কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কিছু মানুষকে পুশইনের চেষ্টা করে। এটি ঠেকাতে প্রায় ১ কিলোমিটারজুড়ে মানবপ্রাচীর তৈরি করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার ভিডিপি ও স্থানীয় জনতা। গত শুক্রবার রাতে তারা সীমান্ত পাহারা দেয়।
অন্যদিকে, রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে ৫টি ড্রোন উড়িয়েছে বিএসএফ। আর গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত তিন জেলার সীমান্ত দিয়ে নতুন করে ৩০ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে গত ৪ মে থেকে শনিবার পর্যন্ত ১ হাজার ৪১ জনকে ঠেলে পাঠানোর খবর পাওয়া গেল।
নাগেশ্বরীতে রাত জেগে সীমান্ত পাহারা
নাগেশ্বরীর ওপাশে ভারতের আসামের ধুবরী জেলার গোলকগঞ্জ থানা। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা দুটি পিকআপ ভ্যানে ৫০-৬০ জন নাগরিককে ফাইসকারকুটি গ্রামের স্কুলে জড়ো করে। সীমান্তের ওই গ্রামের সব লাইট বন্ধ করে দেয়। তাদের পুশইন চেষ্টা করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কেদার ইউনিয়নের শোভারকুটি ও শিপেরহাট সীমান্তে কয়েকশ জনতা অবস্থান নেয়। কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির কচাকাটা ও কেদার ক্যাম্পের সদস্য ও আনসার ভিডিপির কয়েকটি দল চলে আসে। বিএসএফ সদস্যরা অবস্থান নেয় ভারতীয় সীমান্তে। রাত ২টার দিকে শূন্যরেখায় চলে আসে তারা। কয়েক দফা বিজিবির সঙ্গে কথা বলতে চায়। বিজিবি তা প্রত্যাখ্যান করে। রাত ৩টার দিকে শূন্যরেখা থেকে সরে যায় বিএসএফ।
কুড়িগ্রাম-২২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব উল হক বলেন, পুশইন ঠেকাতে বিজিবি, আনসার সদস্যসহ সীমান্তবাসী যৌথভাবে পাহারা দিচ্ছে।
রৌমারীতে উড়ল ভারতীয় ৫টি ড্রোন
রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে ৫টি ড্রোন উড়িয়েছে বিএসএফ। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা সীমান্তের এক কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে এ ড্রোন উড়ানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফিরোজ মিয়া।
বিজিবি ৩৫ জামালপুর ব্যাটালিয়নের অধীন বড়াইবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আঞ্জু মিয়া বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করায় বিএসএফকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
আরও ৩০ জনকে পুশইন
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বেনীপুর সীমান্তের মেহগনি বাগান দিয়ে শুক্রবার রাতে ১০ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। শনিবার তাদের জীবননগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি সীমান্ত দিয়ে ৯ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। শনিবার তাদের দৌলতপুর থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি। ৪৭ বিজিবির অধিনায়ক লে.
অন্যদিকে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার লাতু সীমান্ত দিয়ে শনিবার ভোরে ১১ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের লাতু ক্যাম্পের টহলদল তাদের আটক করে। ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসএফ প শইন শ ক রব র র ত উপজ ল র ব এসএফ সদস য প শইন
এছাড়াও পড়ুন:
১২ হাজার তরুণ–তরণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পিকেএসএফ
পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে দেশের ১২ হাজার তরুণ-তরুণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষানির্ভর তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রিজ কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) আওতায়। এ প্রকল্পে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
আজ সোমবার রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে এসআইসিআইপি ও পিকেএসএফের প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী তরুণেরা ১২টি খাতের প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে থাকা-খাওয়ার সব খরচ প্রকল্প থেকে বহন করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণেরা। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের আত্মকর্মসংস্থান বা মজুরিভিত্তিক চাকরির ক্ষেত্রেও সহায়তা করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিকেএসএফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো সেই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।
পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। এটি একই সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। প্রকল্পের আওতায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত কোর্স অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা সহজেই কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ১২ হাজার ছাড়াও আরও ৮ হাজার ৫০০ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি ২ হাজার এতিম ও দুস্থ তরুণকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বক্তব্য দেন।