বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি, সিলেটে বন্যার পদধ্বনি
Published: 1st, June 2025 GMT
সিলেট নগরীতে আজ রবিবার (১ জুন) ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত চব্বিশ ঘণ্টায় ৪০৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার ও সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৩.৬ মিলিমিটার।
অন্যদিকে, উজানের ঢলে পানি বেড়েছে নদ-নদীতে। সুরমা-কুশিয়ারার দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে পানি। এতে আগাম বন্যার পদধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন সিলেটবাসী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ শাহ মো.
এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুপুর ১২টার প্রতিবেদন অনুযায়ী সুরমা নদী সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে ছিল।
একই সময়ে কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১.২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যা গতকাল বিপৎসীমার ১৮৭ সেন্টিমিটার নিচে ছিল।
সুরমা নদী সিলেট নগরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসময় কুশিয়ারা নদী বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচে, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভারী বর্ষণের ফলে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ইতিমধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ জনপদ ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, “ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ফলে সীমান্তের নদ-নদী দিয়ে পানির ঢল আসছে। সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে পানি। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে আশা করা যায় বৃষ্টিপাত থামলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
ঢাকা/নূর/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব পৎস ম র উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি