রাজশাহীর পবা থানার মাহিন্দ্রতে প্রায় ৩০ বিঘার খামার ‘নাবা ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটল ফার্ম’। খামারের সঙ্গে কয়েক শ বিঘা মাঠে দেখা যায় গবাদিপশুর জন্য ঘাস চাষ। ২০২০ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি স্বল্প সময়েই রাজশাহী অঞ্চল ছাপিয়ে বিভিন্ন জেলায় একটি আস্থা ও নির্ভরতার নাম হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ এবং নির্বাহী পরিচালক মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে নাবা ডেইরি নিরাপদ মাংস ও অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন করছে।

 

আধুনিক খামার

আধুনিক ব্যবস্থাপনার এই খামার নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো.

মাসুমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ২০২০ সাল থেকে গ্রাহকদের গবাদিপশুসহ বিভিন্ন ডেইরি পণ্য সরবরাহ করছি। শুরুতে আমাদের খামারে মাত্র ২০-৩০টি গরু ছিল। সেই সংখ্যা এখন কয়েক শ ছাড়িয়ে গেছে।’ নাবা ডেইরির অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য বলা যায়, অনলাইনে গরু কেনার সুযোগ। কোরবানির ঈদের সময় গ্রাহকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা দিচ্ছে এই ডেইরি ফার্ম। ফেসবুকে খামারের পেজের মাধ্যমে গ্রাহকেরা সহজেই তাঁদের পছন্দের গরু নির্বাচন ও ফরমাশ করতে পারেন। মাসুমুল হক বলেন, ‘এবারের ঈদুল আজহার সময় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা ১৫০টি গরু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ গরু শুধু ফেসবুকের মাধ্যমেই বিক্রি হয়ে গেছে।’

শুধু ঈদের সময় নয়, নাবা ডেইরি সারা বছরই গরু বিক্রি করে থাকে। গত বছর কোরবানির ঈদের সময় খামার থেকে প্রায় ২৫০টি গরু বিক্রি করা হয়। অনলাইনে কেনাকাটার এই সুবিধা দূরদূরান্তের ক্রেতাদের জন্য সময় ও শ্রম বাঁচিয়ে দিচ্ছে। মুঠোফোনের মাধ্যমে উচ্চমানের গবাদিপশুর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যাচ্ছে। রাজশাহীর স্থানীয় গ্রাহকেরা অবশ্য খামারে এসে সরাসরি গরু দেখে কেনেন। পশু কেনাবেচার ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যাংকিংসহ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রাহকেরা ব্যবহার করতে পারেন। তারা ২৫০-৪৫০ কেজি ওজনের কোরবানির গরুর মাংস ৪৩০-৪৪০ টাকা কেজি দরে ফার্ম থেকে সরাসরি বিক্রি করছে।

 

নিরাপদ উৎপাদনব্যবস্থা 

নাবা ডেইরির সাফল্যের অন্যতম ভিত্তি নিরাপদ ও প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদনপ্রক্রিয়া। খামারে বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে পশুদের রাখা হয়। গবাদিপশুর কৃত্রিম বৃদ্ধির জন্য কোনো ধরনের স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক বা মেডিসিন ব্যবহার করা হয় না। এতে পশুর মাংস, দুধসহ দুগ্ধজাত পণ্যের বিশুদ্ধতা এবং গুণমান নিশ্চিত করা যাচ্ছে। মাসুমুল হক জানান, ‘আমরা গ্রাহকের সামনে দুধসহ ঘি, দই, মাঠার মতো বিভিন্ন অনুষঙ্গ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি করে সরবরাহ করছি। প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদনব্যবস্থার মাধ্যমে ভোক্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা।’ ফার্মের ব্যবস্থাপনায় টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উপায় অনুশীলন করা হচ্ছে। প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ঘাস উৎপাদন করা হচ্ছে এই খামারের জন্য। প্রাকৃতিক উপায়ে গবাদিপশুর জন্য পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্যের উৎস ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শীতকালে ঘাসের সংকট মোকাবিলায় তারা ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টন ঘাস সংরক্ষণ করা হয়। গরুর জন্য অ্যানথ্রাক্সসহ বিভিন্ন রোগের নিয়মিত ভ্যাকসিন ও টিকা দেওয়া হয়। খামারজুড়ে আধুনিক উপায় পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগের বিস্তার রোধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্মসংস্থান বিকাশ

নাবা ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটলের খামারে বর্তমানে প্রায় ৮০০ পশু লালন-পালন করা হচ্ছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞে ৯০ জনের মতো কর্মী সরাসরি জড়িত। এই কর্মী বাহিনীতে স্থানীয় গ্রামীণ মানুষের একটি বড় অংশ অন্তর্ভুক্ত। খামারটি শুধু গবাদিপশু পালনের পাশাপাশি ঘাস উৎপাদন থেকে শুরু করে দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং বাজারজাতকরণ পর্যন্ত একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইকোসিস্টেম তৈরি করেছে।

 

বৈচিত্র্যময় গবাদিপশু ও দুগ্ধজাত পণ্য

নাবা ডেইরিতে দেশি গরুর পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নত জাতের গরু আধুনিক উপায়ে পালন করা হয়। এতে উৎপাদিত মাংস ও দুধের গুণমান ও পরিমাণ ভালো থাকে। কোরবানির ঈদের জন্য তারা শাহিওয়াল, সিন্ধি, পাবনা ব্রিড, রেড চিটাগংয়ের মতো জনপ্রিয় জাতের গরু সরবরাহ করে। সারা বছরের জন্য হলিস্টিক ফ্রিজিয়ান ক্রসসহ বিভিন্ন উচ্চফলনশীল জাতের গরু লালন–পালন করা হয়। বর্তমানে নাবা ডেইরি প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার লিটার দুধ উৎপাদন করে। এই দুধ থেকে উৎপাদিত হয় উচ্চমানের ঘি, দই, মাঠাসহ বিভিন্ন সুস্বাদু ও পুষ্টিকর দুগ্ধজাত পণ্য। এই পণ্যগুলো রাজশাহীর বিভিন্ন জেলায় সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় মাংসের বাজারেও নাবা ডেইরির একটি শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। নাবা ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটল শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না। ভবিষ্যতে তারা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দুগ্ধজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য রয়েছে খামারটির।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ক ত ক উপ গ র হক র ক রব ন র ব যবস থ র জন য উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না

চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে সামগ্রিকভাবে পণ্যমূল্য ৭ শতাংশ কমবে। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে পণ্যমূল্য আরও ৭ শতাংশ কমবে। এ দাম হবে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব নেই। দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনো ৮ শতাংশের ঘরে। যদিও একসময় তা দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে। দেশের মানুষকে এখনো বাড়তি দামেই পণ্য ও সেবা কিনতে হচ্ছে। আগামী বছর নিত্যপণ্যের দাম কমবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব কম।

বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক অক্টোবর ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। যার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে জ্বালানির দাম কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে আরও কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে তারা। সেগুলো হলো চীনে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া এবং বিশ্ববাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দামে বড় ধরনের পতন ঘটা। খাদ্যপণ্যের দাম বছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে, কিন্তু বছরের প্রথমার্ধে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পানীয় পণ্যের দাম হঠাৎ অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। মূলত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে মানুষ সোনার দিকে ছুটেছেন।

বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে জ্বালানির দাম আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ১০ শতাংশ কমবে। ২০২৭ সালে তা আবার প্রায় ৬ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ২০২৬ সালে কৃষিপণ্য, খাদ্য ও কাঁচামালের দাম কমবে। চলতি বছরেও এসব পণ্যের দাম কমেছে।

জ্বালানি তেল

বিশ্বব্যাংকের ২০২৬ সালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়লেও তেলের দাম কমে যাবে এবং সেই প্রভাবকে ছাপিয়ে যাবে। ২০২৫ সালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম হতে পারে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬৮ ডলার; ২০২৪ সালের ৮১ ডলারের তুলনায় যা বেশ কম। ২০২৬ সালে এই দাম আরও কমে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬০ ডলারে নামতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির হার আরও কমবে—মূলত চীনের চাহিদা কমে যাওয়া, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির দ্রুত প্রসার ও বৈশ্বিক তেল সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

২০২৫ সালে বৈশ্বিক তেলের বাজারে সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৬ সালে তা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের সর্বোচ্চ মাত্রার তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি হবে এ সরবরাহ।

কৃষিপণ্য

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কৃষিপণ্যের মূল্যসূচক ২০২৫ সালে স্থিতিশীল আছে। ২০২৬ সালে তা সামান্য ২ শতাংশ ও ২০২৭ সালে আরও ১ শতাংশ কমবে।

খাদ্যপণ্যের দাম, যেমন শস্য, তেল, প্রোটিনজাত খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম সাম্প্রতিক সীমার কাছাকাছি থাকবে। তবে মাঝেমধ্যে সামান্য কিছুটা ওঠানামা থাকবে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির হার আবার দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতায় ফিরে আসছে।

২০২৫ সালের বাকি সময়ে সয়াবিনের দাম কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে সয়াবিন সাধারণত চীনে রপ্তানি হয়, তা এবার কম দামে অন্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্রে হচ্ছে এই সয়াবিন। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কিনছে না। ফলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে এই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিন চাষের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে ব্রাজিল তার সয়াবিন আবাদ আরও বাড়ানোর পথে রয়েছে। পানীয় পণ্যের দাম ২০২৬ সালে ৭ শতাংশ ও ২০২৭ সালে প্রায় ৫ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চলতি বছর সারের দাম সামগ্রিকভাবে ২১ শতাংশ বাড়তি। চাহিদা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা ও কিছু অঞ্চলে সরবরাহ–ঘাটতির কারণে এ দাম বেড়ে যাওয়া। ২০২৬ ও ২০২৭ সালে দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমতে পারে। তবু ২০১৫-১৯ সালের গড় দামের তুলনায় তা অনেক বেশি থাকবে। এর কারণ হলো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও চলমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা।

চীন ইতিমধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট সার রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। অন্যদিকে পটাশ সরবরাহকারী বড় দেশ বেলারুশ এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। রাশিয়া ও বেলারুশ—উভয় দেশই সারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরোপিত নতুন শুল্কের সম্মুখীন।

দেশে কেন দাম বেশি

বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজার দাম না কমার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের দামের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। গত তিন বছরে ডলার দাম অনেকটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অনেক আমদানি পণ্যে শুল্ক বেশি বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে দাম কমছে না। বাজারে চাহিদা কত বা কখন কোন পণ্য আমদানি করতে হবে, সে বিষয়ে যথাযথ তথ্যের ঘাটতি আছে। ফলে সময়মতো পণ্য আমদানি হয় না।

আরেকটি বিষয় হলো দেশে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, তার অনেক কিছু উৎপাদিতও হয়। কিন্তু বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এসব পণ্যের সরবরাহে টান পড়েছে। বাজারের পণ্যমূল্যে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

তিন বছর আগে দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা বেড়ে ১২২ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক মাস ধরে আমদানির ঋণপত্র খোলাও কমেছে। এতে আমসদানিতে চাপ পড়ছে।

দেশের বাজার উচ্চ মূল্যের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয়, শুল্ক ও করের চাপ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত অতি মুনাফা ও অস্বচ্ছ বাণিজ্যিক শৃঙ্খলের কারণেও বাজারে কৃত্রিমভাবে উচ্চমূল্য বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাসের সুফল ভোক্তাপর্যায়ে পড়ছে না।

সেলিম রায়হান আরও বলেন, এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা নতুন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। পণ্য পরিবহন ও আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সরবরাহ শৃঙ্খল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

দেশে তিন বছর ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। সম্প্রতি তা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত আগস্ট মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
  • জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
  • সবজির দাম কমতির দিকে, আটার দাম কেজিতে বাড়ল ৫ টাকা