খুলনায় হোটেল থেকে নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
Published: 5th, July 2025 GMT
খুলনা নগরীর ওয়েস্টার্ন ইন হোটেল থেকে শান্তা ইসলাম (৪২) নামের এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হোটেলের তৃতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় আসমা নাম ব্যবহার করে ওই নারী কক্ষটি ভাড়া নেন।
শান্তা ইসলাম বাগেরহাট জেলার তেলীগাতি গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে। তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেছেন, বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে খুলনায় আসেন ওই নারী। তিনি হোটেলের তৃতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। শুক্রবার সকালে তিনি হোটেলে নাস্তা করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ কক্ষটি পরিষ্কার করতে গিয়ে ডাক দিলে ভেতর থেকে কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যায়নি। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পুলিশ হোটেলের ওই কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শান্তা ইসলামের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। শান্তার কাছে একটি জন্মসনদ পাওয়া গেছে। তার সনদের ওপর ঢাকার একটি গৃহপরিচারিকা সাপ্লাই কোম্পানির ঠিকানা পাওয়া গেছে। যোগাযোগ করে সেখান থেকে তার পরিচয় জানা গেছে।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির ওপর চটেছে মোদির সমর্থকরামামদানির ওপর চটেছে মোদির সমর্থকরা
আগামী নভেম্বরে হতে যাওয়া নির্বাচনে জয়ী হলে জোহরান মামদানি নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম দক্ষিণ এশীয় মেয়র এবং প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মেয়র হতে পারেন। তবে নির্বাচনের আগেই তাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে হিন্দু ডানপন্থীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমালোচকরা হচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমর্থকরা, যারা ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত।
যেসব ইস্যুতে মামদানির সমালোচনা করা হচ্ছে সেগুলো মামদানির ধর্মের উপর নির্ভরশীল। ৩৩ বছর বয়সী মামদানি মুসলিম। হিন্দুত্ববাদীরা নিউ ইয়র্কের এই মেয়র প্রার্থীকে ‘জিহাদি’ এবং ‘ইসলামপন্থী’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। অন্যরা তাকে হিন্দুবিরোধী এবং ভারতবিরোধী বলেছেন।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ অর্গানাইজড হেট এর গবেষণা পরিচালক কায়লা বাসেট জানান, মামদানির বিরুদ্ধে আক্রমণ মুসলিম সম্প্রদায়কে আরো বিস্তৃতভাবে আক্রমণ করার একটি মাধ্যম।
তিনি বলেন, “এটি কেবল একজন ব্যক্তির কথা নয়। এটি এমন একটি আখ্যান প্রচারের বিষয়ে যা মুসলিমদের সহজাতভাবে সন্দেহভাজন বা অ-আমেরিকান হিসাবে উপস্থাপন করে।”
এই আখ্যানটি সম্ভাব্যভাবে মামদানির প্রচারণার জন্য পরিণতি ডেকে আনতে পারে। কারণ তিনি নিউ ইয়র্কের ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।
নভেম্বরের ভোটে আরো প্রতিষ্ঠিত নামীদামী ব্যক্তিদের সাথে মামদানির প্রতিযোগিতা হবে। চূড়ান্ত ভোটে তিনি বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের মুখোমুখি হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এখনো স্বাধীনভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।
মেয়র পদপ্রার্থী মামদানি এর আগে গাজা এবং ভারতের মতো জায়গাগুলোসহ বিভিন্ন স্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা করেছেন। এই অবস্থান কেবল তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাছ থেকে নয়, বিদেশ থেকেও তাকে সমালোচনার মুখে ফেলেছে।
উদাহরণস্বরূপ, মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সদস্যরা মামদানির মন্তব্যের নিন্দা এবং মেয়র পদের জন্য তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বিজেপির সংসদ সদস্য কঙ্গনা রানাউত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, মামদানিকে ‘ভারতীয় এর তুলনায় চেয়ে বেশি পাকিস্তানি শোনাচ্ছে।’
মামদানির মা পরিচালক মীরা নায়ারের হিন্দু পরিচয়ের দিকে ইঙ্গিত করে কঙ্গনা আরো লিখেছেন, “তার হিন্দু পরিচয় বা রক্তের বংশের যাই হোক না কেন, এখন তিনি হিন্দুত্ববাদকে নিশ্চিহ্ন করতে প্রস্তুত।”
মামদানির প্রাথমিক জয়ের পরপরই ভারতের বিজেপিপন্থী সংবাদ চ্যানেল, আজতাক দাবি করে, মামদানি ‘ভারতবিরোধী’ এজেন্ডা প্রচারকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে অর্থ পেয়েছেন। সংবাদমাধ্যমটি নিউ ইয়র্ক সিটিতে ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনসংখ্যা সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছে।
ভারতের বাইরে নিউ জার্সিভিত্তিক ইন্ডিয়ান আমেরিকানস ফর কুওমো’ নিউ ইয়র্ক সিটির উপর দিয়ে একটি ব্যানার উড়ানোর জন্য তিন হাজার ৫৭০ ডলার খরচ করেছে যাতে লেখা ছিল-‘বিশ্বব্যাপী ইন্তিফাদা থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিকে বাঁচাও। মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করো।’
মামদানির ওপর হিন্দু জাতীয়তাবাদী এবং মোদির সমর্থকদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ হচ্ছে, নিউ ইয়র্ক সিটির এই মেয়রপ্রার্থী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কট্টর সমালোচক। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে হিন্দু মন্দির নির্মাণের প্রতিবাদে ২০২০ সালে মামদানি টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে, মামদানি মোদির নিউ ইয়র্ক সিটি সফরের আগে কারাবন্দী অধিকারকর্মী উমর খালিদের লেখা নোট উচ্চস্বরে পড়ে শুনিয়েছিলেন। মে মাসে মেয়র প্রার্থীদের একটি অনুষ্ঠানে মামদানিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছি, মোদি যদি আবার শহর পরিদর্শন করেন তবে তিনি কি তারসাথে দেখা করবেন? জবাবে মামদানি জানিয়েছিলেন, তিনি মোদির সাথে দেখা করবেন না।
(আল-জাজিরা থেকে সংক্ষেপিত)
ঢাকা/শাহেদ