২৯, ১৪৩০ ও ১৪৩২) রাজস্ব আদায় হয়েছে পদ্মা নদীর কোল জলমহাল গোদারবাজার কোল থেকে। ৭৫ দশমিক ৬২ একর আয়তনের জলমহালটি থেকে এই সময়ের মধ্যে আদায় হয়েছে মাত্র ৩১ হাজার ৫০০ টাকা।
এই জলমহালের সাবেক ইজারাদার আল আমিন মন্টু বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, ওই জলমহালটি ইজারা নিলে তেমন লাভ হয় না। তাই এবার ইজারার প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি। 
সদরের সুলতানপুর ইউনিয়নের কৈজুরি ও জালদিয়ার জলমহালগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। আশপাশের মাটি ভেঙে খাল দুটির বেশির ভাগ জায়গা ভরাট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে সুলতানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান সজিব বলেন, বর্ষার পানিতে খাল দুটি ভরে যায়। কিন্তু পানি থাকে অল্প কিছুদিন। এ কারণে কেউ জলমহাল দুটি ইজারা নিতে চান না। মাছ চাষের উপযোগী করতে এগুলো খনন করা প্রয়োজন।
এবার পদ্মা নদীর গোদারবাজার কোল ইজারা নিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি উত্তম কুমার সরকার। তিনি বলেন, সদর উপজেলায় যেসব জলমহাল আছে, সেগুলোর দরপত্র কিনতে কারও আগ্রহ হয় না বলে শুনেছেন। জলমহালগুলোর সংস্কারের দাবি তাঁর।
একই সময়ে গোয়ালন্দের একমাত্র জলমহাল উজানচর বদ্ধ জলমহাল থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এটির আয়তন ২৬ দশমিক ৩৬ একর। এ ছাড়া কালুখালীর গতমপুর থেকে জৌকুড়া পদ্মা নদীর কোল জলমহাল (১১৭.৬৬ একর) থেকে তিন লাখ ৯০ হাজার টাকা, মরাগঙ্গা নদীর কোল (৭৫ একর) থেকে দুই লাখ টাকা ও চরনারায়ণপুর দিঘি (তিন একর) থেকে আয় হয়েছে আট লাখ ৮২ হাজার টাকা। উপজেলার বাকি পাঁচটি জলমহাল থেকে রাজস্ব আদায়ের তথ্য নেই। কারণ হিসেবে উল্লেখ আছে, ১৪২৬ বাংলা সনের পর জলমহালগুলোর শ্রেণি বদল করে খাল করা হয়েছে। 
পাংশা উপজেলার আটটি জলমহালের মধ্যে মালুভাগ্যবান পুকুর (৪.৪০ একর) থেকে গত তিন বছরে রাজস্ব আয় হয়েছে ৪২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কাজিয়াল নদী (বদ্ধ) জলমহাল (৩১.৯৪ একর) আয় সাত লাখ ৬০ হাজার টাকা ও সিরাজপুর হাওর (বদ্ধ) জলমহাল (১৯৩.০৮ একর) থেকে আয় হয়েছে তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা। বাকি পাঁচটি জলমহালে রাজস্ব আয়ের তথ্য নেই। কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। মাছ উৎপাদনের কোনো তথ্যও উল্লেখ করা হয়নি।
বালিয়াকান্দির ১৯টি জলমহালের মধ্যে ১৩টি থেকে গত তিন বছরে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭৯ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫ টাকা। এ বছরের দরপত্রের কোনো তথ্যই মেলেনি। বাকি ছয়টি জলমহাল থেকে রাজস্ব আয় না হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, শুষ্ক মৌসুমে এগুলোতে পানি থাকে না।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদার ভাষ্য, বছরের তিন মাস পানি থাকলেই মাছ চাষ সম্ভব। মাছের উৎপাদন হলে সবারই লাভ। এসব জলমহালের ক্ষেত্রে তাদের করণীয় তেমন কিছু নেই। তারা শুধু পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন। আগামী সভায় বিষয়টি তুলে ধরবেন। খালগুলো খনন করলে উপকার পাওয়া যেত।
জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, ২০ একরের নিচের জলমহালগুলো উপজেলা অফিস থেকে ইজারা দেওয়া হয়। অন্যগুলো দেওয়া হয় অনলাইনের মাধ্যমে। কিছু জলমহাল উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। নিয়ম মেনেই জলমহাল ইজারা দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬ কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে
  • বৃষ্টিতে গলে পড়ছে ভবনের ইট
  • বিএনপি নেতাদের কবজায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির কোরবানির পশুর হাট
  • ঢাকা উত্তরে গরুর ৮ হাটের ইজারাদারই বিএনপি নেতা
  • কথা ছিল ক্যাবিনেটে বসে ঘোষণা করব প্রেমের দরপত্র
  • পশুর হাট শুরুর বাকি ৪ দিন, চূড়ান্ত হয়েছে মাত্র দুটি
  • ১০০ কম্পিউটার চালু হচ্ছে না 
  • জলমহালে কমছে পানি সঙ্গে মাছ-রাজস্বও