ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, অশালীন ইঙ্গিত, বডি শেমিং ও কথা না শুনলে রেজাল্ট খারাপ করানোসহ নানা অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল ইসলামকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে প্রশাসন। তবে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই শিক্ষককে বাঁচাতে তাঁর কয়েক সহকর্মী জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া আজিজুল ইসলামের স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে গতকাল বুধবার উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। 

গতকাল বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২০ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর-সংবলিত অভিযোগ উপাচার্যের কাছে জমা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভাগের কাছে অভিযোগ দিয়ে আমরা ব্যর্থ হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। বিভাগ শিক্ষক আজিজুল ইসলামকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে। আমরা মনে করি, এর মাধ্যমে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়নি বরং বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে তাঁর কুকর্মের যেসব প্রমাণ রয়েছে, সে অনুযায়ী তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কার সম্ভব। আমরা তাঁকে শিক্ষক হিসেবে চাই না। তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক। 

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.

একেএম নাজমুল হুদা ও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল ইসলামকে বাঁচাতে ভুক্তভোগীদের চাপ দিচ্ছেন। গত মঙ্গলবার অধ্যাপক নাজমুল হুদা ভুক্তভোগী ছাত্রীদের নিয়ে আলোচনা করে বিষয়টি বিভাগের বাইরে না জানানোর অনুরোধ করেন। পরে ড. আনোয়ারুল হক আবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসেন এবং আপোসের চেষ্টা চালান। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীদের দুপুরের খাবারের জন্য ১৫ হাজার টাকা দেন। কিন্তু ছাত্রীরা তা নিতে অস্বীকৃতি জানান। 

এ বিষয়ে জানতে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদার নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে শিক্ষার্থীদের ম্যানেজের বিষয়টি অস্বীকার করে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন বলেন, বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে আমি তাদের নিয়ে বসেছিলাম। ঘটনা গোপন রাখা বা শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি পুরোপরি মিথ্যা। তবে তাদের নিয়ে আমি দুপুরের খাবার খেতে চেয়েছিলাম। আমিও ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। পদ্ধতিগতভাবে তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের নানাবিধ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক আজিজুল ইসলামকে গত ২৮ জুন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি আপাতত মানসিকভাবে বিচলিত। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আজ জ ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ