যশোরের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম রাজারহাটে পবিত্র ঈদুল আজহার পর প্রথম হাটে চামড়া বেচাকেনা জমেনি। ঈদের পর আজ মঙ্গলবার হাটে তেমন চামড়ার সরবরাহ আসেনি। সরকার নির্ধারিত দামেও চামড়ার বেচাবিক্রি হয়নি। এতে লোকসানে পড়েছেন প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা। তবে আগামী শনিবারের হাটে কেনাবেচা জমজমাট হবে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।

আজ সকাল ছয়টা থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ও ছাগলের চামড়া নিয়ে রাজারহাট মোকামে আসেন প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার প্রথম হাটে চামড়ার সরবরাহ ছিল কম। সকাল ১০টার মধ্যে বেচাকেনা শেষ হয়ে যায়। সাধারণত কোরবানির ঈদের পর প্রথম হাটে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমজমাট বেচাকেনা চলে।

বৃহত্তর যশোর জেলা রাজারহাট চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আকিল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কোরবানি ঈদের পর আজ প্রথম দিনে চামড়ার হাট জমেনি। এদিন বেশির ভাগ ব্যবসায়ী বাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। আজ মূলত নিম্নমানের চামড়া হাটে তোলা হয়েছে। আগামী শনিবার জমজমাট কেনাবেচা হবে বলে তাঁরা আশাবাদী। তিনি বলেন, প্রথম দিন হাটে বেশি চামড়া ওঠেনি। গরুর চামড়া উঠেছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার এবং ছাগলের চামড়া উঠেছিল ৩০ হাজারের মতো। মাত্র ৩৫ লাখ টাকার মতো বেচাকেনা হয়েছে। অথচ অন্যবার কয়েক কোটি টাকার কেনাবেচা হয়।

চলতি বছর ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, খাসি ও বকরির চামড়া ২২ থেকে ২৭ ও ২০ থেকে ২২ টাকা দর নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু রাজারহাট বাজারে বাস্তবতা ভিন্ন। কোনো চামড়া ফুট হিসেবে বেচাকেনা হয়নি। গরুর চামড়া মানভেদে প্রতিটি ২০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় কম।

কেশবপুর থেকে চামড়া বিক্রি করতে আসা মহাদেব দাস প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে অনেক কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। অথচ কেনার সময় বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ছাগলের চামড়া প্রতিটি ১০ থেকে ২০ টাকা দরে মাঠ থেকে কিনতে হয়েছে। ওই চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে প্রতিটিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা খরচ হয়েছে। অথচ হাটে ১০ থেকে ২০ টাকার বেশি কেউ দাম বলছে না। গরুর চামড়ার ক্ষেত্রেও লোকসান হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে প্রতিটি গরুর চামড়া কিনতে হয়েছে। লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে প্রতিটি চামড়ায় ৭০ টাকার মতো খরচ হয়েছে। অথচ ৫০০ টাকার বেশি গরুর চামড়া বিক্রি করতে পারেননি তিনি।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ী যশোর রাজারহাট এলাকার মাজেদ শেখ বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আজকের হাটে ১১০টি গরুর চামড়া কিনেছি। ৫০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে এই চামড়া কিনেছি। গত বছরের তুলনায় এবার চামড়ার দাম একটু বেশি। এবার ভালো মানের বড় গরুর চামড়া ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত দামে কিনতে হয়েছে। অথচ গত বছর ৫০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে চামড়া বেচাকেনা হয়েছিল।’

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, প্রথম দিনের হাটে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম থেকে ব্যাপারীরা আসেননি। এ জন্য চামড়ার সরবরাহ কম। দরও ওঠেনি। পরবর্তী হাট শনিবারের দিকে তাকিয়ে আছেন ব্যবসায়ীরা। বাইরে থেকে ব্যাপারীরা এলে চামড়ার দর উঠবে বলে তাঁরা আশায় আছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় র প রথম হ ট র জ রহ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কাঁচাবাজারে ক্রেতা কম, দাম স্থিতিশীল

ঈদের পর রাজধানীর কাঁচাবাজারে এখনও জমে ওঠেনি বেচাকেনা। বাজারে যেমন ক্রেতার উপস্থিতি কম, তেমনি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পণ্য সরবরাহও। তবে সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বেশ কমতির দিকে মুরগি ও ডিমের দাম। তবে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি রয়েছে মাছের বাজারে। গতকাল বুধবার বিকেলে কারওয়ান বাজার, তেজকুনিপাড়া ও নাখালপাড়া সমিতির বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। 

কারওয়ান বাজার হলো ঢাকার অন্যতম বড় পাইকারি বাজার। গতকাল সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, সবজির আড়তগুলো বেশ ফাঁকা। খুচরা বাজারেও একই অবস্থা। সবজি বিক্রেতাদের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ। মুদি পণ্যের কিচেন মার্কেটেরও বেশির ভাগ দোকান বন্ধ।

ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের লম্বা ছুটি থাকায় ক্রেতা হাতেগোনা। ব্যবসায়ীদের অনেকেই বাড়ি থেকে ফেরেননি। ফলে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। পণ্য সরবরাহ কম। বেচাকেনা জমে ওঠেনি। এ কারণে জিনিসপত্রের দামও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ঈদের দুই দিন আগে ও পরে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সালাদ তৈরির উপকরণ শসা, কাঁচা মরিচ, গাজর, টমেটো ও লেবুর দাম বেড়েছিল। এখন ধীরে ধীরে এসব পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে।

গতকাল খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সবজির দাম ২৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে। যেমন, প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ২৫-৩০, পেঁপে ৩০-৪০, ধুন্দল ২৫-৪০, চিচিঙ্গা ৩০-৩৫, পটোল ৩৫-৪০, বেগুন ৫০-৬০, বরবটি ৪০-৫০, টমেটো ও শসা ৫০-৬০ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৭০ টাকা দরে।

একই পরিস্থিতি দেখা গেছে, মুরগি ও ডিমের বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৫৫ ও সোনালি মুরগির কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুরগির দোকানগুলোকে মোটামুটি ক্রেতার আনাগোনা ছিল। এ ছাড়া প্রতি ডজন ফার্মের ডিম কেনা যাচ্ছে ১২০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ডিমের ডজন কিনতে ক্রেতাকে কিছুটা বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। মহল্লার দোকানিরা ডিমের ডজন রাখছেন ১২৫ টাকা। কমবেশি সবার বাসায় কোরবানির মাংস থাকায় মাংসের দোকানগুলো বন্ধ দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা দুলাল হোসেন সমকালকে বলেন, ‘অনেকদিন ছুটি থাকায় মানুষ এখনও গ্রামে। বাজারে কাস্টমার কম। এ কারণে সব সবজির দাম কম।’ তবে আগামী শনি-রবিবার থেকে বেচাকেনা বাড়বে বলে মনে করেন এই ছোট ব্যবসায়ী।

তবে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী দেখা গেছে মাছের বাজার। বিশেষ করে আকারভেদে রুই-কাতলা মাছের কেজি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙ্গাসের কেজি ১৮০ থেকে ২০০, তেলাপিয়ার কেজি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। নাখালপাড়া সমিতির বাজারের মাছ বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, প্রতি বছর কোরবানি ঈদের পর মাছের দাম বেড়ে যায়। এর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, এ সময় উৎপাদন এলাকা থেকে ঢাকায় মাছ কম আসে। দ্বিতীয়ত, ঈদের পরে বেশির ভাগ বাসা-বাড়িতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। ফলে চাহিদা বেড়ে যায়। যে কারণে দাম বাড়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘টগর’ জমজমাট বাণিজ্যিক সিনেমা, কিন্তু একটা জিনিস মিসিং আছে
  • আট কোটি টাকার প্রকল্প চালুর আগেই অচল
  • কাঁচাবাজারে ক্রেতা কম, দাম স্থিতিশীল
  • গাজায় রক্তাক্ত দিনে ৫৭ ত্রাণ প্রত্যাশীসহ ১২০ জন নিহত
  • চীনের শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে হলে বিরল খনিজ দিতে হবে: ট্রাম্প
  • চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
  • হাউসবোটের ধাক্কায় লাইন বিচ্ছিন্ন, বিদ্যুৎহীন ৫ গ্রাম
  • ২৪ নং ওয়ার্ডে পানির জন্য হাহাকার
  • ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিকল্পনা চীনা ব্র্যান্ড শেইনের