গুমের ‘মেইন কালপ্রিট’ ছিল র্যাবের গোয়েন্দা সংস্থা: প্রেস সচিব
Published: 4th, June 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে হওয়া গুমের ঘটনায় র্যাবের গোয়েন্দা সংস্থা সবচেয়ে বেশি জড়িত ছিল বলে গুমসংক্রান্ত কমিশনের তথ্যে উঠেছে এসেছে। এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘গুম হয়েছে যারা, তার মেইন কালপ্রিট, মানে কিলার ফোর্স…এটা হচ্ছে র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং। তারা এ কাজটায় সবচেয়ে বেশি ইনভলবড ছিল।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শফিকুল আলম। তিনি জানান, গুমসংক্রান্ত কমিশন তাদের দ্বিতীয় প্রতিবেদন আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা গুমসংক্রান্ত বিষয়ে আশুকরণীয় সম্পর্কে কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছেন।
গুমের ঘটনার ভয়াবহতা শুনে প্রধান উপদেষ্টা ‘হরর মিউজিয়াম’ করার কথা বলেছেন বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, গণভবন জাদুঘরে এটি করা হবে। একই সঙ্গে গুমের ঘটনা দেশবাসীকে জানাতে একটি ওয়েবসাইটও করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, গুমের ঘটনায় জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সরকারি পুরস্কার, পদক, পোস্টিংয়ের জন্য এসব করতেন বলে গুমসংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে কেউ কেউ এ ধরনের কাজের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, গণভবন থেকে পাওয়া দুটি চিঠি থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টির মতো অভিযোগ গুম কমিশনে জমা পড়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্তও কমিশন নতুন অভিযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগের অভিযোগকারী ব্যক্তিরা তাঁদের পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য কমিশনের কাছে পেশ করেছেন।
আজ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুসহ চার নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল হচ্ছে, এমন সংবাদকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলেছেন উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ব্যাপারে খুবই উদার। সরকার সমালোচনাকে স্বাগত জানায়।
তবে কাউকেই ভুল সংবাদ প্রচার করার লাইসেন্স সরকার দেয়নি। তিনি বলেন, যারা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করবে, সরকার তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরে তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন থাকবেন বলে জানান শফিকুল আলম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫