সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পরিবেশ ও খনিজসম্পদবিষয়ক দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক শ শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দা। আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বল্লাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গত বছরের ৫ আগস্ট থেকেই গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত আছে। এ পরিস্থিতিতে আজ সকালে জাফলং ও পিয়াইন নদ এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, উপদেষ্টারা কোয়ারি এলাকা পরিদর্শনের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁরা বলেন, পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংয়ে আর কোনো পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া হবে না। এরপরই কিছু ব্যক্তি বিক্ষোভ শুরু করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর উপদেষ্টারা গাড়িতে ওঠেন। তখন বল্লাঘাট এলাকায় কয়েক শ শ্রমিক ও এলাকাবাসী কোয়ারির ইজারা দেওয়ার দাবিতে তাঁদের গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করেন এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন। প্রায় পাঁচ থেকে সাত মিনিট অবরোধ চলার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। এরপর উপদেষ্টারা সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন। বিকেলে তাঁদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি এলাকা পরিদর্শনের কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মো.

তোফায়েল আহমদ বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পরপরই কিছু ব্যক্তি স্লোগান ও বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যেই তাঁরা সরে যান। এরপর উপদেষ্টারা চলে যান।

জাফলং পরিদর্শন শেষে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাফলং একটি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ)। আমরা ট্যুরিজম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, কীভাবে এখানে ইকোফ্রেন্ডলি ট্যুরিজম গড়ে তোলা যায়। এতে যাঁরা পাথর উত্তোলন করতেন, তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।’ তিনি জানান, জাফলং নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এ জায়গাটিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত এখান থেকে কোনো পাথর উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। এখান থেকে ক্রাশার মেশিন সরাতে হবে, তাই এসব মেশিনে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান তাৎক্ষণিকভাবে ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি জাফলংয়ের পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র উপদ ষ ট উপদ ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ

চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।

এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”

তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”

এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।

অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ