ঢাকার রাজপথ ফাঁকা, ভিড় পশুর হাট-বাস–লঞ্চ–ট্রেন স্টেশনে
Published: 6th, June 2025 GMT
রাজধানীতে ভিড় এখন পশুর হাট আর বাস, লঞ্চ ও ট্রেন স্টেশনে। টানা ১০ দিনের সরকার ছুটি পেয়ে এখন নাড়ির টানে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। রাজপথ খালি হয়ে আসছে, চির-চারিত যানজট নেই। অন্যদিকে আবাসিক এলাকার প্রায় প্রতিটি ভবনেই এখন শোভা পাচ্ছে পশু বেঁধে রাখার দৃশ্য। অলিগলিতে বিক্রি হচ্ছে খড়–কাঁঠাল পাতা আর পশু কোরবানির যন্ত্রপাতি। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের এই ব্যবসা বেশ জমে উঠেছে।
আগামীকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ইতোমধ্যে রাজধানী ছেড়েছেন বহু মানুষ। এতে ঢাকা শহর হয়ে গেছে অনেকটাই ফাঁকা।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তাঘাট তেমন যানবাহন নেই, অনেকটাই ফাঁকা। ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী বেশিরভাগ বাসে যাত্রী ছিল খুবই কম। সড়কে মানুষ ও যান চলাচল কম থাকায় কোনো যানজট চোখে পড়েনি। ফলে মানুষ খুব কম সময়ের মধ্যে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারছেন। অনেক স্থানে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিও তেমন চোখে পড়েনি। চালকরা নিজেদের মতো ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনা করে গাড়ি চালাচ্ছেন।
কয়েকজন নগরবাসী জানান, মহাখালী ও সায়েদাবাদ এলাকায় বেশ যানজট লক্ষ্য করা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি যানজটে পড়েছে গাবতলী হয়ে যারা ঢাকা ছেড়েছেন। মিরপুর বাংলা কলেজ ও টেকনিক্যাল থেকে শুরু করে গাড়িগুলো যেন এগোতেই চাইছিল না।
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের শিবপুরের বাসিন্দা বাদল সূত্রধর জানান, সকাল বেলা একটা প্রাইভেটকার ভাড়া করে শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে তিনি পরিবার নিয়ে বের হন। বাংলা কলেজে পৌঁছার পর গাড়ি আর এগোচ্ছিল না। আধা ঘণ্টা আটকে থাকার পর গাড়ি ঘুরিয়ে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর হয়ে বসিলা ব্রিজ হয়ে সাভারের হেমায়েতপুর পৌঁছান। অন্য সময় যেখানে এক ঘণ্টায় বাড়িতে পৌঁছে যান, সেখানে তার সময় লেগেছে চার ঘণ্টা।
বিপরীতে সেগুনবাগিচার বাসিন্দা সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুদিন আগেও যেসব এলাকায় যেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লাগত, আজ সেখানে যেতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।