আসছে বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে
Published: 1st, June 2025 GMT
প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সোমবার (২ জুন) পেশ করবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রস্তাবিত বাজেট বিটিভির মাধ্যমে দুপুর ৩টায় দেশবাসীর কাছে তুলে ধরবেন তিনি।
বাজেটে কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক কর বাড়ানো হচ্ছে। কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক কর কমানো হচ্ছে। যে পণ্যগুলোর ওপর শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে সেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
কসমেটিক্স
নারীদের ব্যবহৃত কসমেটিক্স পণ্য লিপস্টিক, লিপলাইনার, আইলাইনার, ফেসওয়াশ, মেকআপের সরঞ্জাম আমদানির ন্যূনতম মূল্য বিভিন্ন হারে বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিকেজি লিপস্টিক আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য ২০ ডলার আছে। প্রস্তাবিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৪০ ডলার করা হচ্ছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
আরো পড়ুন:
বাজেট বিটিভির মাধ্যমে তুলে ধরবেন অর্থ উপদেষ্টা
বাজেট পেশ ২ জুন, প্রচার হবে বিটিভিসহ সব টেলিভিশনে
ফুড সাপ্লিমেন্ট ও বেভারেজ
গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের পুষ্টি উপাদান বা ফুড সাপ্লিমেন্ট, শিশুদের জন্য ব্যবহৃত মল্ট এক্সট্র্যাক্ট ও আটা-ভিত্তিক খাদ্যপণ্য, বেভারেজ কনসেন্ট্রেট আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। ফলে এসব পন্যের দাম বাড়তে পারে।
ফ্রিজ-এসি
রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনারের ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এতে দেশীয় ফ্রিজ-এসির দাম বাড়তে পারে।
মোবাইল ফোন
মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনে হ্রাসকৃত ভ্যাটহার বাড়ানোর হচ্ছে। উৎপাদনের ক্যাটাগরিভেদে ২ থেকে আড়াই শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। এতে মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে।
রড-সিমেন্ট
রড, এঙ্গেল বার তৈরির প্রধান কাঁচামাল স্ক্র্যাপের সুনির্দিষ্ট করের পরিমাণ এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করা হচ্ছে। এছাড়া স্ক্র্যাপ গলানোর রাসায়নিকের ফেরো ম্যাঙ্গানিজ ও ফেরো সিলিকা ম্যাঙ্গানিজের শুল্ক-কর বাড়ানো হচ্ছে। সিমেন্ট শিল্পে ক্লিংকার আমদানির ওপর নির্ধারিত শুল্ক বাতিল করে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হচ্ছে। ফলে রড- সিমেন্টের দাম বাড়তে পারে।
সুতির লুঙ্গি-গামছা, পোশাক
দেশীয় টেক্সটাইল মিলে উৎপাদিত সুতার ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিকেজি কটন সুতা ও ম্যান মেইড ফাইবারে তৈরি সুতার সুনির্দিষ্ট কর ৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা করা হচ্ছে। ফলে গামছা, লুঙ্গিসহ পোশাকের দাম বাড়তে পারে।
সিগারেট
সিগারেটের কাগজ, তামাক শিল্পে ব্যবহৃত পেপারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করা হতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে আমদানিকৃত সিগারেট পেপারের ওপর শুল্ক হতে পারে ৩৫০ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া তামাক বীজ ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। ফলে বিড়ি, সিগারেট, আমদানি করা সিগারেটের দাম বাড়তে পারে।
ফ্যান, এলইডি বাল্ব
ফ্যান উৎপাদনে ব্যবহৃত নন-অ্যালয়ড অ্যালুমিনিয়াম শিট, এবং টেলিভিশন তৈরির জন্য ব্যবহৃত এলইডি বাল্ব ও ওপেন-সেল প্যানেলের ওপরও শুল্ক বাড়তে পারে। এলইডি ল্যাম্পের ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হতে পারে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
মার্বেল-গ্রানাইট
মার্বেল-গ্রানাইড পাথর আমদানির সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শাতংশ করা হচ্ছে। এতে মার্বেল-গ্রানাইডের দাম বাড়তে পারে।
বিদেশি চকোলেট
প্রস্তাবিত বাজেটে চকলেট আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের চকলেটের শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য চার ডলার। এটি বাড়িয়ে ১০ ডলার করা হচ্ছে। এতে আমদানি করা সব ধরনের চকোলেটের দাম বাড়তে পারে।
টেবিলওয়্যার-টয়লেটসামগ্রী
বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রী, হাইজেনিক ও টয়লেটসামগ্রী উৎপাদনে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা
ব্যাটারিচালিত রিকশায় ব্যবহৃত ৭৫০ ও ১২০০ ওয়াটের ডিসি মোটরের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে রিক্সার দাম বাড়তে পারে।
মোটরসাইকেল ও অন্যান্য
মোটরসাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ, সব ধরনের স্ক্রু, নাট-বোল্টর শুল্ক কর বাড়ানো হচ্ছে। তাই এসব পন্যের দাম বাড়তে পারে।
বাস-ট্রাক
বাস-ট্রাকের চেসিস বিদেশ থেকে আমদানির পর দেশে বডি প্রস্তুত করে রাস্তায় চলাচলের উপযোগী করা হয়। বাস-ট্রাকের বডি বানানোর ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে। ফলে বাস-ট্রাকের দাম বাড়তে পারে। নিবন্ধন ও ফিটনেস নবায়নের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র (পিএসআর) দিতে ব্যর্থ হলে গাড়িভেদে অগ্রিম আয়কর বাড়ানো হচ্ছে। ফলে গাড়ির ভাড়া বাড়তে পারে।
বোর্ড, হার্ডওয়্যার সামগ্রী, ব্লেড ও অন্যান্য
ডুপ্লেক্স বোর্ড/কোটেড পেপার, প্লাস্টিকের তৈরি ওয়ান টাইম গ্লাস, বাটি, প্লেট ইত্যাদি; তামাক বীজ, দরজার তালা, তারকাঁটা, ইলেকট্রিক লাইন হার্ডওয়্যার, ব্লেড ইত্যাদির শুল্ক কর বাড়ানো হচ্ছে। ফলে এসব পন্যের দাম বাড়তে পারে।
ওয়াটার পিউরিফায়ার
ওয়াটার পিউরিফায়ার, ওয়াটার পিউরিফায়ারের যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক বাড়নো হচ্ছে। ফলে এসব পন্যের দাম বাড়তে পারে।
কম্পিউটার এক্সেসরিজ
কম্পিউটার এক্সেসরিজ আমদানির ওপর চলমান কর রেয়াত বাতিল হচ্ছে। ফলে প্রযুক্তিখাতে খরচ বাড়তে পারে।
হেলিকপ্টার
নতুন অর্থবছরে হেলিকপ্টার আমদানিতে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানো হতে পারে। তাতে হেলিকপ্টার আমদানির খরচ বাড়বে।
বিদেশি খেলনা
স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে বাজেটে বিদেশি খেলনার ট্যারিফ মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। ফলে বিদেশি খেলনার দাম বাড়তে পারে।
ঢাকা/এনএফ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ন য নতম ম ল য র শ ল ক কর ব ড় ন র ওপর শ ল ক প রস ত ব ত র আমদ ন ব যবহ ত আমদ ন র উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল