ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার শান্তিনগর থেকে বেড়তলা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ অবস্থা চলছিল। এর আগে সকাল থেকেই সরাইল বিশ্বরোড মোড়কে কেন্দ্র করে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, আজ সকাল ৬টা থেকে সরাইল উপজেলার শান্তিনগর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় এবং কুট্টাপাড়া মোড় হয়ে বাড়িউরা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট তৈরি হয়, পরে তা আরও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সকাল ৮টার দিকে এই যানজট আরও বেড়ে যায়। মহাসড়কটিতে থেমে থেমে চলতে থাকে যানবাহন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় সকাল ৯টার পর যানজট কমতে থাকে।

সরেজমিন দেখা যায়, আজ সকাল ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরে অবস্থান নেন। এরপর ৯টার দিকে ধীরে ধীরে যানজট কমতে থাকে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের দুয়েকজন সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে ট্রাক-লরি চলাচল নিষিদ্ধ হলেও তা মানা হচ্ছিল না।

গাজীপুর থেকে হবিগঞ্জের মাধবপুরগামী যাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের চালক শামীম আহমেদ বলেন, আজ সকাল পৌনে ৭টার দিকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর অতিক্রম করে পৌনে দুই ঘণ্টায় শাহবাজপুর এলাকায় পৌঁছেছেন। অথচ এই পথে সময় লাগে মাত্র ২০ মিনিট। যাত্রীবাহী একটি বাসের চালক মাহবুব মিয়া বলেন, ‘যত সমস্যা বিশ্বরোড মোড়ে। এখানে আসলেই আমাদের সময় নষ্ট হয়।’

সড়ক ও জনপথ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে ২০১৭ সাল থেকে। ইতিমধ্যে নানা কারণে কাজটি বন্ধ হয়েছে একাধিকবার। মহাসড়কটির এক পাশের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এই পাশ দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করছে যানবাহন। এ কারণে অপ্রশস্ত রাস্তায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে।

এ ছাড়া বৃষ্টি হলে বিশ্বরোড মোড়ে গোলচত্বরের চারপাশে অসংখ্য ছোট–বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে সেখানে অব্যবস্থাপনা ও পূর্ব পাশের বাইপাস সড়কটি দখলের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছেন চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা।

সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান বলেন, ‘শুক্রবার ভোর থেকে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এর মধ্যে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করছে। জায়গার অভাবে এগুলো আটক করে রাখতে পারছি না। এসব কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন বিরামহীন কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তারপরও মহাসড়কে যানজটমুক্ত রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১০ ক ল ম ট র ব শ বর ড ম ড় র এল ক য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, মানুষের দুর্ভোগ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বলিরপোল-নাছিরগঞ্জ সড়কটি অতিবৃষ্টি ও মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে স্থানীয় ২০ হাজার বাসিন্দা চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে। পাশের ক্ষেতের কোমর পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। 

একই কারণে উপজেলার চরমার্টিন ও চরকালকিনিসহ বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। 

রবিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরমার্টিন গ্রামে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে তারা দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে। বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে সাইকেল কাঁধে উঠিয়ে এক শিক্ষার্থীকে সাঁকো পারাপার হতে দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশা চলকদের ধর্মঘট চলছে, ভোগান্তি 

জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে চলাচল উপযোগী হলো সখিপুর-ভালুকা সড়ক

স্থানীয়রা জানায়, নাছিরগঞ্জ-বলিরপোল সড়কের আশপাশে অন্তত ২০ হাজার মানুষ বসবাস করে। সড়ক ঘেঁষে পূর্বপাশে সরু খাল রয়েছে। প্রবল জোয়ারের সময় সড়কটি ক্ষতির সম্মুখিন হয়। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫ হাজার মানুষের যাতায়াত রয়েছে। অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানির চাপে সড়কটি ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান জানান, তীব্র জোয়ারের চাপে রবিবার (২৭ জুলাই) ভোরে সড়কটি ভেঙে যায়। পরে ১ ঘন্টার মধ্যে ভাঙনস্থল খালে পরিণত হয়েছে। 

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, ‘‘সড়কটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা চেষ্টা কররি, এখানে কালভার্ট নির্মাণের। যেন পানি যাওয়ার ব্যবস্থা হয়।’’ 

সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি। 

ঢাকা/লিটন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
  • লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, মানুষের দুর্ভোগ
  • আশকোনার অলিগলিও বেহাল