যমুনা সেতুর পশ্চিমেও মহাসড়কে ১০ কি.মি. যানজট
Published: 14th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। এতে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখে ফিরতি পথে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
বাস-ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের স্রোত এখন রাজধানীমুখী। এতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে স্থানে যানজট ও যানবাহনের ধীরগতি দেখা দিয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো ঢাকামুখী যাত্রী।
শনিবার (১৪ জুন) সকালে যমুনা সেতু পশ্চিম সয়দাবাদের কাঠালতলা, কড্ডার মোড় এলাকায় ঢাকাগামী লেনে যানবাহনের ধীরগতি দেখা গেছে। কামারখন্দ উপজেলার ঝাউল ওভার ব্রিজ থেকে যমুনা সেতু পশ্চিম টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার থেমে থেমে গণপরিবহন চলাচল করছে। এতে ঢাকা অভিমুখী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছে।
সয়দাবাদ ইউনিয়নের কাঠাল তলা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করা গার্মেন্সকর্মী আজিজ সরকার বলেন, ‘‘ছুটি শেষ। তাই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য পরিবার নিয়ে রওনা হয়েছি। কিন্তু সকাল থেকেই গাড়ির ব্যাপক চাপ। একারণে সেতু পার হতে পারছি না।’’
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘‘ঈদের ছুটির শেষ দিনে মহাসড়কের যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে দুপুর নাগাদ এই চাপ কমে যাবে।’’
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, ‘‘রবিবার থেকে সরকারি অফিস-আদালতসহ বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এ কারণে ঈদের ছুটি আজই শেষ। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ শেষে দলে দলে কর্মস্থলে ছুটছে মানুষ। এতে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের ধীরগতি। সড়কে গাড়ির চাপ বাড়লেও গোল-চত্বর এলাকায় কোনো সমস্যা নেই। সেতুর পশ্চিম অংশে থেমে থেমে যানবাহন চলছে।’’
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলে পৌঁছেছে ১৮ হাজার ৩৬৫টি ও ঢাকায় পৌঁছেছে ৩০ হাজার ৮১৭টি যানবাহন। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।