এপ্রিলে নির্বাচন এক-এগারো প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র: রাশেদ খান
Published: 11th, June 2025 GMT
আগামী বছরের এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে এক-এগারো প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন ৪০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতির কথা বলেছে। যদি এই পরিমাণ ভোট না পড়ে, তাহলে ওই আসনে পুনরায় নির্বাচন হবে। যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার এপ্রিলে ভোটের কথা বলেছে আর গরমে এই পরিমাণ ভোট পড়বে না বলেই মনে হয়। সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার আবার থেকে যাবে। সুতরাং এক-এগারো বলে কয়ে করা লাগবে না, অটোমেটিকালি হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের এই রোডম্যাপে সে ধরনের ষড়যন্ত্র রয়েছে। তাই বলছি লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে সরকারের নির্বাচনের সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আসতে হবে। কয়েকজন উপদেষ্টা এ চক্রান্তের মধ্যে রয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন কমিউনিটি সেন্টারে নির্বাচনী রোডম্যাপ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। গণ অধিকার পরিষদ জেলা শাখা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে গণ অধিকার পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, ছাত্র অধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রিহান হোসেন রায়হানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রাশেদ খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেছিলেন- প্রতিমাসে সরকারের কর্মকর্তা ও উপদেষ্টারা তাদের সম্পদের হিসাব দেবেন। কিন্তু গত ১০ মাসে একটিবারের জন্যও কেউ তাদের সম্পদের হিসাব দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, কয়েকজন উপদেষ্টার এপিএসের এনআইডি লক করা হলো। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হলো। তাদের বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি হলো, সবই নাটক। সরকারের একজন নারী উপদেষ্টার বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে কিন্তু সরকার তদন্ত করছে না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণার মাঝে ১/১১ ষড়যন্ত্র থাকতে পারে: রাশেদ খান
আগামী বছরের এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণার মাঝে ১/১১ এর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
তিনি বলেন, “নির্বাচন সংস্কার কমিশনের নতুন প্রস্তাবে রয়েছে, ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে ওইসব আসন ও কেন্দ্রে পুনরায় ভোট হবে। এপ্রিল মাস গরমের মাস। ওই সময় দেশের মানুষ ফসল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এপ্রিলে নির্বাচন হলে স্বাভাবিকভাবেই ভোটার উপস্থিতি কম হবে। এভাবে ৪০ শতাংশের কম ভোট দেখাতে পারলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, দেশে ১/১১ নতুন করে অ্যাকটিভ করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশে নতুন করে ভিন্ন কৌশলে ১/১১ বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র চলছে।”
বুধবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে বলব, আপনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে নির্বাচন হতে হবে। কয়েকজন উপদেষ্টার কথামতো দেশ চালালে জনগণ মেনে নেবে না। রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই দেশ পরিচালনা করতে হবে।”
এপ্রিল মাসে নির্বাচনের সম্ভাব্যতা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তিনটি দল সংলাপে বলা হয়েছিল, তারা রমজানের আগে অথবা এপ্রিলে নির্বাচন চায়। কিন্তু বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অধিকাংশ দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধিকাংশ দলগুলোর মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে মাত্র তিনটি দলের আকাঙ্খা পূরণে এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করেছে।”
করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারা প্রসঙ্গে রাশেদ খান বলেন, “করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের কনসার্ন ম্যাটার। মানবিক করিডোরের নামে দেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন হয় এমন কিছু জনগণ মেনে নেবে না। বুকের রক্ত দিয়ে ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিদায় ঘটিয়েছে। প্রয়োজনে করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারাও জনগণ ঠেকাবে। ইজারার নামে বিদেশি কোনো এজেন্সির হাতে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর তুলে দেওয়া যাবে না। এই হটকারী সিদ্ধান্তগুলো দেশের মানুষ মানবে না।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নির্বাচন নিয়ে সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে উপদেষ্টারা আমলে না নিয়ে এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করেছে। কিন্তু এই অন্তর্বর্তী সরকারকে মনে রাখতে হবে, তারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে, জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। আমরা এই সরকারের সমালোচনা করেছি, উপদেষ্টাদের কাজের সমালোচনা করেছি। আমরা একটি বারের জন্যও প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি। কিন্তু দেশবাসী প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের নাটক দেখেছে।”
তিনি বলেন, “উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএসরা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। দুদক উপদেষ্টাদের এপিসদের নামে ফাইল খুলেছে। গণমাধ্যমে সবকিছুই এসেছে। আমরা মনেকরি, যে উপদেষ্টার পিএস, এপিএস দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে, সেই উপদেষ্টা দিয়ে দেশের কি সংস্কার হবে? তারা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা কীভাবে পূরণ করবে?”
সরকার শেখ পরিবারের কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, “আওয়ামী লীগের পলাতক সন্ত্রাসীরা প্রধান উপদেষ্টাসহ গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের নিয়ে অপপ্রচার ও হুমকি-ধামিক দিচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো- আওয়ামী লীগের এসব অপরাধী, শেখ পরিবারের সদস্য ও বিতর্কিত নির্বাচনে কথিত এমপিরা কীভাবে দেশ ছেড়ে পালালো? কারা তাদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করল? এই সরকারকে সেই হিসেব দিতেই হবে। সরকারের উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগের পলাতক এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদ পাহারা দিচ্ছে।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট নিজের আত্মীয় স্বজন সাথে নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখন দিল্লিতে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। অডিও বার্তা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের উস্কানি দিচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার উস্কানির ফাঁদে পা দিলে আওয়ামী লীগের একটা নেতাকর্মীকেও দেশের জনগণ রেহায় দেবে না। হাসিনার পলায়নের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতিও পালিয়ে গেছে। গণহত্যাকারী হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে কোনোভাবেই বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেবে না জনগণ।”
মতবিনিময় সভায় গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল রাজন, পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি রাসেল আহমেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রিহান হোসেন রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সোহাগ/এস