ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়কপথগুলোর একটি। এই মহাসড়ক কেবল রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে যুক্ত করে না, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক গতিশীলতার সঙ্গেও এর সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অথচ এই মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে প্রায় ২০টি স্থানে গড়ে উঠেছে অঘোষিত ময়লার ভাগাড়, যা আমাদের উন্নয়নভাবনার সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে একের পর এক ভাগাড় গড়ে উঠেছে সেখানে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের হাড়াতলী, চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনা, বুড়িচং, দাউদকান্দি—প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেই চোখে পড়ে রাস্তার পাশে স্তূপীকৃত আবর্জনা, যা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ঘটছে পরিবেশদূষণ। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, বিভিন্ন পৌরসভা ও স্থানীয় প্রশাসন একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব একপ্রকার অস্বীকার করে যাচ্ছে।

সিটি করপোরেশন বলছে তারা এখন আর ময়লা ফেলে না, রাতের আঁধারে মানুষ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফেলে যাচ্ছে। অথচ স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করছেন, বছরের পর বছর ধরে এসব স্থানেই সরকারি সংস্থাগুলো নিয়মিতভাবে ময়লা ফেলেছে। আবার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সরাসরি স্বীকার করছে, তারা দুই দশকের বেশি সময় ধরে মহাসড়কের পাশেই ময়লা ফেলছে—কারণ, বিকল্প জায়গা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই বক্তব্য কি একধরনের প্রশাসনিক ব্যর্থতার স্বীকৃতি নয়?

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা। কোথাও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে গড়ে উঠেছে ময়লার ভাগাড়। এ কারণে শ্রেণিকক্ষে বসাই কঠিন হয়ে পড়েছে। দুর্গন্ধে ভোগেন যাত্রীরা, চালকেরা। কোথাও কোথাও আবার আবর্জনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যুক্ত হচ্ছে চরম বায়ুদূষণও।

পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালকের বক্তব্য, ‘এভাবে পরিবেশদূষণ বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক করছি। তবে এ বিষয়ে মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে। কারণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বটা তাদের। সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে সওজকে। কারণ, মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তাদের দায়িত্ব।’

পরিবেশ অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান—সবাইকে মিলেই সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। যত্রতত্র ময়লা ফেলার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিটি শহর ও পৌরসভায় নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন নির্ধারণ করতে হবে। শুধু চিঠি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করলে হবে না; প্রয়োজন কঠোর তদারকি ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়। সেই সঙ্গে জনসচেতনতা বাড়ানোও জরুরি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব শ প রসভ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

শেষ হলো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র যৌথ সামরিক মহড়া ‘টাইগার শার্ক’

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া ‘টাইগার শার্ক’ সফলভাবে শেষ করেছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি, পারস্পরিক সমন্বয় এবং দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই মহড়ার মাধ্যমে দুই পক্ষের প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব জোরদার হয়েছে।

শনিবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী অঙ্গীকারের প্রতিফলন টাইগার শার্ক মহড়া। এই মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ড এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা একসঙ্গে চিকিৎসা প্রশিক্ষণ, টহল, লক্ষ্যভেদ অনুশীলন, সাঁতার, ডুবসাঁতার এবং ক্লোজ কোয়ার্টারস কমব্যাটসহ বিভিন্ন সমন্বিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেন।

যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত) ট্রেসি জ্যাকবসন বলেন, ‘এই যৌথ সামরিক মহড়া নিরাপদ, শক্তিশালী ও আরও সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিকে পুনর্ব্যক্ত করে। এটি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারত্বেরও প্রতীক।’

কৌশলগত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি টাইগার শার্কে অন্তর্ভুক্ত ছিল বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের বিনিময়, যৌথ পরিকল্পনা সেশন এবং কৃত্রিম অনুশীলন পরিবেশে প্রশিক্ষণ। এসব কার্যক্রম ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত কৌশল গঠনে সহায়তা করা।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ড হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম যুদ্ধ কমান্ড, যা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম তদারকি করে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ