কুষ্টিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, ইউপি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ
Published: 16th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় ব্যবসায়ী যাহা বক্সকে (৩৮) নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১৫ জুন) দিনগত রাত ১টার দিকে উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আব্দালপুর গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
যাহা বক্স একই গ্রামের মৃত কুদ্দুস আলীর ছেলে। বাড়ির পাশে তিনি প্রান্ত স্টোর নামে মুদি দোকান চালাতেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একটি চিঠি থেকে অপহরণের বিষয়টি ধারণা করছে পুলিশ ও পরিবার। চিঠিতে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ঠিকানায় টাকা না পৌঁছালে লাশ গুম করার হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ।
যাহা বক্সের স্ত্রী সাথী খাতুন বলেন, ‘‘আমরা সবাই ঘুমাচ্ছিলাম। রাত ১টার দিকে অপরিচিত এক ব্যক্তি স্যালাইন কেনার জন্য ডাক দেয়। তিনি দোকান খুলে স্যালাইন দেয়ার জন্য বাইরে যান। বেশ কিছু সময় পার হলেও তিনি ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে ঘরের দরজা খুলতে গেলে বুঝতে পারি বাইরে থেকে ছিটকানি আটকানো। এ সময় আমার চিৎকারে শাশুড়ি এসে ছিটকানি খুলে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে দোকানে গিয়ে আমার স্বামীকে আর পাইনি। দোকানের তালা খোলা ছিল এবং ক্যাশ বাক্সও খালি ছিল।’’
আরো পড়ুন:
র্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ: সন্তানকে লুকিয়ে রেখে চাচাদের নামে মামলা
তিনি আরো বলেন, ‘‘এ সময় দোকানের বাইরে বেঞ্চের উপর আঠা দিয়ে আটকানো খামের মধ্যে একটি চিঠি পাই। চিঠিতে পাঁচদিনের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে আর পুলিশকে বললে লাশ পাব না লিখেছে।’’
ছেলে প্রান্ত বলেন, ‘‘আমার ঘরের দরজাও বাইরে থেকে আটকানো ছিল। বাইরে বেরিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাবার কল দিয়ে মোবাইল বন্ধ পাই। আজ সোমবার (১৬ জুন) দোকানে হালখাতা ছিল। অন্যান্য দোকানিরা যারা সপ্তাহে বাকি পরিশোধ করতেন, তারাও টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন। ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা ক্যাশ বাক্সের নিচে রাখা ছিল। সে টাকাও পাওয়া যায়নি।’’
এ ঘটনায় আজ সোমবার (১৬ জুন) সকালে বাড়ির সামনে থেকে আব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে থানায় নিয়েছে পুলিশ। আলী হায়দার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জাসদ গণবাহিনীর আঞ্চলিক নেতা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। উদ্ধার হওয়া চিঠি যাচাই-বাছাই করে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে অপহরণ হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে থানায় নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ ইউন য়
এছাড়াও পড়ুন:
র্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করা হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরের দিকে রঙ্গিখালীর গহীন অরণ্য থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযান চলাকালে জব্দ করা হয় দেশীয় অস্ত্র, তিন রাউন্ড গুলি, র্যাবের পোশাক এবং একটি ওয়াকিটকি। এর আগে, সকালে অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা সুমন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার সুমন মুন্সির বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার ডুমরাকান্দি গ্রামে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে।
আরো পড়ুন:
দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
উত্তরায় র্যাবের পোশাক পরে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা ছিনতাই
র্যাব-১৫-এর সহকারী পরিচালক আ.ম. ফারুক জানান, গত ১১ জুন রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে মো. রহিমুল্লাহর ছেলে হাফিজ উল্লাহকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান সুমন, রাকিব ও শিকদার। অপহরণের কাজে তাদের সহযোগিতা করেন এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেন নামে দুই ব্যক্তি।
অপহরণকারীরা অজ্ঞাত স্থান থেকে অপহৃতের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে অপহৃতকে হত্যার হুমকিও দেন তারা।
ঘটনার পরপরই র্যাব-১৫ গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চালিয়ে প্রথমে রঙ্গিখালীর ডাকাত সর্দার শাহআলমের বাড়ি থেকে অপহরণকারী সন্দেহে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুরকে গ্রেপ্তার করে। আজ রবিবার সকালের দিকে মরিচা বাজার এলাকা থেকে মূল অপহরণকারী সুমন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, পুলিশ ও বনবিভাগের সমন্বয়ে মোট ২৫৬ সদস্যের যৌথ বাহিনী রঙ্গিখালীর গহীন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। দীর্ঘ অভিযানে একপর্যায়ে আজ দুপুরের দিকে হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করা হয়। অভিযান চলাকালে উদ্ধার হয় একটি দেশীয় অস্ত্র, তিন রাউন্ড গুলি, র্যাবের পোশাক এবং একটি ওয়াকিটকি।
র্যাব জানায়, পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীদের দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ