জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্য বছরের তুলনায় কম হতে পারে
Published: 2nd, June 2025 GMT
মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
আজ সোমবার বিকেল ৩টায় তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাজেট পেশ করেন। বাজেট প্রস্তাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.
তিনি বলেন, আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।
বাজারভিত্তিক মুদ্রাবিনিময় হার চালুর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি। তবে এটি নিশ্চিত করতে হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রাবিনিময় হার চালু করেছি।
এবারের বাজেট কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত আমরা বিগত বাজেটের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধি-কেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে আমরা এবারের বাজেটে প্রাধান্য দিয়েছি মানুষকে। মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, জীবিকার নিরাপত্তা এবং বৈষম্যহীন পরিবেশ—এ অত্যাবশ্যক উপাদানগুলো ছাড়া যে কোন রাষ্ট্র অকার্যকর হয়ে পড়ে, দুর্বল হয় সমাজের ভিত। এবারের বাজেটে তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমাগত যে সকল সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার সুবিধা ভোগ এবং যে সকল চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এটি দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। প্রতিবছর জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হলেও এবার সংসদ না থাকায় তা ঘোষণা করা হচ্ছে বেতার-টেলিভিশনের মাধ্যমে। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যা গত অর্থ বছরের তুলনায় সাত হাজার কোটি টাকা কম।
এর আগে আজ দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ট ২০২৫ ২৬ প রব দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদোর পাশে ফেলিক্স? ৫০ মিলিয়ন ইউরো নিয়ে দৌড়াচ্ছে আল-নাসর
সৌদি আরবের ফুটবলে যেন রূপকথার গল্প লেখা হচ্ছে নতুন করে। তারকা তারকায় ভরা দলগুলোর প্রতিযোগিতায় এবার বড় চমক নিয়ে হাজির আল-নাসর। শোনা যাচ্ছে, ৫০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের এক আলোচিত ট্রান্সফার ডিল একেবারে শেষ মুহূর্তে ছিনিয়ে নিতে চলেছে তারা। যার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগিজ জাতীয় দলের সতীর্থ, ২৪ বছর বয়সী জোয়াও ফেলিক্স।
নতুন কোচ জর্জ জেসুসের অধীনে ২০২৫-২৬ মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে আল-নাসর। আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা গড়ে তুলছে একটি দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্কোয়াড। যার অন্যতম বড় চমক হতে চলেছে জোয়াও ফেলিক্স।
ফেলিক্স মূলত ফিরতে যাচ্ছিলেন নিজের পুরনো ক্লাব বেনফিকায়। কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সৌদি ক্লাব আল নাসরের আগ্রহ এবং ফেলিক্সের আগ্রহের সাড়া মিলে ব্যাপারটা পুরো পাল্টে যায়। ট্রান্সফার গুরু ফাব্রিজিও রোমানোর মতে, এই ডিল এখন অনেকটাই চূড়ান্তের পথে।
আরো পড়ুন:
রাশফোর্ডের অভিষেক, তরুণদের ঝলকে বার্সার জয়
মেসিহীন মায়ামির হতাশা, নাটকীয় ড্রয়ে থমকে গেল স্বপ্নযাত্রা
ফেলিক্স, যিনি ২০২৫ সালের জুনে দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফা নেশনস লিগ শিরোপা জয়ের দলে ছিলেন, ইউরোপে একাধিক ক্লাব ঘুরেও নিজের জায়গা পোক্ত করতে পারেননি। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, চেলসি, বার্সেলোনা ও সর্বশেষ এসি মিলানে খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও, কোথাও স্থায়ী জায়গা করে নিতে পারেননি। ফলে এখন সৌদি আরবে রোনালদোর পাশে নতুন অধ্যায় শুরুর পথে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
২০১৯ সালে বেনফিকা থেকে রেকর্ড ১২৬ মিলিয়ন ইউরোতে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন ফেলিক্স। এরপর বেশ কিছু ধারে খেলা হলেও চেলসিই ছিল তার বর্তমান মালিকানাধীন ক্লাব। তারা এবার তাকে স্থায়ীভাবে বিক্রি করতে চায়, আর বেনফিকাও আগ্রহী ছিল তাকে ফেরাতে।
কিন্তু সমস্যার শুরু চেলসির চাহিদা নিয়ে। তারা ফেলিক্সের জন্য চাইছিল ৫৪ মিলিয়ন ইউরো, যা তারা এক বছর আগে দিয়েছিল। বেনফিকা তাদের প্রস্তাব দেয় ৫০ শতাংশ মালিকানার জন্য ২৫ মিলিয়ন ইউরো। চেলসি পাল্টা চুক্তিতে শর্ত যোগ করে—২০২৭-২৮ মৌসুমে খেলোয়াড় বিক্রি না করলে আরও ১৫ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে এবং ভবিষ্যতের বিক্রিতেও লাভের ৫০ শতাংশ ভাগ। এই শর্ত মেনে নেওয়ার মতো অবস্থা বেনফিকার ছিল না।
ফলে আলোচনার টেবিলেই থেমে যায় তাদের আশা। আর সেই ফাঁকেই এগিয়ে আসে আল-নাসর।
জানা গেছে, আল-নাসরের কোচ জর্জ জেসুস ও অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ব্যক্তিগতভাবে ফেলিক্সকে রাজি করাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিয়মিত খেলার সুযোগ চাইছেন ফেলিক্স, আর সৌদি আরবের মঞ্চে রোনালদোর পাশে সেই সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল।
সব মিলিয়ে, আল-নাসর যদি শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি সম্পন্ন করতে পারে, তবে সেটা শুধু ক্লাবের জন্য নয়; পুরো সৌদি ফুটবল লিগের জন্যই হবে এক বিশাল পাওয়া।
ঢাকা/আমিনুল