ঈদের ছুটিতে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে গাজীপুর থেকে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন আমিনুল ইসলাম। গাজীপুর থেকে বাসে করে জামালপুর শহরের পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় নামেন তিনি। এরপর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ির পথে যাচ্ছিলেন। পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাস হঠাৎ অটোরিকশাটিকে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনায় অটোরিকশায় থাকা আমিনুলের বড় মেয়ে আনিসা আক্তার (১০) ছিটকে রাস্তায় পড়ে। আর অটোরিকশাটি উল্টে তার ওপর গিয়ে পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলেই আনিসার মৃত্যু হয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুর-বকশীগঞ্জ সড়কের বাঁশকান্দা বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমিনুল ইসলাম আহত হয়েছেন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আমিনুলের বাড়ি উলিপুর উপজেলার রাজার হাট গ্রামে। তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে আনিসা বড় ছিল। আমিনুল গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার কর্মী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্রুতগতির একটি বাস ওই অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা লাগার সময় অটোরিকশার ভেতরে থাকায় ওই শিশু ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায়। এ সময় অটোরিকশাটি উল্টে শিশুটির ওপর গিয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন অটোরিকশাটি উঠিয়ে দেখতে পান শিশুটি মাথায় আঘাত পেয়ে সেখানেই মারা গেছে। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ হাইওয়ে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

বকশীগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্তিয়াক আহমেদ বলেন, গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে শিশুটি পরিবারের সঙ্গে যাচ্ছিল। বাসের ধাক্কায় শিশুটি মারা গেছে। শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

৯০ বছর বয়সী এই নারীর বিধবা ভাতার টাকা খোয়া গেল কীভাবে

মুঠাফোনে বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছিলেন ৯০ বছর বয়সী আমেনা বেগম। আশা ছিল ঈদে নিজের জন্য নতুন কাপড় কিনবেন, নাতি-নাতনিদেরও কিছু দেবেন। ভালো কিছু খাবেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার দোকানে গিয়ে টাকা তুলতে গিয়ে জানলেন, যে মুঠোফোন নম্বরে টাকা এসেছে, সেখানে টাকা নেই, অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।

দোকানির কাছে এ কথা শুনে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন আমেনা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, তাঁর ঈদটাই শেষ হয়ে গেল।

আমেনা বেগম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত আবদুল জলিলের স্ত্রী।

বয়স্ক এই নারী বলেন, ছোটবেলায় তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর চার ছেলে ও চার মেয়ে। স্বামী অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করতেন। ছেলেরাও এখন অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ছেলেমেয়েরা নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তিনি ছেলেদের কাছে থাকেন। কিন্তু তাঁরাও হতদরিদ্র, নিজেরাই সংসার চালাতে হিমশিম খায়।

আমেনা বেগম বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো বিধবা ভাতার টাকা পেয়েছেন। ২৯ মে তাঁর ছেলের মুঠোফোন নম্বরে ভাতার এক বছরের ৬ হাজার ৬০০ টাকা একসঙ্গে আসে। কিন্তু দোকানে গিয়ে শোনেন টাকা অন্য নম্বরে পাঠানো হয়ে গেছে।

দোকানির ভাষ্য, ওই বৃদ্ধার মুঠোফোন থেকে একটি মুঠোফোন নম্বরে ৩৯ টাকা রিচার্জ করা হয়। পরে ওই নম্বরে ৬ হাজার ৬০০ টাকা ‘সেন্ড মানি’ করা হয়।

মুঠোফোনটি ব্যবহার করেন ওই বৃদ্ধার ছেলে আবদুস সাত্তার। তিনি বুঝতে পারছেন না কীভাবে তাঁর ফোন থেকে ‘সেন্ড মানি’ হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। মা ভাতার টাকা পেলে নিজের প্রয়োজনমতো খরচ করতেন। এবারও টাকা পেয়ে অনেক আশা করেছিলেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। কীভাবে টাকাটা খোয়া গেছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত চান তিনি।

যে নম্বরে ওই বৃদ্ধার টাকা গেছে, সেই নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহারুজ্জামান সবুজ বলেন, ওই নারীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ