ঈদ সামনে রেখে মিষ্টির চেয়ে দইয়ের বিক্রি বেশি
Published: 6th, June 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। তবে এবার বাজারে মৌসুমি ফল আম, জাম ও লিচুর আধিক্য থাকায় মিষ্টির বিক্রি কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, মিষ্টির চাহিদা কম থাকলেও দইয়ের বিক্রি বেড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির ঈদে মিষ্টির চেয়ে দইয়ের চাহিদা বেশি থাকে। এ বিষয়ে আমলের সহকারী এরিয়া ম্যানেজার রেজাউল হাসান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমাদের প্রতিষ্ঠানে মিষ্টির চেয়ে দই বেশি বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ সময়ে আমাদের প্রতিটি শাখায় ২০ থেকে ২৫ হাঁড়ি (১ কেজি) দই বিক্রি হয়। ঈদকে সামনে রেখে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাঁড়ি দই। তবে সব মিলিয়ে এবারের মিষ্টি বিক্রি আগের বারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।’
মিষ্টির দোকানিরা বলছেন, ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুকে ঘিরে সবার ব্যস্ততা থাকে। এ কারণে ঈদে অতিথিও কম থাকে। মিষ্টি প্রস্তুতকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারের কলাবাগান শাখার ব্যবস্থাপক অনিক ঘোষ বলেন, ‘আমরা ঈদ মৌসুমে যে রকম মিষ্টি উৎপাদন করে থাকি, এবারও সে রকম প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে সেই তুলনায় বিক্রি অনেক কম। কয়েক মাস ধরে মিষ্টির বিক্রি কমেছে। সব মিলিয়ে মিষ্টি বিক্রি অতীতের যেকোনো ঈদের সময়ের তুলনায় অর্ধেক।’
মিষ্টি তৈরি ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়াম সুইটসের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক খলীলুর রহমান ১৯ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এ বছর বিগত যেকোনো বছরের তুলনায় বিক্রি কম। আমাদের বেশির ভাগ ক্রেতা উচ্চবিত্ত শ্রেণির। সরকারি লম্বা ছুটির সুযোগে তাঁদের বেশির ভাগই দেশের বাইরে ঈদের ছুটি কাটাতে গেছেন। তাই প্রত্যাশার মাত্র ১০ শতাংশ বিক্রি হয়েছে।’
এ ছাড়া এবার বাজারে গ্রীষ্মের মৌসুমি ফলের সরবরাহও প্রচুর। বাজারে আম, জাম, লিচুসহ সব ধরনের ফলের সরবরাহ বেশি থাকায় দামও তুলনামূলক অন্যান্য বারের চেয়ে কম। এ সময়ে তাই অনেকে মিষ্টির বদলে অতিথি আপ্যায়নে মৌসুমি ফল বেছে নিয়েছেন। এটিও মিষ্টির চাহিদা কমে যাওয়ার কারণ বলে মনে করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর শ্যামলীর বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী তানিয়া রহমান। ঈদের আগের দিন বাবার বাসায় বেড়াতে যাবেন বলে মিষ্টি কিনতে যান বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারে। এক কেজি মিষ্টির পাশাপাশি কিনলেন দুই হাঁড়ি (১ কেজি) টক দই। তিনি জানান, বাসায় মা–বাবা দুজনেরই ডায়াবেটিস। তাই আগে হয়তো মিষ্টি বেশি খাওয়া হতো। তবে এখন টক–মিষ্টি দইকে বেশি প্রাধান্য দেন।
বাংলাদেশ সুইট ম্যানুফ্যাকচার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, বর্তমানে ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের অসুস্থতার কারণে মানুষ অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তাই মিষ্টি বিক্রি গত কয়েক বছর থেকেই ধীরে ধীরে কমছে। এ ছাড়া বিগত কয়েক বছরের তুলনায় মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতাও কিছুটা কমেছে। এবার মৌসুমি ফলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। এক কেজি ভালো মিষ্টি কিনতে গেলে ৬০০ টাকা খরচ হয়। সেই তুলনায় দেশীয় ফলের দাম কম। তাই মিষ্টির বদলে অনেকে ফল কিনছেন। তবে ঈদের দিনে বিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশা করছেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
পায়রা বন্দরের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ২৫৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং স্থাপন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এইচপি এবং (২) এনজে, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৮ টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর দুইয়ের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং (২) এসএস রহমান ইন্টারন্যানাল লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৮৮ কোটি ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত//