ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের জনপ্রিয় বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে সাধারণত দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। কোথাও থাকে হইচই, কোথাও আবার নিরিবিলি ঘোরাঘুরি। তবে এবার ঈদে নগরের অন্যতম জনপ্রিয় দুই বিনোদনকেন্দ্র ফয়’স লেক ও চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক কম। আজ রোববার বিকেলে এই চিত্র দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আশা, ছুটির পরের দিনগুলোতে কেন্দ্রগুলো জমজমাট হয়ে উঠবে।

ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক যেন সবুজ পাহাড়ের মাঝখানে একখণ্ড প্রকৃতি। কৃত্রিম হ্রদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘বেজক্যাম্প’ নামের নতুন অ্যাডভেঞ্চার জোন। এখানে রয়েছে গাছের মাথায় দড়ির পথ ধরে হাঁটা (ট্রি টপ অ্যাকটিভিটি), অন গ্রাউন্ড গেম, টিম বিল্ডিং গেম এবং হ্রদে কায়াকিং। ঈদ উপলক্ষে শিশু-কিশোর ও তরুণদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ।

ফয়’স লেক পার্কের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের ছুটিতে সাধারণত হাজারো দর্শনার্থী ফয়’স লেক ও সি ওয়ার্ল্ড ওয়াটার পার্কে সময় কাটাতে আসেন। এ বছরও নানা আয়োজন রয়েছে। তবে লম্বা ছুটির কারণে অনেকে শহরের বাইরে চলে গেছেন। তাই দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।

তিনি জানান, ওয়াটার পার্কে তুলনামূলক বেশি দর্শনার্থী এসেছেন। আজ সেখানে এক হাজারের মতো মানুষ ছিলেন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীকাল থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে।

ফয়’স লেকের পর নগরের আরেকটি জনপ্রিয় বিনোদনকেন্দ্র চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে ওপরে উঠলে দেখা যায় বাঘ, সিংহ, হরিণ, ময়ূর, কুমিরসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি। বর্তমানে এখানে ৭০ প্রজাতির প্রায় ৫২০টি প্রাণী রয়েছে।

চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রতিবছর ঈদের এই সময়ে দর্শনার্থীর ঢল নামে। কিন্তু আজ সকালে বৃষ্টির কারণে লোকসমাগম কমেছে। পাশাপাশি লম্বা ছুটির প্রভাবও পড়েছে।

আজ বেলা তিনটার দিকে আগ্রাবাদ থেকে ছেলেকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছিলেন শারমিন নাহার। তিনি বলেন, ‘ছেলে চিড়িয়াখানায় আসার জন্য বায়না ধরেছিল। তাই তাকে নিয়ে এসেছি। নিজের চোখে বাঘ-সিংহ দেখে দারুণ উচ্ছ্বসিত সে। তুলনামূলক ভিড় কম থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পেরেছি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিএলে বিদেশি দল, এনসিএলে বিদেশি ক্রিকেটার

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ যে মানের হয়, যেভাবে আয়োজন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে হরহামেশা। অতীতে সমালোচনার পর কিছুটা মান বেড়েছে। কিন্তু তারপরও ‘আপ টু মার্ক’ হয়নি।

বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিব‌্যি পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলে এসে ধুকতে থাকেন তখন তারতম‌্য প্রকটভাবে ফুটে উঠে। এজন‌্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটারকে নিয়ে আসতে চায় বিসিবি। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যুক্ত করতে চায় বিদেশি দল।

বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম‌্যান আকরাম খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

তিন সপ্তাহের জন্য আসছেন উড, মনোবিদ স্কট

সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার বেলায়েত হোসেন মারা গেছেন

বিসিএল শুরু থেকে ছিল ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন, প্রাইম ব‌্যাংক সাউথ জোন, ইসলামী ব‌্যাংক ইষ্ট জোন ও বিসিবি নর্থ জোন নামে চারটি দল শুরুর কয়েক বছর বিসিএলে অংশ নিয়েছে। পেশাদারিত্বের ঘাটতি, পরিকল্পনার অভাব এবং বাণিজ‌্যিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তিনটি ফ্রাঞ্চাইজি ধীরে ধীরে সরে যায়। পরবর্তীতে বিসিবি চারটি দলই নিজস্ব খরচে পরিচালনা করে বিসিএল চালু রাখে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতার অভাব বোঝা যায়।

এজন‌্য বিসিবি সামনের আসরে বিদেশ থেকে একটি দল নিয়ে আসতে চায়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। বিসিএল যেই সময়ে আয়োজন করতে চাচ্ছে সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে ব‌্যস্ত থাকবেন। আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। বিসিবির পুরো খরচেই অতিথি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বাকি তিনটি দল গঠন করবে বিসিবি।

আকরাম খান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো বিসিএলে একটি বিদেশি দলকে পেতে যাচ্ছি। হয়তো তারা এ দল হিসেবে আসবে। নয়তো অন‌্য কোনো নামে। এক মাস এই টুর্নামেন্ট চলবে। ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’’

এদিকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটার অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা যুক্ত হবেন, কিভাবে আসবেন, পারিশ্রমিক কত হতে পারে সেসব নিয়ে এখনও কোনো উপায় খুঁজতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ভালোমানের বিদেশি খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।

তাদের পারিশ্রমিক চূড়ান্ত করা, পুরো আসরে অ‌্যাভেইলেভেল থাকবেন কিনা সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে। এজন‌্য আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না আকরাম।

আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দুই স্তরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আট দলে একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার রাখার ইচ্ছা বিসিবির। অতীতে বিদেশি ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছে। ইমরান ফরহাদ, আমির ওয়াসিমরা খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির এই টুর্মামেন্টে।

মূলত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং মান বাড়াতে এই উদ‌্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়োজকরা। যদিও একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম প্লেয়িং কন্ডিশনে সব সময়ই ছিল, ছিল সর্বশেষ মৌসুমেও। বিভাগীয় দলগুলো আগ্রহ না থাকায় বিসিবিও জোর দেয়নি। তবে এবার বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারকে যুক্ত করবে। পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধার বিষয়টিও দেখভাল করবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ