ঈদভাঙা বাজারে সবজির দাম কম, তবে বেড়েছে মুরগির
Published: 8th, June 2025 GMT
কোরবানির ঈদের পরদিন আজ রোববার সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তেমন বেচাকেনা হয়নি। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকানপাটই বন্ধ রয়েছে, আবার ক্রেতার সমাগমও খুবই কম। শুধু সবজি আর মাছ-মুরগির কিছু দোকান খোলা।
এদিকে ঈদের দুই দিন আগে আগে শসা, টমেটো বো গাজর প্রভৃতি পণ্যের দাম বাড়লেও তা আবার কমে গেছে। বিপরীতে কিছুটা দাম বেড়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির এবং চিংড়ি ও ইলিশ মাছের।
আজ রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের আগের দিন রাত পর্যন্ত ভালো বেচাকেনা হয়েছে। এরপর পণ্য কেনাবেচার চাহিদা কমেছে। অনেক বিক্রেতা ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন। আগামীকাল সোমবার থেকে বাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। যদিও সরকারিভাবে ঈদের ছুটি শেষ হবে ১০ জুন মঙ্গলবার।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, ঈদের কারণে গতকাল শনিবার বাজারে সবজি ও অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ একপ্রকার বন্ধই ছিল। আজ রোববারও একই অবস্থা বিরাজ করছে। দোকানে যেসব পণ্য দুই-তিন দিন আগে থেকে ছিল, সেগুলোই এখন বিক্রি করছেন তাঁরা। তবে ঢাকার আশপাশের কিছু এলাকা থেকে অল্প কিছু সবজি এসেছে বাজারে। দাম আগের তুলনায় কম।
সরেজমিনে যা দেখা গেল
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আজ দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, বাজারটিতে মাত্র সবজির ছয়টি, মাছের তিনটি ও দুটি মুদি দোকান খোলা রয়েছে। এ ছাড়া বাকি সব দোকান বন্ধ। সেখান থেকে মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে সবজির চারটি, আলু-পেঁয়াজের দুটি ও মুরগির তিনটি দোকান খোলা রয়েছে। আজ দুপুর পর্যন্ত মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন পাড়া–মহল্লার হাতেগোনা কয়েকটি মুদিদোকান বাদে নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন অধিকাংশ দোকানপাটই খোলেনি। রাজধানীর মিরপুর, যাত্রাবাড়ী ও বনশ্রী এলাকায় খোঁজ নিয়েও একই চিত্রের কথা জানা গেছে।
দরদাম কেমন
কোরবানির ঈদের দুই দিন আগে, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে শসা, কাঁচা মরিচ, গাজর, টমেটো ও লেবুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। মূলত সালাদের জন্য এসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকাতেই মূলত এগুলোর দাম বেড়েছিল। ঈদের দিন পর্যন্ত এ বাড়তি দাম ছিল। তবে আজ দাম কমে গেছে। বলে রাখা ভালো, এসব পণ্য ও সবজির অধিকাংশই দুই-তিন দিন আগে আনা। বাজারে এখনো নতুন সরবরাহ শুরু হয়নি। পুরোনো পণ্য কম দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি হাইব্রিড জাতের শসা ৫০-৬০ টাকা ও দেশি শসা ৭০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগের দিন; অর্থাৎ গত শুক্রবারে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি হাইব্রিড শসা ১০০ টাকা ও দেশি জাতের শসা ১২০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
কাঁচা মরিচের দামও কমেছে। আজ বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়, যা দুই দিন আগেও ছিল দ্বিগুণ–আড়াই গুণ; অর্থাৎ ১২০-১৬০ টাকা। বাজারে দেশি ও হাইব্রিড (চায়না)—এই দুই জাতের গাজর পাওয়া যায়। প্রতি কেজি দেশি গাজর আজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা এক–দুই দিন আগে ছিল ১৩০-১৪০ টাকা। ঈদের আগের দিনের তুলনায় টমেটোর দাম কেজিতে ৩০-৫০ টাকা কমে ৬০-৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর দামও হালিতে ১০ টাকা কমে ২০-৩০ টাকা হয়েছে।
ঈদের সময় বাজারে গরু ও খাসির মাংসের কোনো চাহিদা থাকে না। ফলে সব বাজারেই মাংসের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে। আগামী কয়েক দিনও ঢিলেঢালাভাবে মাংস বিক্রি চলবে। তবে এ সময় ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি, ডিম এবং চিংড়ি ও ইলিশ প্রভৃতি মাছের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ডিম বাদে অন্যগুলোর দাম কিছুটা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা ও সোনালির মুরগির দাম ৪০ টাকার মতো বেড়েছে। তাতে আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০-২০০ টাকায়, আর সোনালি ৩০০-৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ডিম আগের মতোই ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছের দোকানও খুব একটা খোলা নেই। আজ দুপুরে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গিয়ে তিনটি মাছের দোকান খোলা পাওয়া গেছে। এসব দোকানে ইলিশ, চিংড়ি, পোয়া, চাষের শিং ও কাচকি মাছ নিয়ে বসেছিলেন বিক্রেতারা। এর মধ্যে প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-৯০০ টাকা, পোয়া মাছ ৫০০ টাকা এবং শিং ও কাচকি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কথা হয় আদাবর এলাকার বাসিন্দা মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি চিংড়ি এবং সালাদের জন্য শসা ও টমেটো কিনতে আসেন। মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের আগে যে চিংড়ি কিনেছিলাম, তা শেষ হয়ে গেছে। মেহমানদের সামনে তো শুধু গরুর মাংস দেওয়া যায় না। এ জন্য চিংড়ি কিনতে এসেছি। আর সালাদের জন্য যে শসা-টমেটো নিয়েছিলাম, সেগুলোও শেষ। বাজারে সতেজ শসা, টমেটো পাইনি, যা আছে তা দুই-তিন দিন আগের আনা। তবে দাম কম রয়েছে।’
গত বছর কেমন দাম ছিল
বিক্রেতারা জানান, গত দুই বছরে কোরবানির ঈদের সময় এবারের তুলনায় অনেক বেশি দাম ছিল। যেমন গত বছর কোরবানির ঈদের সময় ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল। তার আগের বছর; অর্থাৎ ২০২৩ সালে এ দাম উঠেছিল ৫০০ টাকায়। এবার মরিচের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ১৫০-১৬০ টাকা।
গত বছর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতি ডজন ডিম ১৬৫-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এবার ঈদের সময় ডিমের দাম বাড়েনি। প্রতি ডজন ডিম ১৩০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।
গত বছর ঈদের সময় সোনালি মুরগির কেজি উঠেছিল ৩৫০-৩৬০ টাকায়। এবার দাম ৩২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আর ব্রয়লার মুরগির দাম গত বছরের মতোই রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র ক ষ র ঈদ র সময় দ ই দ ন আগ ব রয়ল র গত বছর র আগ র অর থ ৎ ৬০ ট ক ম রগ র সবজ র
এছাড়াও পড়ুন:
বিমানবন্দর থেকে ফিরে গেলেন দিশা
চলচ্চিত্রে যেমন তিনি ঝলমলে, বাস্তব জীবনেও তেমনি আলোচিত বি-টাউনের গ্ল্যামার কুইন দিশা পাটানি। ফ্যাশন সেন্স আর ক্যামেরার সামনে সাবলীল উপস্থিতিতে প্রায়ই থাকেন খবরে। তবে এবার একটু অন্য কারণে শিরোনামে এলেন এই বলিউড অভিনেত্রী।
রোববার সকালে মুম্বাই বিমানবন্দরে দেখা গেল দিশাকে। ছিলেন সাদা ফুলহাতা টি-শার্ট আর নীল ব্যাগি ডেনিম জিনসে। গাড়ি থেকে নেমে হাসিমুখে পাপারাজ্জিদের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে গেলেন বিমানবন্দরের দিকে। কিন্তু সেখানেই বাধল বিপত্তি, কারণ সঙ্গে ছিল না পাসপোর্ট!
বিমানবন্দরের গেটে গিয়ে বিষয়টি বুঝতেই থমকে গেলেন দিশা। কিছুক্ষণ পরই ফেরেন। হতচকিত পাপারাজ্জিরা জানতে চান, কী হয়েছে? দিশার উত্তর ছিল হালকা হাসিতে— 'কিছু না'। এরপর আর কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে উঠে চলে যান তিনি।
এই ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই মন্তব্য করছেন—'তারকা হলেও, পাসপোর্ট নিতে ভুলে যাওয়া দোষ।'
দিশা ঠিক কোথায় যাচ্ছিলেন, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। গত মাসে মোনাকোতে অনুষ্ঠিত ‘এফ ওয়ান গ্র্যান্ড পিক্স ২০২৫’-এ যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তার ফ্যাশনেবল লুক নিয়ে ছিল তুমুল আলোচনা—ব্যাকলেস টপ, ব্যাগি জিনস, মানানসই সানগ্লাস আর হাতে স্টাইলিশ ব্যাগ, সব মিলিয়ে পারফেক্ট প্যাকেজ!
২০১৬ সালে ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় দিশার। এরপর তামিল ছবি ‘লোফার’, আর একটি আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে সোনু সুদের সঙ্গে কাজ করে নিজের অবস্থান মজবুত করেন তিনি।
বর্তমানে দিশা ব্যস্ত অ্যাকশন-কমেডি ছবি ‘ওয়েলকাম টু দ্য জঙ্গল’-এর শুটিং নিয়ে। সূত্র: মিন্ট