মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা মেইন–বেল্ট গ্রহাণু হিসেবে ডোনাল্ডজোহানসন নামের একটি গ্রহাণুর প্রথম উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি প্রকাশ করেছেন। ছবিতে অনন্য এক চিনাবাদাম আকৃতির গ্রহাণুর খোঁজ মিলেছে। এ বছরের ২০ এপ্রিল সৌরজগতের প্রধান গ্রহাণু বেল্টে নাসার লুসি খেয়াযানের সঙ্গে গ্রহাণুর সাক্ষাৎ হয়।

মহাকাশযানটি চিনাবাদাম আকৃতির মহাকাশ শিলার সবচেয়ে কাছে পৌঁছানোর কয়েক মিনিট আগে এই ছবি তোলে। ছবি তোলার জন্য ল’লরি ইমেজার ব্যবহার করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, গ্রহাণু ডোনাল্ডজোহানসনের আকৃতি কিছুটা দীর্ঘ। ছবিতে রুক্ষ ও খাদযুক্ত পৃষ্ঠ দেখা যায়। ছবি থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রহাণুটি আগের ধারণার চেয়ে বেশ বড়। প্রায় ৮ কিলোমিটার লম্বা ও ৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার প্রশস্ত এই গ্রহাণু। গ্রহাণুটি খুব ধীরে ধীরে ঘুরছে। একটি ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে ২৫১ ঘণ্টা সময় লাগে। লুসি মিশনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির গঠন ও গড়ন আরও ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করছেন।

ছবিটি শেয়ার করে নাসা জানিয়েছে, লুসি মহাকাশযানটি ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল গ্রহাণুর নিকটতম স্থানে পৌঁছানোর প্রায় ৩ দশমিক ২ মিনিট আগে ছবি তোলে। ছবি তোলার সময় যানটির অবস্থান ছিল প্রায় ১ হাজার ৭০০ মাইল দূরে। সূর্য লুসির প্রায় পেছনে বলে কিছুটা অন্ধকার রয়েছে ছবিতে। গ্রহাণুটির নামকরণ করা হয়েছে নৃবিজ্ঞানী ডোনাল্ড জোহানসনের নামে। তিনি আদি মানব পূর্বপুরুষের জীবাশ্ম কঙ্কাল লুসি আবিষ্কার করেছিলেন।

লুসি খেয়াযানের জন্য এই ছবি তোলা একধরনের পরীক্ষা। এই মহাকাশযানের মূল লক্ষ্য জুপিটার ট্রোজান গ্রহাণু অন্বেষণ। সৌরজগতের মেইন গ্রহাণু বেল্টের মধ্য দিয়ে ৩০ হাজার মাইল প্রতি ঘণ্টার বেশি গতিতে ভ্রমণ করছে। লুসি যখন ট্রোজান গ্রহাণুতে পৌঁছাবে, তখন চারটি গ্রহাণুর মুখোমুখি হবে সে। ১৫ মাসের কম সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ছয়টি গ্রহাণু পর্যবেক্ষণ করবে লুসি। ২০২৭ সালের আগস্টে গ্রহাণু ইউরিবেটসের সঙ্গে প্রথম দেখা হবে লুসির।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহ ণ ট ন গ রহ ণ গ রহ ণ র

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি