ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুর গোর-এ–শহীদ ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রখর রোদ উপেক্ষা করে দিনাজপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা–উপজেলা থেকে এখানে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি মুসল্লিরা।

আজ শনিবার সকাল থেকেই সমবেত হতে শুরু করেন মুসল্লিরা। সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হয় নামাজ। নামাজে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন দিনাজপুর আন-নুজুম ইসলামিক একাডেমির পরিচালক মাওলানা মাহফুজুর রহমান। জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইনসহ জেলার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতারা এই জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে উন্নয়ন, মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা, বিশেষ করে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

ঈদের জামাতকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিল কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। ঈদগাহ মিনারের পশ্চিম প্রান্তে ছিল মুসল্লিদের জন্য অজুর ব্যবস্থা এবং পূর্ব–দক্ষিণ কোণে স্থাপন করা হয় অস্থায়ী শৌচাগার। মুসল্লিদের জন্য ছিল চিকিৎসক দল। পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নেওয়া হয় কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা।

নামাজ আদায় শেষে মুসল্লি মাহবুবুর রহমান বলেন, বৃহৎ জামাতে নামাজ আদায়ে সওয়াব বেশি। এতগুলো মুসল্লির মধ্যে আল্লাহ একজনের দোয়া কবুল করলে জামাতে অংশ নেওয়া সবার দোয়া কবুল হয়ে যাবে। বৃহৎ জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।

ঈদের নামাজ শেষে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে এই ঈদের জামাত সম্পন্ন করার জন্য সর্বাত্মক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রত্যেকের সহযোগিতায় আয়োজনটি সুন্দর হয়েছে। এ সময় নামাজ দিনাজপুর পৌরসভা, পুলিশ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।

দিনাজপুরে গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ মাঠের আয়তন ২২ একর। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে ছোট পরিসরে এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১৫ সালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে এই ঈদগাহ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৭ সালে মিনার নির্মাণের কাজ শেষ হয়। ওই বছর প্রথম বড় পরিসরে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ত র জন য ঈদগ হ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ