কম বরাদ্দও বাস্তবায়ন করতে পারছে না মন্ত্রণালয়গুলো
Published: 31st, May 2025 GMT
প্রতিবছর বাজেটে শিক্ষা স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা খাতে কম বরাদ্দ নিয়ে সমালোচনা হয়। তবে অপ্রতুল বরাদ্দের টাকাও পুরো খরচ করতে পারে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো। এ জন্য যারা বাজেট বাস্তবায়ন করবে সেই পর্যায়েও সংস্কার করতে হবে। মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্পভিত্তিক মনিটরিং এবং ইভ্যালুয়েশন করে যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না সেটি খতিয়ে দেখতে হবে।
শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের আ ব ম ফারুক কনফারেন্স হলে ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট সংস্কারের রূপরেখা’ শীর্ষক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস রিসার্চ ব্যুরো এ আয়োজন করে।
সভায় ব্যবসা গবেষণা ব্যুরোর পরিচালক এবিএম শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহমুদ ওসমান ইমাম, অর্থনীতিবিদ সাইফুল ইসলাম, শিক্ষক ওয়াসিক সাদিক খান বক্তব্য রাখেন।
সায়মা হক বিদিশা বলেন, প্রতিবছর প্রস্তাবিত বাজেটে কম বরাদ্দ নিয়ে সমালোচনা হয়। তবে দেখা যায়, সংশোধিত বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাটছাঁট করা হয়। এবার গুরুত্বপূর্ণ খাতে যেন কর্তন করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা খাতে কোনোভাবেই বরাদ্দ কমানো যাবে না। এর পাশাপাশি কিছু খাতে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নজর দিতে হবে—দক্ষতা ট্রেনিং ইত্যাদিতে জোর দিতে হবে।
তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয় প্রকল্পভিত্তিক মনিটরিং এবং ইভ্যালুয়েশন করা দরকার। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে উপস্থাপন করতে হবে কেন বাস্তবায়নে স্লথগতি দেখা যাচ্ছে, এটার কারণ কী। তাহলে আমরা কিছু উন্নতি দেখতে পাব। যত বেশি ডিজিলাইজেশন করা যাবে, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে তত বেশি মানুষকে করজালে আনা যাবে। এ ছাড়া জেলা পর্যায়ে কর মেলা, প্রণোদনা দিয়ে করজাল বৃদ্ধি করা যাবে।
সায়মা হক আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু সামাজিক সুরক্ষা খাতগুলোতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। নূন্যতম হলেও ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এটা যদি করা না যায় তাহলে দারিদ্র্য বিমোচনে আগাতে পারবো না। সামাজিক সুরক্ষা খাতে গ্রামের পাশাপাশি শহরের বস্তিবাসীদেরকেও বিশেষত তাদের কর্মসংস্থান কেন্দ্র করে কর্মসূচি নিতে হবে।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র এবং কুটির শিল্পে জোর দেওয়া দরকার। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। যেসব তরুণ উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে না, তাকেও কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কুটির শিল্পগুলোতে সহজে ট্রেড লাইসেন্স, সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া যায়। কোনো খাতে প্রণোদনার জন্য শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা হচ্ছে কিনা, তাদের বেতন, অভারটাইম, কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা, মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হচ্ছে কিনা—ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হলে শ্রমিকদের অধিকারও রক্ষা হবে।
ব্যবসা গবেষণা ব্যুরোর পরিচালক এবিএম শহীদুল হক বলেন, একটা রিফর্ম চলছে। বাজেটেও রিফর্ম চাই। সবকিছুর আগে প্রশাসনিক সংস্কার দরকার। আমরা বাজেট বরাদ্দ নিয়ে কথা বলব। কিন্তু যারা বাজেট বাস্তবায়ন করবে সেখানে সংস্কার করতে না পারলে দেখা যাবে যা বরাদ্দ হচ্ছে তাও খরচ হয়নি, আর যেটা বাস্তবায়িত হয়েছে সেটাও সুষমভাবে হচ্ছে না।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, যে প্রসেসে বর্তমানে আমাদের ট্রানজিশন হচ্ছে এটা স্বাভাবিক নয়। ফলে এটা অন্য সময়ের সঙ্গে মেলালে হবে না। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কোন খাতে আমি বরাদ্দ দিচ্ছি, কেন দিচ্ছি এটা নির্ধারণ করতে হবে। যে সব খাতে বরাদ্দ অব্যবহৃত থেকে যায় সেগুলো অন্য খাতে পুনরায় বরাদ্দ করতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ম জ ক স রক ষ বর দ দ দরক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিসিএলে বিদেশি দল, এনসিএলে বিদেশি ক্রিকেটার
দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ যে মানের হয়, যেভাবে আয়োজন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে হরহামেশা। অতীতে সমালোচনার পর কিছুটা মান বেড়েছে। কিন্তু তারপরও ‘আপ টু মার্ক’ হয়নি।
বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিব্যি পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলে এসে ধুকতে থাকেন তখন তারতম্য প্রকটভাবে ফুটে উঠে। এজন্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটারকে নিয়ে আসতে চায় বিসিবি। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যুক্ত করতে চায় বিদেশি দল।
বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
তিন সপ্তাহের জন্য আসছেন উড, মনোবিদ স্কট
সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার বেলায়েত হোসেন মারা গেছেন
বিসিএল শুরু থেকে ছিল ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন, প্রাইম ব্যাংক সাউথ জোন, ইসলামী ব্যাংক ইষ্ট জোন ও বিসিবি নর্থ জোন নামে চারটি দল শুরুর কয়েক বছর বিসিএলে অংশ নিয়েছে। পেশাদারিত্বের ঘাটতি, পরিকল্পনার অভাব এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তিনটি ফ্রাঞ্চাইজি ধীরে ধীরে সরে যায়। পরবর্তীতে বিসিবি চারটি দলই নিজস্ব খরচে পরিচালনা করে বিসিএল চালু রাখে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতার অভাব বোঝা যায়।
এজন্য বিসিবি সামনের আসরে বিদেশ থেকে একটি দল নিয়ে আসতে চায়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। বিসিএল যেই সময়ে আয়োজন করতে চাচ্ছে সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। বিসিবির পুরো খরচেই অতিথি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বাকি তিনটি দল গঠন করবে বিসিবি।
আকরাম খান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো বিসিএলে একটি বিদেশি দলকে পেতে যাচ্ছি। হয়তো তারা এ দল হিসেবে আসবে। নয়তো অন্য কোনো নামে। এক মাস এই টুর্নামেন্ট চলবে। ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’’
এদিকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটার অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা যুক্ত হবেন, কিভাবে আসবেন, পারিশ্রমিক কত হতে পারে সেসব নিয়ে এখনও কোনো উপায় খুঁজতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ভালোমানের বিদেশি খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।
তাদের পারিশ্রমিক চূড়ান্ত করা, পুরো আসরে অ্যাভেইলেভেল থাকবেন কিনা সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে। এজন্য আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না আকরাম।
আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দুই স্তরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আট দলে একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার রাখার ইচ্ছা বিসিবির। অতীতে বিদেশি ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছে। ইমরান ফরহাদ, আমির ওয়াসিমরা খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির এই টুর্মামেন্টে।
মূলত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং মান বাড়াতে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়োজকরা। যদিও একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম প্লেয়িং কন্ডিশনে সব সময়ই ছিল, ছিল সর্বশেষ মৌসুমেও। বিভাগীয় দলগুলো আগ্রহ না থাকায় বিসিবিও জোর দেয়নি। তবে এবার বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারকে যুক্ত করবে। পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধার বিষয়টিও দেখভাল করবে।
ঢাকা/ইয়াসিন