এক সপ্তাহ পর চক্ষু হাসপাতালে সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা চালু
Published: 4th, June 2025 GMT
এক সপ্তাহ পর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা চালু হয়েছে। বুধবার সকালে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা চালু হয়।
সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে হাসপাতালের ফটকে অপেক্ষারত রোগীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। সকাল ১০টার দিকে জরুরি বিভাগে রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা চালু হয়েছে। যাদের লম্বা সময় সেবার প্রয়োজন আছে, তাদেরও এই মুহূর্তে জরুরি সেবা নিয়ে চলে যেতে হবে।
সকালে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম বলেন, আজ জরুরি বিভাগের সেবা চালু হয়েছে। জরুরি চিকিৎসার পরে কারও বাড়তি চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেটা আপাতত দেওয়া হবে না। মাত্র হাসপাতাল খুলেছে। প্রথমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হবে। চিকিৎসকদের সংখ্যা এখনো নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না।
বুধবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে হাসপাতালে প্রায় শতাধিক রোগীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তারা সকাল থেকে হাসপাতালে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসব রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বেশির ভাগ নতুন রোগী। কেউ কেউ ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গাইবান্ধা থেকে আসা মো.
রফিকুল ইসলাম বলেন, সামনে ঈদ, তবুও আসতে বাধ্য হয়েছি। চোখের যন্ত্রণায় আর থাকতে পারছিলাম না। এই হাসপাতাল থেকে যে ওষুধ দেওয়া হয়, সেটা চোখের জন্য ভালো কাজ করে।
আরেক রোগী ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি ভোলা থেকে এসেছেন। গত শনিবার হাসপাতালে এসে দেখতে পান, সব সেবা বন্ধ। এরপর থেকে প্রতিদিন সকালে এসে চিকিৎসা চালু হয়েছে কি না দেখে যেতেন। আজ বুধবার এসে দেখতে পান, ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।
ইসমাইল হোসেন বলেন, এ কদিন ঢাকায় এক আত্মীয়ের মেসে ছিলাম। অনেক দূর থেকে এসেছি। চিকিৎসা ছাড়া চলে গেলে আবার আসতে হবে। তাই এতদিন চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করেছি।
গত বুধবার চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীদের মারামারি-সংঘর্ষের পর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফরসহ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা আহতদের সঙ্গে সভা করেন। প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনা শেষে আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জরুরি বিভাগসহ সীমিত আকারে অন্য সেবা চালু করার ব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত করবে। পরে মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, বুধবার থেকে হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু হবে। চারটি প্রতিষ্ঠানের চক্ষুবিশেষজ্ঞরা আহতদের চোখ পরীক্ষা করে দেখবেন কার সমস্যা কতটুকু, কাকে কোথায় চিকিৎসা নিতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব শ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।