ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি’র) বাসের ঈদ স্পেশাল সার্ভিস।
মঙ্গলবার (৩ জুন) থেকে এ ঈদ স্পেশাল সার্ভিস চলবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত।
এবারের ঈদযাত্রায় ঈদ স্পেশাল সার্ভিসে নিয়মিত বাস রুটের বাইরে প্রায় ৬৫০টি বাস চলাচল করবে। গত ২৪ মে থেকে বিআরটিসির সংশ্লিষ্ট ডিপো থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রয় শুরু হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) রাজধানীর মতিঝিলের বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ে এ উপলক্ষ আয়োজিত সভায় বিআরটিসির চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোল্লা জানান, সারা দেশে ঘরমুখো মানুষের সহজ, সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিআরটিসির ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চলাচল করবে। গাড়ি নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাবে, গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না এবং বিআরটিএ’র নির্ধারিত ভাড়ার বেশি নেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ যাত্রীরা যেন নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি আসা-যাওয়া করতে পারেন সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। ঈদ সার্ভিসে যাত্রীসেবা দেওয়া কোনো গাড়ি যেন রাস্তায় বন্ধ হয়ে না যায়- সেজন্য কারিগরি বিভাগ থেকে যাত্রা শুরু আগের দিনই প্রতিটি গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করে একটা সনদ দিতে হবে।’’
বিআরটিসি কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি গাড়িতে চালকের নাম, মোবাইলফোন নম্বর, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, প্রধান কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের নম্বর সম্বলিত স্টিকার লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে করে যাত্রীরা যে কোনো সমস্যার বিষয়ে বিআরটিসিকে অবগত করতে পারে।
যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন এবং এ সমস্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে প্রধান কার্যালয়সহ সকল ডিপো ইউনিটে ২৪/৭ কন্ট্রোল রুম (টেলিফোন: ০২ ৪১০৫৩০৪২, মোবাইল: ০১৩২৪২৯৩৯৭৪) চালু করা হয়েছে।
ঢাকা/হাসান/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ স প শ ল স র ভ স ব আরট স র
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।