সিন্ধু অববাহিকায় ভারত বড় জলাধার তৈরি করবে, জানালেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী
Published: 11th, June 2025 GMT
ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে সিন্ধু অববাহিকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জন্য বাড়তি জলাধার তৈরি করা হবে। এসব প্রকল্পের কাজ অবশ্য একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
মনোহর লাল খাট্টার অবশ্য বলেছেন, সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী যেসব প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে কোনো বদল ঘটানো হবে না। কারণ, সেসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হয়ে আছে। কিছু নতুন প্রকল্পের কাজ একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সেগুলোর জলাধারের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা ভাবা হয়েছে, যাতে আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সিন্ধু পানি চুক্তি ভারত স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছিল। সেই ঘোষণা আজও বলবৎ আছে। আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী ভারত বিদ্যমান প্রকল্পগুলোতে কোনো রকম পরিবর্তন করতে পারে না। জলাধারের ক্ষমতাও বাড়াতে পারে না। ভারতের এ ভাবনা নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে।
মনোহর লাল বলেন, সেসব নতুন প্রকল্পের জন্য জলাধারের ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা ভাবা হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরে নতুন চারটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (সিইএ)। চার প্রকল্পের কোনোটির কাজ এখনো শুরু হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, এই চার প্রকল্পেরই বহর বাড়ানোর কথা ভাবা হয়েছে। বহর বাড়ানোর অর্থ বড় জলাধার নির্মাণ, যাতে পানি ধারণের ক্ষমতা বাড়বে এবং আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিদ্যুৎ নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চায়।
মনোহর লাল দাবি করেন, অপারেশন সিঁদুরের সময় বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর ওপর পাকিস্তান সাইবার হামলার পরিকল্পনা করেছিল। সেগুলোকে টার্গেটও করা হয়েছিল। কিন্তু ভারত সফলভাবে সেসব আক্রমণ প্রতিহত করেছে।
ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে সাইবার নিরাপত্তা প্রটোকল আরও বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টন বা ট্রান্সমিশন—উভয় ক্ষেত্রেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টনে প্রয়োজনীয় যা কিছু বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে সাইবার আক্রমণের শঙ্কা কমে।
সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখার প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান। সিন্ধু অববাহিকার পশ্চিমের তিনটি নদী সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগার সিংহভাগ পানি পাকিস্তানে প্রবাহিত হয়। পেহেলগাম–কাণ্ডের পর সেই পানি প্রবাহ কমাতে ভারত তৎপর। সেই কারণেই চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা।
ভারতের নতুন প্রকল্পের জন্য বড় জলাধার তৈরির অর্থ পশ্চিমের তিন নদীর পানিপ্রবাহ কমে যাওয়া। তাতে পাকিস্তানে কম পানি যাবে। স্পষ্টতই, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ আনা ভারত পাল্টা হিসেবে সিন্ধু অববাহিকার উজানে পানিকে হাতিয়ার করতে চাইছে।
পাকিস্তান গত ১৫ মে প্রথমবার সরকারিভাবে ভারতকে চিঠি দিয়ে পানি চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল। তারপর আরও দুবার তারা সেই আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়কে। কিন্তু ভারত এখনো আগ্রহ দেখায়নি। জলশক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, পাকিস্তানের লেখা চিঠিগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ২০১৬ সাল থেকে বন্ধ। ভারত বলতে চাইছে, সন্ত্রাসবাদ ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।
পেহেলগাম–কাণ্ডের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদ ও আলোচনা যেমন একসঙ্গে চলতে পারে না, জল ও রক্তও তেমন একই সঙ্গে বইতে পারে না।’
তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে ইসলামাবাদ। বরং তারা এখন বিভিন্ন সময় বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য ভারতের উসকানি রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প র ক অবব হ ক র ক ষমত মন ত র র জন য জল ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু
৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান
ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।
শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”
এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”
তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”
ঢাকা/আবিদ/মেহেদী