শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে স্ত্রীকে হত্যা করে পুকুরে ফেলার অভিযোগ, স্বামী গ্রেপ্তার
Published: 19th, June 2025 GMT
সিলেটের গোলাপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার বিকেলে গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়নের বাগলা বাজারের দক্ষিণ পাশে স্বপন মিয়ার পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূর নাম সাবিনা বেগম (৩০)। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আনু মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনু মিয়া উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে আনু মিয়া স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পথে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাগলাবাজার এলাকায় পৌঁছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নেমে যান তাঁরা। সাবিনার বাবার বাড়ি ওই স্থান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। তবে বিকেল চারটার দিকে বাগলাবাজার এলাকার দক্ষিণ পাশে স্বপন মিয়ার বাড়ির সামনের একটি পুকুরে এক নারীর মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে রাতেই নিজ এলাকা থেকে স্বামী আনু মিয়াকে আটক করা হয়।
গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্যা বলেন, নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে আনু মিয়া স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পুকুরে ফেলে পালিয়ে যান।
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্যা বলেন, আনু মিয়া ও সাবিনার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্যকলহ চলছিল বলে জানা গেছে। এর জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার রাতে থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় আনু মিয়াকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
দলের নেতৃত্ব পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে: এনসিপি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে অধিক হারে নারীদের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য পুরোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সমর্থকেরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি।
নারীদের প্রতি এই ধরনের নিপীড়ন ও যৌন হয়রানিমূলক প্রচারণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এনসিপি। দলটি বলেছে, এই ধরনের প্রচারণার অব্যাহত থাকলে তারা ভবিষ্যতে সব অনলাইন-অফলাইন নারী নির্যাতক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এনসিপির এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। দলের পক্ষ থেকে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও কল ফাঁসের ঘটনায় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীনকে জড়িয়ে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং পতিত ফ্যাসিবাদী দলের নেতা-কর্মীরা চরম কুরুচিপূর্ণ, যৌন হয়রানিমূলক ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর আগে নানা সময়ে এনসিপির নারী নেত্রীদের লক্ষ্য করে একই ধরনের অবমাননাকর প্রচারণা চালানো হয়েছে। এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ প্রচার ও প্রোপাগান্ডা কেবল নারীর প্রতি অবমাননা ও নিপীড়নের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এটি তাদের রাজনৈতিক কর্তাসত্তা ও সক্ষমতাকে অস্বীকার করা এবং রাজনৈতিক পরিসরকে সংকুচিত করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।
এনসিপি বলেছে, দীর্ঘ দেড় যুগের গুম-খুন-ধর্ষণ ও ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের পর জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে নারীরা নিজেদের কর্তাসত্তাকে পুনরুদ্ধার করেছেন। সুতরাং তাঁদের প্রতি যেকোনো ধরনের অবমাননাকর ও নিবর্তনমূলক আচরণ জুলাই অভ্যুত্থানের মৌলিক আকাঙ্ক্ষা ও আদর্শকে অস্বীকার করে। এনসিপি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, এমনকি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক পক্ষগুলোর কিছু নেতা-কর্মীও এই যৌন হয়রানিমূলক প্রচারণায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। অনেক অনলাইন মিডিয়া ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বও এ ক্ষেত্রে দায়িত্বহীনতা, অপেশাদারত্বের পরিচয় দিয়েছেন। একটি মূলধারার দৈনিক পত্রিকাও তাজনূভা জাবীনকে জড়িয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে, যা জনপরিসরে তাঁকে আরও বেশি অরক্ষিত করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নমূলক মন্তব্যকে উসকে দিয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর এনসিপি রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ফলে এনসিপির নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে অধিক হারে নারীদের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য পুরোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সমর্থকগণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এনসিপি নারীদের প্রতি এই ধরনের নিপীড়ন ও যৌন হয়রানিমূলক ক্যাম্পেইনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। এই ধরনের ক্যাম্পেইন অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে এনসিপি সব অনলাইন-অফলাইন নারী নির্যাতক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং সর্বশক্তি দিয়ে তা মোকাবিলা করবে।