পোলিং এজেন্টকে মারধরের অভিযোগে ৬ বছর পর মামলা, আসামি জি এম কাদের ও তাঁর স্ত্রী
Published: 2nd, June 2025 GMT
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির এক পোলিং এজেন্টকে মারধর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর মামলা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর থানায় এ মামলা করেন খলিলুর রহমান নামের ওই পোলিং এজেন্ট।
মামলায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সাবেক প্রার্থী জি এম কাদের, তাঁর স্ত্রী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরিফা কাদের, দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জাহিদ হাসানসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী খলিলুর রহমান লালমনিরহাট পৌরসভার সাধুটারী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের বিএনপির পোলিং এজেন্ট ছিলেন তিনি।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, খলিলুর রহমানকে পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিযুক্ত করা হয় শুনে ভোটের আগের দিন, ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কয়েকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে যান। তাঁরা বলেন, ভোটকেন্দ্রে গেলে ‘লাশ হয়ে ফিরতে হবে’। এরপরও খলিলুর রহমান দায়িত্ব পালনের জন্য ভোটকেন্দ্রে যান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জি এম কাদের ও শেরিফা কাদেরের নির্দেশে কয়েকজন তাঁকে কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধর ও গালিগালাজ করেন। উপস্থিত লোকজন পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
এজাহারে বলা হয়, ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। স্বৈরশাসকদের ভয়ে কোথাও মামলা করার সাহস হয়নি। এ কারণে মামলা করতে এত বিলম্ব হয়েছে।
খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আওয়ামী লীগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের আসনে বসিয়ে জি এম কাদের ফ্যাসিস্ট সরকারের বৈধতা দিয়েছে। তাঁর আমলে নির্বাচন কীভাবে হয়েছে, তার একটি সামান্য নমুনা হচ্ছে বিএনপির পোলিং এজেন্টকে ভোটকেন্দ্র থেকে ভয়ভীতি ও মারধর করে বের করে দেওয়া।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরনবী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে বেআইনি জনতা দলবদ্ধ হয়ে মারধর, সাধারণ জখম, হত্যাচেষ্টা, হুমকি ও হুকুমদানের অভিযোগে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চলছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ টক ন দ র এম ক দ র ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।
তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।
এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।
আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।
এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।
ঢাকা/আমিনুল