বর্তমান সরকারও শেখ হাসিনা স্টাইলে ‘একতরফা নির্বাচন’ করতে উঠেপড়ে লেগেছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা স্টাইলে একতরফা নির্বাচন করে এই সরকারও পার পাবে না।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে দলের মুন্সিগঞ্জ জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জি এম কাদের এ কথা বলেন।

‘একতরফা নির্বাচন’ প্রসঙ্গে জি এম কাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এবং নিজ দল জাতীয় পার্টির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, দেশের ৫০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে বাইরে রেখে কোনো নির্বাচনই দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। এমন নির্বাচন কখনই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এ ধরনের নির্বাচনে বৃহৎ জনগোষ্ঠী ভোটদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এর ফলে বাস্তবে বেশি ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হয় না।

ভোটারদের বড় একটি অংশকে নির্বাচনের বাইরে রাখার পরিণতির কথাও উল্লেখ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, অনুপস্থিত ভোটারদের ভোটগুলো একদিকে অর্থ, অন্যদিকে পেশিশক্তি ও সরকারি কর্তাদের প্রভাবে জাল ভোট হিসেবে প্রার্থীদের বিজয়ে ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের নির্বাচন করে দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যাবে না। এর ফলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাঙ্ক্ষিত বৈধ সরকার ও তার মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সম্ভব হবে না। বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট ও আইনশৃঙ্খলার ক্রমাবনতি রোধ হবে না। দেশ চরম বিপর্যয়ের দিকে চলমান থাকবে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো.

মুজিবুল হকের সভাপতিত্বে সভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি, আলমগীর শিকদার, লিয়াকত হোসেন, জহুরুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, জসীমউদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এম ক দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সব দলের সঙ্গে আলোচনা না করে নির্বাচন দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: এনসিপি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সরকারকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দিকে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করে সরকার নির্বাচনের দিকে যদি অগ্রসর হয়, সেটা যে গ্রহণযোগ্য হবে না।

রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ১৯তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির সদস্যসচিব এ কথাগুলো বলেন।

রাজনৈতিক দলগুলো যদি দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সামগ্রিক রাষ্ট্রীয় স্বার্থ এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে যায়, তাহলে জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ প্রণয়ন করা সম্ভব বলেও মনে করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এ রকম একটা টাইমলাইন অনেক আগেই বলছে। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে বিচার-সংস্কারকে দৃশ্যমান পর্যায়ে উন্নীত করা, জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা, নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং একই সঙ্গে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণার দিকে যেতে হবে। অবশ্যই জুলাই সনদ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পরে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যেতে পারে।’

আখতার হোসেন বলেন, ‘এর আগে প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে বসে যখন একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন, তখন আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। যদি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করে সরকার নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হয়, সেটা যে গ্রহণযোগ্য হবে না, তা বলার অবকাশ রাখে না।’

এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘যাঁরা বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, যাঁরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, এই ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই যদি সরকার নির্বাচনের মতো বিষয়কে খোলাসা ও সুনির্দিষ্ট করতে শুরু করে, তাহলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি আমরা পুনর্বিবেচনা করব।’

রোববারের আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।

আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া। সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামীকাল গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দেওয়া হবে: আলী রীয়াজ
  • নারীদের নিয়ে বারে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণ, আমিরাতের ক্ষোভে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত নিচ্ছে ইসরায়েল
  • ৩৫ বছর পর রাকসু তফসিল নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়
  • সরকারের ঘনিষ্ঠরাই বলছে, এই সরকারের নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই: জি এম কাদের
  • সব দলের সঙ্গে আলোচনা না করে নির্বাচন দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: এনসিপি