সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পাথর কোয়ারি চালুর দাবি
Published: 14th, June 2025 GMT
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পরিবেশ ও খনিজসম্পদবিষয়ক দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক শ শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দা। আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বল্লাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকেই গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত আছে। এ পরিস্থিতিতে আজ সকালে জাফলং ও পিয়াইন নদ এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, উপদেষ্টারা কোয়ারি এলাকা পরিদর্শনের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁরা বলেন, পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংয়ে আর কোনো পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া হবে না। এরপরই কিছু ব্যক্তি বিক্ষোভ শুরু করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর উপদেষ্টারা গাড়িতে ওঠেন। তখন বল্লাঘাট এলাকায় কয়েক শ শ্রমিক ও এলাকাবাসী কোয়ারির ইজারা দেওয়ার দাবিতে তাঁদের গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করেন এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন। প্রায় পাঁচ থেকে সাত মিনিট অবরোধ চলার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। এরপর উপদেষ্টারা সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন। বিকেলে তাঁদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি এলাকা পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মো.
জাফলং পরিদর্শন শেষে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাফলং একটি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ)। আমরা ট্যুরিজম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, কীভাবে এখানে ইকোফ্রেন্ডলি ট্যুরিজম গড়ে তোলা যায়। এতে যাঁরা পাথর উত্তোলন করতেন, তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।’ তিনি জানান, জাফলং নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এ জায়গাটিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত এখান থেকে কোনো পাথর উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। এখান থেকে ক্রাশার মেশিন সরাতে হবে, তাই এসব মেশিনে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান তাৎক্ষণিকভাবে ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি জাফলংয়ের পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র উপদ ষ ট উপদ ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন
সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।
প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট।
ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”
স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান
সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”
জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
ডা. জয়নব
তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।
ঢাকা/শান্ত