নেত্রকোনা সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে পুশইন করল বিএসএফ
Published: 4th, June 2025 GMT
নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্গাপুরের বিজয়পুর সীমান্তের ১১৪৮ নম্বর ও ১১৪৯ নম্বর এর মধ্যবর্তী জঙ্গল এলাকা দিয়ে ভারতের বাগমারা ক্যাম্পের ব্যাটালিয়নের (বিএসএফ) সদস্যরা তাদের পুশইন করে। পরে সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি।
আটকৃতদের মধ্যে নয়জন পুরুষ, ২২ জন নারী ও একজন শিশু রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, তাদের বাড়ি খুলনা, যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও টাঙ্গাইল জেলায়। তারা হলেন- মো.
পুশইন হওয়া সাতক্ষিরা জেলার বাসিন্দা টুম্পা খাতুন জানান, সাত মাস আগে দালালের মাধ্যমে ভারতে গার্মেন্টসে সেলাই কাজ করার জন্য অনুপ্রবেশ করেছিলেন। সেখানে গার্মেন্টসের কাজ না পেয়ে বাসাবাড়িতে ধোঁয়া-মোছার কাজ করতেন। গত ২২ দিন আগে তাকে ওই বাসা থেকে আটক করে নেয় ভারতীয় পুলিশ। এতোদিন আটকে রেখে পরে বিমানে দেশে পাঠানোর কথা বলে আমাদের সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন, গলার চেইন, জামা-কাপড় গুলো রেখে দেয়। পরে মঙ্গলবার রাতের আঁধারে বাংলাদেশে পুশইন করে দেয়।
বিজিবির নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের (৩১ বিজিবি) সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা টাঙ্গাইল, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর নড়াইল, ঢাকা, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, শেরপুর ও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাদেরকে দুর্গাপুর থানায় হন্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে দুর্গাপুর পৌর শহরের বিরিশিরি এলাকা থেকে ৮ বাংলাদেশিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী। অনুপ্রবেশের অভিযোগে বুধবার সকালে তাদের আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৫ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ আছেন। তারা নিজেদের নড়াইল, যশোর, ঝিনাইদহ, রাজশাহী ও খুলনা জেলার বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন। তারা ভারতে অনুপ্রবেশ করে দীর্ঘদিন সেখানে অবস্থান করছিলেন। গতকাল গভীর রাতে দুর্গাপুর উপজেলার একটি সীমান্ত পার হয়ে তারা দেশে প্রবেশ করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ত রক ন ব এসএফ প শইন প রব শ প শইন
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে দুই সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ২৬ জনকে পুশইন
পঞ্চগড়ে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন উপজেলা সদরের পৃথক দুই সীমান্ত দিয়ে আবারও বাংলাদেশে নারী, শিশুসহ ২৬ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
সোমবার গভীর রাতে দুই সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ জোর করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের পাঠায়। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।
এলাকাবাসী জানায়, এদের মধ্যে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্ত দিয়ে পুশইন করা ৯ জনকে মঙ্গলবার সকালে আটক করেন ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্যরা। পরে তাদের ঘাগড়া বিওপি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে একই উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের রতনীবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পুশইন করা ১৭ জনকে আটক করে শিংরোড বিওপি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। পরে বিজিবি দুই সীমান্ত দিয়ে পুশইন করা ২৬ জনকে সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। ২৬ জনের মধ্যে ৮ পুরুষ, ৯ জন নারী ও ৯ জন শিশু রয়েছে।
পুলিশ, বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পুশইন করা বাংলাদেশি নাগরিক বলে পরিচয় দেন। তারা ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তাদের আটক করে ভারতীয় পুলিশ শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে এনে বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ সদস্যরা রাতের আঁধারে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করে। পরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে। আটকদের বাড়ি কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বলে জানা গেছে।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, বিজিবি আমাদের কাছে ২৬ জনকে হস্তান্তর করেছে। এদের মধ্যে আট জন পুরুষ, নয় জন নারী এবং নয় জন শিশু। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আপাতত তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে নাগরিক কিনা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। বাংলাদেশি নাগরিক হলে যত দ্রুত সম্ভব তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে নিরাপদে নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এদের মধ্যে যদি কেউ অন্য কোন দেশের নাগরিক বা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী থেকে থাকে, সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে তিন দফায় ১১ জন, ২১ জন এবং দুইজন করে মোট ৩৪ জনকে জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পুশইন করে বিএসএফ। সর্বশেষ ২৬ জনসহ চতুর্থ দফায় নারী, শিশুসহ মোট ৬০ জনকে জোর করে পাঠাল বিএসএফ।