সেন্ট মার্টিনে নিত্যপণ্যের সংকট, বেড়েছে দাম
Published: 1st, June 2025 GMT
বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল সাগর। সাত দিন ধরে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে কোনো পণ্য নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় নিত্যপণ্যের সংকট তীব্র হয়েছে টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। দ্বীপটিতে কয়েক গুণ বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, শাকসবজিসহ খাদ্যসামগ্রীর দাম। এতে দুর্ভোগে দিন কাটছে বাসিন্দাদের।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের সেন্ট মার্টিনে প্রায় ১১ হাজার মানুষ বসবাস করে। দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশির ভাগ পণ্য টেকনাফ থেকে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করা হয়। সর্বশেষ গত ২৫ মে সেন্ট মার্টিনে পণ্যভর্তি নৌযান গেছে। ওই দিন বিকেলে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলা প্রশাসন সেন্ট মার্টিন নৌপথে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যায়নি।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো.
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মুদিদোকানি মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় তাঁর দোকানে সব ধরনের পণ্যের সংকট তৈরি হয়েছে। কেবল পর্যাপ্ত চাল মজুত রয়েছে। মো. হোসেন নামের আরেক দোকানি বলেন, ‘কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়েক লাখ টাকার সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডিম ও চাল নিয়ে এসে মজুত করেছিলাম। সেই মালামাল প্রায় বিক্রি হয়ে গেছে। নৌযান চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক না হলে দ্বীপের মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে।’
বাজারের উত্তর পাশে কয়েকটি দোকানে গত শুক্রবারও একটি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৮–২০ টাকায়, সেই ডিম টেকনাফে বিক্রি হয় মাত্র ১০ টাকা। ১ কেজি আলু ৫০ টাকায় বিক্রি করা হলেও টেকনাফে দাম ৩০ টাকা। সব ধরনের সবজির দাম প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা।মো. ছৈয়দ আলম, সদস্য, সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদসেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলামও খাদ্যের সংকটের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
আজ সকালে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, খালে প্রায় তিন শতাধিক ছোট–বড় নৌযান নোঙর করে রাখা হয়েছে। ঘাটে মানুষের পরিচিত ভিড় নেই। কিছু ব্যক্তিকে নৌযান পাহারা দিতে দেখা যায়। টেকনাফ–সেন্ট মার্টিন নৌপথের সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, নৌপথটিতে ৩০টি ট্রলার যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সব নৌযান বন্ধ রয়েছে। এতে নৌযানের মাঝিমাল্লাদের কর্মহীন দিন কাটছে।
সেন্ট মার্টিনের সাবেক ইউপি সদস্য ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খান বলেন, দ্বীপে এখন পর্যটক না থাকায় বাসিন্দারা এমনিতেই সংকটে রয়েছেন। এর মধ্যে বৈরী আবহাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধিতে আরও সংকটে পড়েছেন। দ্বীপের বাসিন্দাদের অনেকটাই ঘরবন্দী সময় কাটছে।
পণ্য নেই, পর্যটক না থাকায় বেচাকেনাও কম, তাই বন্ধ রাখা হয়েছে বাজারের অধিকাংশ দোকান। আজ সকালে সেন্ট মার্টিন জেটিঘাট সংলগ্ন বাজারেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: যপণ য
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।
আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।
দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।
২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।
পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।