সুরমায় ময়লা ফেলছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের তিন কর্মী, ভিডিও ভাইরালের পর বরখাস্ত
Published: 2nd, June 2025 GMT
সিলেট সিটি করপোরেশনের ভ্যানে করে প্লাস্টিকসহ ময়লা-আবর্জনা সুরমা নদীতে ফেলার অভিযোগে তিন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল রোববার এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার।
এর আগে গতকাল দুপুরে সিলেট নগরের কিনব্রিজ এলাকায় সুরমা নদীতে ময়লা ফেলার একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, সিলেট নগরের অভ্যন্তরে প্রবাহিত সুরমা নদীর কিনব্রিজ এলাকায় একটি ভ্যান দাঁড় করিয়ে নদীতে পলিথিনসহ অন্য ময়লা ফেলা হচ্ছে। ‘সিলেট সিটি করপোরেশন’ লেখা ভ্যান থেকে দুই ব্যক্তি ময়লা ফেলছিলেন। তাঁদের গায়ে সিটি করপোরেশনের পোশাক পরা ছিল। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেকজন।
ওই তিনজনকে শনাক্ত করার দাবি করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সুরমা নদী দূষণ ও এতে ময়লা ফেলতে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বরাবরই জনসাধারণকে নিরুৎসাহিত করে আসছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মী এতে জড়িত থাকার বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো নয়। এ জন্য তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনকে শনাক্ত করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্ত করা হবে। তাঁদের বাইরে আর কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।