যশোরের রাজারহাটে ঈদ-পরবর্তী প্রথম হাটে চামড়ার বেচাকেনা জমেনি
Published: 10th, June 2025 GMT
যশোরের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম রাজারহাটে পবিত্র ঈদুল আজহার পর প্রথম হাটে চামড়া বেচাকেনা জমেনি। ঈদের পর আজ মঙ্গলবার হাটে তেমন চামড়ার সরবরাহ আসেনি। সরকার নির্ধারিত দামেও চামড়ার বেচাবিক্রি হয়নি। এতে লোকসানে পড়েছেন প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা। তবে আগামী শনিবারের হাটে কেনাবেচা জমজমাট হবে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।
আজ সকাল ছয়টা থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ও ছাগলের চামড়া নিয়ে রাজারহাট মোকামে আসেন প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার প্রথম হাটে চামড়ার সরবরাহ ছিল কম। সকাল ১০টার মধ্যে বেচাকেনা শেষ হয়ে যায়। সাধারণত কোরবানির ঈদের পর প্রথম হাটে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমজমাট বেচাকেনা চলে।
বৃহত্তর যশোর জেলা রাজারহাট চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আকিল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কোরবানি ঈদের পর আজ প্রথম দিনে চামড়ার হাট জমেনি। এদিন বেশির ভাগ ব্যবসায়ী বাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। আজ মূলত নিম্নমানের চামড়া হাটে তোলা হয়েছে। আগামী শনিবার জমজমাট কেনাবেচা হবে বলে তাঁরা আশাবাদী। তিনি বলেন, প্রথম দিন হাটে বেশি চামড়া ওঠেনি। গরুর চামড়া উঠেছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার এবং ছাগলের চামড়া উঠেছিল ৩০ হাজারের মতো। মাত্র ৩৫ লাখ টাকার মতো বেচাকেনা হয়েছে। অথচ অন্যবার কয়েক কোটি টাকার কেনাবেচা হয়।
চলতি বছর ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, খাসি ও বকরির চামড়া ২২ থেকে ২৭ ও ২০ থেকে ২২ টাকা দর নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু রাজারহাট বাজারে বাস্তবতা ভিন্ন। কোনো চামড়া ফুট হিসেবে বেচাকেনা হয়নি। গরুর চামড়া মানভেদে প্রতিটি ২০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় কম।
কেশবপুর থেকে চামড়া বিক্রি করতে আসা মহাদেব দাস প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে অনেক কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। অথচ কেনার সময় বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ছাগলের চামড়া প্রতিটি ১০ থেকে ২০ টাকা দরে মাঠ থেকে কিনতে হয়েছে। ওই চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে প্রতিটিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা খরচ হয়েছে। অথচ হাটে ১০ থেকে ২০ টাকার বেশি কেউ দাম বলছে না। গরুর চামড়ার ক্ষেত্রেও লোকসান হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে প্রতিটি গরুর চামড়া কিনতে হয়েছে। লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে প্রতিটি চামড়ায় ৭০ টাকার মতো খরচ হয়েছে। অথচ ৫০০ টাকার বেশি গরুর চামড়া বিক্রি করতে পারেননি তিনি।
তবে পাইকারি ব্যবসায়ী যশোর রাজারহাট এলাকার মাজেদ শেখ বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আজকের হাটে ১১০টি গরুর চামড়া কিনেছি। ৫০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে এই চামড়া কিনেছি। গত বছরের তুলনায় এবার চামড়ার দাম একটু বেশি। এবার ভালো মানের বড় গরুর চামড়া ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত দামে কিনতে হয়েছে। অথচ গত বছর ৫০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে চামড়া বেচাকেনা হয়েছিল।’
চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, প্রথম দিনের হাটে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম থেকে ব্যাপারীরা আসেননি। এ জন্য চামড়ার সরবরাহ কম। দরও ওঠেনি। পরবর্তী হাট শনিবারের দিকে তাকিয়ে আছেন ব্যবসায়ীরা। বাইরে থেকে ব্যাপারীরা এলে চামড়ার দর উঠবে বলে তাঁরা আশায় আছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস য় র প রথম হ ট র জ রহ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য ভোটের সরঞ্জাম সরবরাহ শুরু হয়েছে। কয়েক মাস আগে দেওয়া কার্যাদেশের ভিত্তিতে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে এসব সামগ্রী এনে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
ইসির উপ-সচিব রাশেদুল ইসলাম জানান, লালগালা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, বড় ও ছোট হেসিয়ান ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর একটি অংশ এরইমধ্যে পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে বড় ও ছোট হেসিয়ান ব্যাগের পুরো সরবরাহ শেষ হয়েছে। অন্য সামগ্রী ধাপে ধাপে সরবরাহ করা হবে।
ইসির হিসাব অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে প্রায় পৌনে ১৩ কোটি ভোটার থাকবেন। সে অনুযায়ী প্রায় ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্র ও দুই লাখের বেশি ভোটকক্ষের জন্য বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম প্রয়োজন হবে।
সরবরাহ হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে—লালগালা: ২৩ হাজার কেজির মধ্যে এক চতুর্থাংশ সরবরাহ। ব্যালট বাক্সের লক: ৫০ লাখের বিপরীতে সরবরাহ হয়েছে ৫ লাখ।
আগস্টের শুরুতে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ হবে। আটটি আইটেমের মধ্যে একটি পুনরায় দরপত্র দিতে হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই সব সরঞ্জাম পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটের সামগ্রীর বেশির ভাগই কমিশন থেকে সরবরাহ করা হয়। তবে সুঁই-সুতা, দিয়াশলাই, আঠা, কলম, প্লাস্টিকের পাতসহ প্রতিটি কেন্দ্র ও বুথের জন্য প্রয়োজনীয় ২১ ধরনের কিছু জিনিস স্থানীয়ভাবে রিটার্নিং অফিসারদের সংগ্রহ করতে হয়।
তফসিল ঘোষণার পর আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা, ভোটকেন্দ্র ও বুথ নির্ধারণ শেষে আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা অফিসে এসব সরঞ্জাম বিতরণ করা হবে। নিরাপত্তার মধ্যে থেকে ব্যালট পেপারসহ সব সরঞ্জাম ভোটের আগেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে।
ঢাকা/এএএম/ইভা