মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যায় আরও দু’জন গ্রেপ্তার
Published: 13th, July 2025 GMT
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে লাল চাঁদ সোহাগ (৩৯) নামের ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যায় জড়িত অভিযোগে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার দু’জন হলেন রাজীব ও সজীব।
যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে হত্যায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
রোববার ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে রাজীব পাথরের টুকরো দিয়ে সোহাগকে আঘাত, লাশ টেনে রাস্তায় নেওয়া এবং লাশের ওপর লাফালাফি করেছিলেন।
আলোচিত এই হত্যা মামলায় টিটন গাজীসহ মোট পাঁচজনকে এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১), তারেক রহমান রবিন (২২), আলমগীর (২৮) ও মনির ওরফে ছোট মনির (২৫)।
বুধবার হাসপাতালের সামনে ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার আগে সোহাগকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে আঘাত করে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করা হয়। তার শরীরের ওপর উঠে লাফান কেউ কেউ।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে পুরান ঢাকার কয়েক যুবক সোহাগকে বুধবার দুপুরে ডেকে নেয়। সন্ধ্যায় তাঁকে হত্যা করা হয়। সোহাগ পুরোনো তামার তার ও অ্যালুমিনিয়াম শিটসহ ভাঙাড়ি জিনিসের ব্যবসা করতেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সোহাগ একসময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। তাঁর ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহানা ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ১১ বছর বয়সী ছেলে সোহান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার কেরানীগঞ্জ থেকে এজাহারভুক্ত আসামি মনির হোসেন ও আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। এর আগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে।
সিসিটিভির ছবি দেখে পুলিশ ও স্থানীয়রা আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তারা হলেন– মিটফোর্ড হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী মো.
লাল চাঁদ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় গত বৃহস্পতিবার একটি মামলা হয়েছে। নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম (৪২) মামলাটি করেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৫-২০ জনকে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এমপ গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
গণতন্ত্র উত্তরণের পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্র উত্তরণের যে পরীক্ষা, সেই পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে। আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে হবে। গণতন্ত্রই হচ্ছে একমাত্র ব্যবস্থা যে ব্যবস্থায় সব ধরনের মানুষের বিকাশের সুযোগ করে দেয়।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সদর উপজেলা ও রুহিয়া থানা বিএনপির এক বর্ধিত সভায় যোগদানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের ৩১ দফা দেখেছেন। সেই ৩১ দফায় বলা আছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে যে ধারাগুলো আছে, অ্যামেন্ডমেন্ট (সংশোধন) করব। সংসদ সদস্যদের সব স্বাধীনতা থাকবে। শুধু রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা—এই বিষয়গুলোয় একমত হতে না পারলেও দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব না। বাকি সব বিলেই সদস্যদের স্বাধীনতা থাকবে, তাঁরা কথা বলতে পারবেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যে গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করা, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে আগামী নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, সেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছি। আশা করছি, সবাই মিলে গণতন্ত্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এই সময়টাতে আমাদের রাজনৈতিক কোনো ভুল পদক্ষেপের কারণে আমরা যেন আবার ফ্যাসিস্টদের নির্যাতনের কবলে না পড়ি। অর্থাৎ ফ্যাসিস্টদের আমরা আর ফেরত দেখতে চাই না।’ কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে যারা আমাদের সঙ্গে থেকে সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই অমত পোষণ করেছেন, এটা হতেই পারে। তার জন্য সেটাকে লক্ষ্য করে রাস্তায় আন্দোলন, এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যে দাবিগুলো তারা তুলছেন, সেই দাবিগুলো নির্বাচনের পরে যে পার্লামেন্ট গঠিত হবে, সেই পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’
সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংবাদকর্মী ভাইদের কাছে একটাই অনুরোধ জানাব, আপনারা রাষ্ট্রের একটা অন্যতম স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটা খুঁটি হচ্ছেন আপনারা। আপনাদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এবং বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র টিকে থাকুক। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের নিয়ম, সেখানেই গণতন্ত্রের সাফল্য। আমরা প্রত্যাশা করি আমাদের সংবাদমাধ্যমের কাছে, শুধু চটকদার বা বেশি বিক্রি হবে—এ ধরনের সংবাদ ছাপিয়ে আমরা যেন মূল জায়গা থেকে সরে না যাই। আরেকটি বড় মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। এ মিডিয়াতে অনেক অপপ্রচার হয়। এখানে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেক কিছু প্রচার করা হয়, যাতে সত্য থাকে না। সেগুলোকে বাছাই করে রাজনৈতিক কর্মীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।