বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিকটকার খাবি লামে, বিশ্বজুড়ে যাঁর কোটি কোটি অনুসারী। সেই খাবি লামে লাস ভেগাসে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তাদের হাতে আটক হয়েছিলেন। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যান।

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের কারণে আইসিই কর্মকর্তারা তাঁকে আটক করেছিলেন। সেনেগাল বংশোদ্ভূত ইনফ্লুয়েন্সার খাবি লামের আসল নাম সেরিন খাবানে লামে।

গত শুক্রবার হ্যারি রিড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খাবি লামেকে আটক করা হয়। তবে পরে বিতাড়নের নির্দেশ ছাড়াই তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আইসিই মুখপাত্র বলেন, লামে গত ৩০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং নিজের ভিসার শর্ত অমান্য করে নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করেন।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) থেকে গত মঙ্গলবার লামের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া ই–মেইল ঠিকানায় মন্তব্যের জন্য বার্তা পাঠানো হয়েছিল। তিনি এখনো জনসমক্ষে তাঁর আটক হওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

সেনেগালে জন্ম নেওয়া এই ইনফ্লুয়েন্সার শিশু বয়সে শ্রমজীবী মা-বাবার হাত ধরে ইতালিতে পাড়ি জমান। পরে তিনি ইতালির নাগরিকত্ব পান।
জানুয়ারিতে লামেকে ইউনিসেফের ‘গুডউইল অ্যাম্বাসেডর’ করা হয়। বিশ্বজুড়ে নানা নামীদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি।

খাবি লামের আটক ও স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী অভিযানে আরও কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন। এর মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসে আইসিইর অভিযানও রয়েছে। অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আইসিইর অভিযানের প্রতিবাদে লস অ্যাঞ্জেলেসে কয়েক দিন ধরে টানা বিক্ষোভ চলছে।

আরও পড়ুনচাকরি হারিয়েই ১০০ কোটি টাকার মালিক২৫ জুন ২০২২

লামেকে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যাঁদের বিতাড়ন করা হয়, তাঁদের এমন একটি সুযোগ দেওয়া হয়, যেন তাঁরা স্বেচ্ছায় সে দেশ ছাড়েন এবং নিজেদের অভিবাসন রেকর্ড থেকে আনুষ্ঠানিক বিতাড়ন আদেশ এড়াতে পারে। কারণ, রেকর্ডে এমন আদেশ থাকলে অনেক সময় ১০ বছর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকতে পারে।

২৫ বছর বয়সী খাবি লামে মহামারির সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে ভিডিও পোস্ট করে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পান। সাধারণত ভিডিওগুলোয় তিনি কোনো কথাই বলেন না, সেগুলোতে তাঁকে অতিমাত্রায় জটিল করে ও অযৌক্তিক ‘লাইফ হ্যাক’ নিয়ে অঙ্গভঙ্গি করে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়। শুধু টিকটকে তাঁর ১৬ কোটি ২০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে।

আরও পড়ুনটিকটকে এখন সবচেয়ে বেশি অনুসারী সেই খাবি লামের২৪ জুন ২০২২

সেনেগালে জন্ম নেওয়া এ ইনফ্লুয়েন্সার শিশু বয়সে শ্রমজীবী মা-বাবার হাত ধরে ইতালিতে পাড়ি জমান। পরে তিনি ইতালির নাগরিকত্ব পান।

জানুয়ারিতে লামেকে ইউনিসেফের ‘গুডউইল অ্যাম্বাসেডর’ করা হয়। বিশ্বজুড়ে নানা নামীদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি।

নিউইয়র্ক সিটিতে গত মাসে মেটা গালা অনুষ্ঠিত হয়। লামে ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনটিকটকে অসম্ভবকে সম্ভব করাই খাবি লামের কাজ১৮ জুন ২০২১.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ট কটক আইস ই

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ