তিন-তিনটি সুপার ওভারের এক বিরল ও শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ
Published: 17th, June 2025 GMT
ক্রিকেট যখন নাটকীয়তা ছুঁয়ে যায়, তখন রেকর্ড নিজে থেকেই গড়ে ওঠে। স্কটল্যান্ডে চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজের একটি ম্যাচ যেন তারই উজ্জ্বল প্রমাণ। গ্লাসগোতে সোমবার (১৬ জুন) অনুষ্ঠিত নেদারল্যান্ডস ও নেপাল ম্যাচে যা ঘটল, তা শুধু স্মরণীয় নয়; টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের পাতায় চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কারণ, এক ম্যাচেই দেখা মিলল তিন-তিনটি সুপার ওভারের, যা এই ফরম্যাটে এই প্রথম।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ডাচরা তোলে ১৫২ রানের লড়াকু সংগ্রহ। নেপালও হাল ছাড়ে না। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রান। যা তুলেই ম্যাচকে তারা ঠেলে দেয় প্রথম সুপার ওভারে। সেখানেও নাটক কম নয়। নেপালের কুশল ভুর্তেল মেরে বসেন দুটি ছক্কা আর এক চার। তুলে নেন ১৯ রান। নেদারল্যান্ডসও জবাবে তুলে নেয় সমান রান, মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডাউডের সাহসী ব্যাটে আবারও সমতা!
এরপর আসে দ্বিতীয় সুপার ওভার। লেভিট আবারো ছক্কা হাঁকান, ও’ডাউড শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার। তাতে দল তোলে ১৭ রান। নেপালও দমে না। রোহিত পাউডেল প্রথম বলেই ছক্কা, দীপেন্দ্র এয়ারির ব্যাটে চারের পর শেষ বলে দরকার পড়ে ৭ রান। এয়ারি ছয় মেরে আবারও সমতা ফেরান! ম্যাচ ঢুকে পড়ে তৃতীয় সুপার ওভারে, এক অবিশ্বাস্য স্ক্রিপ্টে।
আরো পড়ুন:
ছক্কার বৃষ্টিতে অ্যালেনের ইতিহাস, গড়লেন দুই অনন্য বিশ্বরেকর্ড
সেঞ্চুরি ছাড়াই চারশো! ব্যাটে-বলে এক অন্যরকম দিন ইংল্যান্ডের
তবে তৃতীয় সুপার ওভারে ভাগ্য বদলায়। নেদারল্যান্ডসের অফস্পিনার জ্যাক লায়ন-ক্যাশে ম্যাচের রূপান্তর ঘটান। মাত্র দুই বলেই দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেয়ার পর নেপাল কোনো রান সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে নেদারল্যান্ডসের সামনে মাত্র এক রান লক্ষ্য ছিল। মাইকেল লেভিট সেই রান তোলার জন্য প্রথম বলেই লং অন থেকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে অসাধারণ এক জয় উপহার দেন।
এটি কেবল একটি ক্রিকেট ম্যাচ ছিল না, বরং এটি ছিল উত্তেজনা, ধৈর্য্য এবং মনোবলের এক অসাধারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। যা বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য স্থান করে নিলো। নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের এই দুর্দান্ত লড়াই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি