শৈলকুপায় কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ১৭, হাসপাতালে নেই ভ্যাকসিন
Published: 19th, June 2025 GMT
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় একই দিনে কুকুরের কামড়ে নারী ও শিশুসহ ১৭ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পৌর এলাকার হাবিবপুর ও ঝাউদিয়া এবং পার্শ্ববর্তী উমেদপুরা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাহনেওয়াজ ইবনে কাশেম বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একের পর এক কুকুরের আক্রমণে আহত ব্যক্তি আসতে শুরু করে। এর মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।
হাবিবপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, আজ সকালে তার ছেলে বউ সুমাইয়া খাতুনকে হঠাৎ একটি কুকুর আক্রমণ করে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
একই গ্রামের সুজন হোসেন বলেন, আজ সকালে তার ৮ বছরের মেয়ে মারিয়া বাড়ির বাইরে খেলা করছিল। এ সময় একটি কুকুর তার ওপর আক্রমণ করে। কুকুরের কামড়ে সে গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গোবিন্দপুর গ্রামের মাজেদা বেগম (৪৫) জানান, তিনি ডায়াবেটিস রোগী। প্রতিদিনের মতো সকালে রাস্তায় হাঁটছিলেন। সকাল ৮টার দিকে বাড়ি ফেরার সময় একটি কুকুরটি তার ওপর আক্রমণ করে কামড়ে দেয়। তিনি শৈলকুপা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ঝাউদিয়া গ্রামের শান্তি রামের ভাষ্য (৩২), বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি রাস্তায় হাঁটছিলেন। হঠাৎ একটি কুকুর তাকে কামড়ে দিয়ে ছুটতে থাকে।
হাবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন ফকির বলেন, কুকুরের কামড়ে নারী ও শিশুসহ অনেকে চিকিৎসা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক ডোজও ভ্যাকসিন নেই। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস বলেন, র্যাবিস ভ্যাকসিন কিনতে উপজেলা পরিষদ থেকে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন পৌঁছাবে বলে তিনি আশাবাদী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ স ব স থ য কমপ ল ক স শ লক প উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’
পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।
এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।