রাজধানীর পশ্চিমাঞ্চলের চারটি থানা—আদাবর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকায় বিভিন্ন অপরাধী দল গড়ে উঠেছে। জনবহুল এই অঞ্চলে মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধে সক্রিয় অপরাধী চক্র। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে তারা নানা অপকর্মে জড়াচ্ছে। আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপরাধের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তারা খুনোখুনিতেও জড়িয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি হাজারীবাগে আলাদা দুটি খুনের ঘটনার পর এ অঞ্চলের অপরাধী দলগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সরেজমিন অনুসন্ধানে আদাবর, মোহাম্মদপুর ও হাজারীবাগে এমন অন্তত অর্ধশত অপরাধী দল সক্রিয় থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ৫ আগস্টের পর ১০ মাসে এসব অপরাধী দলের হাতে খুন হয়েছেন অন্তত ১১ জন।

পুলিশ ও র‍্যাবের দেওয়া তথ্য বলছে, ৫ আগস্টের পর এই চারটি থানা এলাকা থেকে মাদক, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও হত্যায় জড়িত অন্তত দেড় হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর মধ্যে র‍্যাবের হাতেই গ্রেপ্তার হয়েছে ১ হাজার ৫৬ জন। এদের অধিকাংশের বয়স ১৫ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।

এই অপরাধী দলগুলো ‘অদ্ভুত’ ধরনের নামে পরিচিত। যেমন ‘টিন এজ টর্নেডো’, ‘পাটালি গ্রুপ’, ‘লও ঠেলা গ্রুপ’, ‘কবজি কাটা গ্রুপ’, ‘ডার্ক স্ট্রাইকার্স’, ‘রেড ভলক্যানো’, ‘ডাইল্লা গ্রুপ’, ‘অ্যালেক্স ইমন গ্রুপ’, ‘লেভেল হাই গ্রুপ’, ‘চাঁন গ্রুপ’, ‘মাউরা গ্রুপ’, ‘ভাইবা ল’, ‘লাল গ্রুপ’, ‘ঠোঁটে ল গ্রুপ’, ‘লাড়া-দে’, ‘মেমোরি গ্রুপ’ ইত্যাদি। অপরাধী দলগুলো নিজেরাই এসব নাম ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সময় অপরাধী দলের সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হলেও দ্রুততম সময়ে জামিনে ছাড়া পেয়ে নতুন করে অপরাধে জড়াচ্ছে। এসব অপরাধী দলের কোনোটিকে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় দিচ্ছে, আবার কোনো অপরাধী দলকে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা প্রশ্রয় দিচ্ছেন। ফলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তারা খুনোখুনিতেও জড়াচ্ছে।

গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজারের সাদেক খান কাঁচাবাজার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি অপরাধী দল ‘অ্যালেক্স ইমন’ ও ‘ডাইল্লা’ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষের সময় ডাইল্লা গ্রুপের সদস্য নাছির বিশ্বাস ও মুন্না নামের দুই তরুণ নিহত হন। দুটি অপরাধী দলের সদস্যরাই চুরি-ছিনতাই, মাদক, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িত। অ্যালেক্স ইমন গ্রুপকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল প্রশ্রয় দেন। জোড়া খুনের মামলাতেও পিচ্চি হেলালকে আসামি করা হয়েছে।

যদিও নাছির বিশ্বাসের বড় ভাই সুমন বিশ্বাস প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁর ভাই নাছির পেশায় রাজমিস্ত্রি, কোনো অপরাধী দলের সদস্য ছিলেন না। দুটি অপরাধী দলের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নাছির নিহত হন। তবে স্থানীয় সূত্র এবং পুলিশ বলছে, নাছিরের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে থানায় মামলা রয়েছে।

এদিকে গত মার্চ ও এপ্রিলে এক মাসের ব্যবধানে মোহাম্মদপুরের শের শাহ সুরী সড়কে আবাসন ব্যবসায়ী মনির আহমেদের বাসায় ঢুকে গুলির ঘটনায় দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর বিরোধের তথ্য উঠে এসেছে। মনির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি চন্দ্রিমা রিয়েল এস্টেটের পরিচালক। এক সন্ত্রাসী তাঁর কাছে চাঁদা চেয়েছিল। এর জেরেই গুলির ঘটনা ঘটেছে। এখন তিনি বাসা থেকে বের হতে ভয় পান।

এ ঘটনা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা  বলেন, ঘটনাটি মূলত দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর দ্বন্দ্বের জেরে ঘটেছে। ওই ব্যবসায়ীও একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের অপরাধপ্রবণ চারটি থানার মধ্যে আদাবর ও মোহাম্মদপুর থানা দুটি ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের মধ্যে পড়েছে। এই বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশি তৎপরতায় এ অঞ্চলে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য অনেক কমে এসেছে। ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে।

তারা ভাসমান অপরাধী, স্থায়ী ঠিকানা নেই

হাজারীবাগের জাফরাবাদে গত ১৫ মে গভীর রাতে একটি পরিবারের সাতজনকে কুপিয়েছে ‘পাটালি গ্রুপ’ নামে একটি অপরাধী গ্রুপের সদস্যরা।

সম্প্রতি জাফরাবাদের ইত্যাদির মোড়ে গিয়ে কথা হয় ভুক্তভোগী পরিবারটির সঙ্গে। বাড়িতে ঢুকতেই দেখা যায়, চেয়ারে বসে আছেন গৃহকর্তা আবুল কাশেম। বাঁ হাতের পুরোটাই ব্যান্ডেজ মোড়ানো। সেদিনের ঘটনা জিজ্ঞাসা করতেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার দিন গভীর রাতে তিনজন বাসায় উঁকি দিচ্ছিলেন। কেন বাসায় উঁকি দিচ্ছিলেন, জিজ্ঞেস করতেই পরিবারের সাতজনকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় তারা।

এ ঘটনার পর পুলিশ অভিযানে নেমে ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের ২০ জনের বেশি পাটালি গ্রুপের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। অভিযানে পাটালি গ্রুপের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তি শাহিনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে পাটালি গ্রুপের প্রধান আলমগীর ওরফে ফর্মা আলমগীর এখনো পলাতক।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, পাটালি গ্রুপে কতজন সদস্য আছে, এর সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে সংখ্যাটা ৭০ জনের কম নয়। এই দলের সদস্যরা ভাসমান, স্থায়ী কোনো ঠিকানা নেই। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। তারা ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করে। এক এলাকায় অপরাধের পর অন্য এলাকায় চলে যায়।

ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের চারটি থানা এলাকার সীমান্ত ঘেঁষে গাবতলী–সদরঘাট বেড়িবাঁধ সড়ক চলে গেছে। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়িগঙ্গা নদী। এ অঞ্চলে নিম্নআয়ের অনেক মানুষ বসবাস করেন। বেড়িবাঁধ–সংলগ্ন চাঁদ উদ্যান, ঢাকা উদ্যান, চাঁন মিয়া হাউজিং, বছিলা, জাফরাবাদ, রায়েরবাজার, গণকটুলী এলাকায় অপরাধী গ্রুপগুলো বেশি সক্রিয়। এই অপরাধী দলগুলো ‘অদ্ভুত’ ধরনের নামে পরিচিত। যেমন ‘টিন এজ টর্নেডো’, ‘পাটালি গ্রুপ’, ‘লও ঠেলা গ্রুপ’, ‘কবজি কাটা গ্রুপ’, ‘ডার্ক স্ট্রাইকার্স’, ‘রেড ভলক্যানো’, ‘ডাইল্লা গ্রুপ’, ‘অ্যালেক্স ইমন গ্রুপ’, ‘লেভেল হাই গ্রুপ’, ‘চাঁন গ্রুপ’, ‘মাউরা গ্রুপ’, ‘ভাইবা ল’, ‘লাল গ্রুপ’, ‘ঠোঁটে ল গ্রুপ’, ‘লাড়া-দে’, ‘মেমোরি গ্রুপ’ ইত্যাদি। অপরাধী দলগুলো নিজেরাই এসব নাম ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়।

পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার এ কে এম মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুর অঞ্চলে অনেক ভাসমান অপরাধী বসবাস করে। বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা নানা ধরনের অপরাধে যুক্ত হয়।

খুনোখুনি থেমে নেই

হাজারীবাগের জাফরাবাদে গত ১৫ মে সন্ধ্যায় একটি কিশোর দলের হাতে খুন হন আলোকচিত্রী নুরুল ইসলাম। বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তোলার কথা বলে তাঁকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে খুন করে ১০-১২ জনের একটা কিশোর দল। তারা নুরুল ইসলামের কাছ থেকে উন্নত মানের দুটি ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেয়।

নুরুল ইসলামের বড় ভাই ওসমান গনি বলেন, নুরুল ইসলামের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা ছিল না। শুধু ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতেই ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়।

নুরুল খুনের আধা ঘণ্টা আগে হাজারীবাগের জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে একটি অপরাধী দলের হাতে খুন হন স্নাতকপড়ুয়া সামিউর রহমান।

পুলিশের ধানমন্ডি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অপরাধী দল এ অঞ্চলে সক্রিয় ছিল। পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে। এখন ভাসমান কিছু অপরাধী হাজারীবাগ ও ধানমন্ডির ‘বর্ডার’ এলাকায় কখনো কখনো সক্রিয় হয়।

আদাবর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকায় সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা কমে যাওয়ার সুযোগে অপরাধী দলগুলো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। গত ১০ মাসে এ অঞ্চলে বিভিন্ন অপরাধী দলের হাতে ১১ জন খুন হয়েছেন। শুধু মোহাম্মদপুরেই খুন হয়েছেন সাতজন।

মোহাম্মদপুর অঞ্চলে ‘ভয়ংকর’ অপরাধী দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক আলোচনায় আসে ‘কবজি কাটা’ গ্রুপ। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এই দলের সদস্যরা কবজি কেটে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিত। এই দলের ভাড়াটে খুনিও রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রাতে একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী বিল্লাল গাজীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে তারা এই খুন করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার হোসেন র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।

গত ২৭ মে মোহাম্মদপুরে সেনাবাহিনীর অভিযানে ফরিদ আহমেদ বাবু ওরফে এক্সেল বাবু নামে এক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জানিয়েছে, এক্সেল বাবুর বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্র, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং ভূমি দখলের অভিযোগে ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে। ‘টিন এজ টর্নেডো, ‘কবজি কাটা গ্রুপ’সহ অন্তত চারটি অপরাধী দলের নেতৃত্ব দেন এক্সেল বাবু। কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার হোসেন ওরফে কবজি কাটা আনোয়ারের গডফাদার হিসেবেও পরিচিত তিনি।

এদিকে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপরাধী দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে চারজন খুন হয়েছেন। মুজাহির ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অসি আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, জেনেভা ক্যাম্পে অবাধে মাদক ব্যবসা চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করেন ব্যাংকার এ এস এম নিয়াজ মোর্শেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকা অনেক দিন ধরেই অপরাধপ্রবণ এলাকা। তবে ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়। এ অঞ্চলের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে হবে। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ভ ন ন অপর ধ অ য ল ক স ইমন ৫ আগস ট র পর গ র প ত র কর ন র ল ইসল ম ম হ ম মদপ র দল র সদস য প রথম আল ক খ ন হয় ছ ন ক ন দ র কর দল র হ ত জ ফর ব দ য় অপর ধ র অপর ধ ধ নমন ড ছ নত ই দল র স এল ক য় পর চ ত আহম দ ব যবস ধরন র র ঘটন ঘটন র দলগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের আনন্দ শেষে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ।

সোমবার (৯ জুন) সকাল থেকেই ঢাকার রায়েরবাগ, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধোলাইপাড়, গুলিস্তান বাস টার্মিনালে দেখা গেছে রাজধানীবাসীর ফেরার দৃশ্য। তবে একইসঙ্গে এখনো অনেকেই ঢাকা ছাড়ছেন কেউ ছুটি কাটাতে, কেউবা পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে।

গত শনিবার (৭ জুন) উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা।ঈদের তৃতীয় দিনেও রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, ভ্রমণের উভয়মুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

আরো পড়ুন:

ঈদের তৃতীয় দিনেও ফাঁকা রাজধানীর সড়ক

হিলিতে সক্রিয় সিন্ডিকেট, চামড়া ভারতে পাচারের আশঙ্কা

যাত্রাবাড়ী বাস কাউন্টারের নাজমুল হোসেন বলেন, “ঈদের ছুটিতে আমি ঢাকাতেই ছিলাম। আজ একটু ফাঁকা স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যাচ্ছি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। ঈদের পর রাস্তাঘাটও অনেকটাই ফাঁকা।”

ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী বিউটি আক্তার বলেন, “ঢাকায় বাসায় বাসায় কাজ করি। ঈদের দিনেও ডিউটি ছিল। আজ ছুটি পেয়ে বাড়ি যাচ্ছি। পরিবারে ঈদের আনন্দ শেষ হলেও অন্তত প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারব।”

অন্যদিকে, ঢাকা ফিরছেন এমন অনেক যাত্রী জানিয়েছেন, ট্রেনে ও বাসে এখনো যাত্রীর চাপ কিছুটা কম থাকায় অপেক্ষাকৃত স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ সম্ভব হচ্ছে।

নরসিংদী থেকে ঢাকা ফিরেছেন পোশাক শ্রমিক মনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, “শনিবার ঈদ করেছি গ্রামের বাড়িতে। এখন কাজে ফিরছি। সকালে খুব একটা ভিড় ছিল না, ভালোই এসেছি।”

যাত্রাবাড়ীতে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী সামিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমার অফিস আগামীকাল খুলবে। তাই আজ ফিরছি।”

যাত্রাবাড়ী সাকুরা পরিবহনের সহকারী ম্যানেজার সাব্বির মাহমুদ হোসেন বলেন, “ঈদের আগে প্রচুর যাত্রী বাড়ি ফিরেছেন।এখনো অনেকে ঢাকায় ফিরছেন। তবে ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় এবার যাত্রীর চাপ কিছুটা ধীরে ধীরে দেখা যাচ্ছে, তা একসাথে নয়।”

ঢাকা/এএএম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ